ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

গরমে রেণু উৎপাদনে বিপর্যয়

বি এম ফারুক, যশোর
🕐 ৯:৪৭ অপরাহ্ণ, মে ২৬, ২০১৯

প্রচণ্ড গরমে মৎস্যপল্লী খ্যাত যশোরের চাঁচড়ায় মাছের রেণু উৎপাদনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গরমের কারণে রেণু উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। যাও উৎপাদন হচ্ছে তারও ক্রেতা মিলছে না। বরং গরমে উৎপাদিত রেণু মারা যাচ্ছে। গত দুই সপ্তাহের এ পরিস্থিতিতে মৎস্য চাষিদের কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে।

যশোর জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, রেণু উৎপাদনে যশোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এ জেলায় ৩৮টি হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে কার্পজাতীয় রেণু উৎপাদন ৬৪ দশমিক ৮৬ টন। এ জেলায় রেণুর চাহিদা ১৫ দশমিক ২৩ টন। উদ্ধৃত থাকে ৪৯ দশমিক ৬৩ টন। যা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। তেলাপিয়া পোনা উৎপাদিত হচ্ছে ১০১ দশমিক ৪০ মিলিয়ন। জেলায় চাহিদা রয়েছে ৯৮ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন। তেলাপিয়ার উদ্ধৃত ৬ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন। পাঙ্গাশ রেণু উৎপাদন ৩ দশমিক ৬২ টন এবং শিং, মাগুর, পাবদা, গলসা রেণু উৎপাদন শূন্য দশমিক ৮৫ টন।

যশোর জেলা মৎস্য হ্যাচারি মালিক সমিতির সভাপতি ও ফাতিমা হ্যাচারির স্বত্বাধিকারী ফিরোজ খান জানান, বিগত এপ্রিল ও চলতি মে মাসের পুরোটাজুড়েই চলছে প্রচণ্ড তাপদাহ। এতে তাদের হ্যাচারিতে উৎপাদিত রেণু মারা যাচ্ছে। এ ছাড়া খাদ্য ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সব হ্যাচারিতে রেণু উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

জেলা হ্যাচারি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান গোলদার জানান, কয়েক দিন ধরে যশোরাঞ্চলে তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলছে। তাপমাত্রা ৩৬-৩৮ ডিগ্রি পর্যন্ত রেকর্ড করা হচ্ছে। যশোরাঞ্চলে এ তাপদাহ জনজীবনের পাশাপাশি এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য সেক্টরেও প্রতিকূল প্রভাব ফেলেছে।

একই এলাকার মাছ চাষি অহিদুল্লাহ লুলু বলেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় রেণু উৎপাদনে ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না হ্যাচারি মালিকরা। কেননা মালিকরা রেণু বা পোনা কেনা কমিয়ে দিয়েছেন গরমের কারণে। হাপায় প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ না থাকায় পানির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। ডিম থেকে রেণু উৎপাদনেই গরম প্রভাব ফেলছে। দ্রুত বৃষ্টি না হলে হ্যাচারি ব্যবসা চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।

এ বিষয়ে যশোর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, যশোরাঞ্চলের ওপর দিয়ে কয়েক দিন ধরে যে তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে তা মাছ চাষের জন্য খুবই প্রতিকূল। এমন তাপমাত্রায় রেণু উৎপাদন সম্ভব না। প্রতিবছর এ সময়টা মাছ চাষিদের জন্য খুব খারাপ সময় যায়। এ সময়ে রেণু উৎপাদনকারীদের সতর্কতার সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত হলে বা তাপমাত্রা কমে গেলে রেণু উৎপাদন স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।

 
Electronic Paper