ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভারতীয় জেলেদের অনুপ্রবেশ

অসহায় দেশি জেলেরা

খুলনা ব্যুরো
🕐 ৫:৩৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৬, ২০১৯

ভারতের জেলেরা অত্যাধুনিক ট্রলার ও মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকার করে। তারা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বাইনোকুলার দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তৎপরতায় চোখ রাখে ও নৌবাহিনী আসতে দেখলেই দ্রুত পালিয়ে যায় সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতীয় জেলেদের উপদ্রব বেড়েই চলছেই।

এ সব বিদেশি জেলেদের অনুপ্রবেশের কারণে অসহায় হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের জেলেরা। স্থানীয় জেলেরা জানান, ভারতীয় জেলেদের উৎপাতে দেশি জেলেদের মাছ শিকার ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে, দুদিনে বঙ্গোপসাগরে অভিযান চালিয়ে তিনটি ট্রলারসহ ৩৮ জন ভারতীয় জেলেকে গ্রেফতার করেছে নৌবাহিনী। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। মোংলা থানার ওসি মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ২৩ জন ভারতীয় জেলেকে মামলা দিয়ে কোর্টে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত ১ অক্টোবর ১৫ জন জেলেকে বঙ্গোপসাগরে অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকারের অপরাধে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

মোংলা বাজারের স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী রবিউল, আল আমিন ও জসিম অভিযোগ করে জানান, ভারতীয় জেলেদের উৎপাতে দেশি জেলেদের বর্তমান ইলিশ মৌসুমে মাছ শিকার ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এক সময় ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় ঘেঁষে বা কিছুটা ভিতরে ঢুকে ইলিশ শিকার করতো।

বর্তমানে তারা উপকূলীয় এলাকার কাছাকাছি এসে অবাধে মাছ শিকার করছে। অধিকাংশ সময়ই তারা গোপনে মাছ শিকার করে চলে যায়। বিদেশি জেলেরা উচ্চতাসম্পন্ন বাইনোকুলার দিয়ে ট্রলারে বসে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তৎপরতায় চোখ রাখে।

স্থানীয় জেলেদের দাবি, বাংলাদেশের জলসীমা থেকে ভারতের কাকদ্বীপ এলাকার কাছে হওয়ায় সেখানকার বিপুল সংখ্যক জেলে এ দেশের জলসীমায় মাছ ধরতে আসে। প্রতি বছর অক্টোবর-নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশি জেলেরা বঙ্গোপসাগরের সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় ট্রলার ও নৌকায় করে সামুদ্রিক নানা ধরনের মাছ আহরণ করে থাকেন।

কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের (মোংলা সদর দপ্তর) অপারেশন কর্তকর্তা লে. ইমতিয়াজ আলম জানান, দেশীয় জেলেরা সমুদ্রের ৬০-৭০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে মাছ ধরেতে পারে। আর ভারতীয় দেশীয় সমুদ্রসীমার প্রায় দেড়শ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করে থাকে। তারা দ্রুতগামী নৌযান ও কারেন্ট জালসহজিপিএস নামক বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করে। এসব জেলেদের ধরতে নৌ বাহিনীর পাশাপাশি তারাও সাগরে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

মোংলা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, সমুদ্রসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগে এ পর্যন্ত গ্রেফতারকৃত ৩৮ জেলের সবাই ভারতীয় নাগরিক। সর্বশেষ ৪ অক্টোবর বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকারের অপরাধে এফ বি স্বর্ণদ্বীপ ও এফবি আমৃতে নামে দুটি ফিশিং ট্রলারসহ ২৩ জন ভারতীয় জেলেকে আটক করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা।

 
Electronic Paper