জীর্ণ ভবনে আতঙ্ক
ইব্রাহিম খলিল, সাতক্ষীরা
🕐 ১২:৪৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২০
ছাদ ধসে পড়ে বেরিয়ে এসেছে রড। কার্নিশে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় ফাটল। সিলিং ফ্যানের সংযোগস্থলেও একই অবস্থা। আর প্লাস্টার খসে পড়ছে সবসময়। এমনই জীর্ণ ভবনে চিকিৎসা সেবা চলছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। রীতিমত আতঙ্ক নিয়েই চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা।
ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ায় এবং সিলিং ফ্যানের সংযোগস্থলের ফাটল বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক রোগী বেড ছেড়ে ফ্লোরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। নারী ও শিশু ওয়ার্ডসহ এক্স-রে বিভাগ, স্টোর রুম এবং দোতলায় ওঠানামা স্থলের ছাদ সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া পুরুষ ওয়ার্ডসহ জরুরি বিভাগ, গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সেবা সেন্টারের অবস্থান থাকা ভবনের কার্নিশে বড় বড় ফাটল সৃষ্টির পাশাপাশি গাছ জন্মে রীতিমত জঙ্গলের রূপ ধারণ করেছে।
আয়তনে দেশের সর্ববৃহৎ এ উপজেলার প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের জন্য নির্ধারিত একমাত্র এ সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির ভবন চার দশকেরও বেশি সময় পূর্বে নির্মিত হয়। পরবর্তীতে মাঝে মধ্যে নামমাত্র সংস্কার কাজ করা হলেও কাজের গুণগত মান রক্ষা না হওয়ায় বর্তমানে তা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত আতঙ্ক ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে মোস্তফা কামাল ও আবু মুছাসহ কয়েকজন সেবাগ্রহীতা বলেন, মানুষ চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসে। কিন্তু উল্টো হাসপাতালে এসে যদি দুর্ঘটনার শিকার হতে হয় তবে সে হাসপাতালের দরকার কী?
নারী ওয়ার্ডে বোনকে ভর্তি করানো ভুরুলিয়া গ্রামের আশিকুর রহমান জানান, প্রতিপক্ষের হামলায় তার বোন আহত হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। কিন্তু তার জন্য নির্ধারিত বেডের ওপরের ছাদে ধস নামায় তারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। শিশু ওয়ার্ডে চার মাসের সন্তানকে ভর্তি করানো মরিয়ম বিবি জানান, ছাদের প্লাস্টার ধসে লোহা বের হয়ে থাকার কারণে তিনি তার সন্তানকে নিয়ে ভয়ের মধ্যে রয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধায়ক অজয় কুমার সাহা জানান, মাত্র কয়েক মাস আগে দায়িত্ব নিয়ে তিনি চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধিসহ চিকিৎসক সংকটের সমাধানের চেষ্টা করেছেন। পুরাতন ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকার কথা স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে জীর্ণ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ৫০ শয্যার এ হাসপাতালকে ১০০ শয্যার উপযোগী করে গড়ে তুলতে নতুন ভবন নির্মাণসহ বিভিন্ন চাহিদার কথা কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।