গুদামবন্দি ৩১০ টন চাল
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি
🕐 ৯:১৮ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০১৯
যশোরের কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানদের দ্বন্দ্বে গত ৮ মাসেও চূড়ান্ত হয়নি দুস্থদের দুই হাজার ৫৮৩টি ভিজিডি কার্ডের তালিকা। ফলে বিতরণের অভাবে দুস্থদের জন্যে বরাদ্দকৃত ৪ মাসের প্রায় ৩১০ টন চাল খাদ্যগুদামেই পড়ে রয়েছে।
অপরদিকে, গত ৯ মে উপজেলা খাদ্য বিভাগ ঘটা করে এক হাজার ৪৯৬ টন বোরো চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করলেও জায়গার অভাবে সংগ্রহ অভিযান ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
চেয়ারম্যানদের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের পাশ কাটিয়ে নিজেই তালিকা প্রস্তুতের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন বলেই দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে উপকারভোগীরা সরকারি চাল বঞ্চিত রয়েছেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাবি, জাতীয় সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনের কারণে সাময়িক বিলম্ব হয়েছে।
পাঁজিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মুকুল বলেন, তারা যথাসময়ে তালিকা চূড়ান্ত করে উপজেলা ভিজিডি কমিটির কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠায়। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তোয়াক্কা না করে উপজেলাব্যাপী মাইকিং করে দুস্থ মহিলাদের কাছ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করে একটি তালিকা প্রস্তুত করেন। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে চেয়ারম্যানদের দূরত্বের সৃষ্টি হয়ে এখন দীর্ঘ শত্রুতায় রূপ নিয়েছে।
গত জানুয়ারি মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত চার মাসে দুস্থদের ৩০৯.৯৬০ টন চাল উত্তোলন ও বিতরণের অভাবে খাদ্যগুদামেই পড়ে রয়েছে। গত ৫ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অপর এক স্মারকে ভিজিডি কর্মসূচির উপকারভোগীর প্রাথমিক তালিকা যাচাইকরণ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যানদের পত্র দেওয়া হয়। ওই তালিকা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ কমিটি যাচাই করে যেসব ইউনিয়নের তালিকায় বরাদ্দের অতিরিক্ত নাম অ্যান্ট্রি রয়েছে তা কর্তনের নিমিত্তে সব নামে ক্রমিক নং আলাদা কাগজে অ্যান্ট্রি করে প্রেরণকৃত তালিকাসহ নিম্ন স্বাক্ষরকারীর কার্যালয়ে আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানদের দ্বন্দ্বের কারণে গত ৮ মাসেও চূড়ান্ত হয়নি ভিজিডি কার্ডের উপকারভোগীর তালিকা। উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা হাচান আলী বলেন, গত ৯ মে এ উপজেলায় এক হাজার ৪৯৬ টন বোরো চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়। গত ১৬ মে পর্যন্ত মাত্র ৬০ টন চাল ক্রয় করা হয়েছে। খাদ্যগুদামে পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে চাল সংগ্রহ করা যাচ্ছে না।
উপজেলা ভিজিডি কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ভিজিডি কর্মসূচির উপকারভোগীর তালিকা ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে চূড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটে প্রভাব পড়তে পারে বলে সারা দেশের অধিকাংশ উপজেলার মতো কেশবপুরও এ কার্যক্রম স্থগিত ছিল। পরবর্তীতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। ভিজিডি কার্ড তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। যারা তালিকাভুক্ত হবেন তারা ঈদের আগেই চাল পাবে।