ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মংলায় আতঙ্ক

ঘূর্ণিঝড়ে নিহত ১, করমজলে মুহুর্মুহু বজ্রপাত

বাগেরহাট প্রতিনিধি
🕐 ১০:০৩ অপরাহ্ণ, জুন ২০, ২০১৮

দক্ষিণের জেলা বাগেরহাটের মংলায় ঘূর্ণিঝড় যেন পিছু ছাড়ছে না। গত ৪৮ ঘণ্টায় দুটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেছে। ঝড়ে নিহত হয়েছে এক জেলে। এছাড়া আহত হয়েছে কমপক্ষে পাঁচজন। যার ফলে মংলায় এখন ঘূর্ণিঝড় আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মংলা ও সুন্দরবনে পর্যটক আগমন ব্যাপকভাবে কমে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, গত সোমবার সুন্দরবন লাগোয়া মংলার জয়মনি এলাকা ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ওই দিন দুপুরে মাত্র আধা ঘণ্টার কিছু বেশি সময় স্থায়ী ঝড়ে ওই এলাকার কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও গাছপালা উপড়ে গেছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে পড়ায় কয়েক কিলোমিটার সড়কে অচলাবস্থা দেখা দেয়।
স্থানীয়রা জানান, আধা ঘণ্টার কিছু বেশি সময়ের ঝড়ে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র করমজল এলাকায় অন্তত ৩৬টি বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এ সময় নদীতে মাছ শিকারে থাকা জেলে শহীদুল বজ্রপাতে আহত হয়ে নদীতে পড়ে যায়।
পরদিন তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর বজ্রপাতে আহত হয়েছেন দুলাল ও মাসুদ নামে দুজন।
এদিকে, ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে সুন্দরবন মংলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনি গ্রামে ফের টর্নেডো আঘাত হানে। প্রায় ঘণ্টা খানেক স্থায়ী এ ঝড়ে জয়মনি গ্রামের অন্তত দুইশ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। এদিন বজ্রপাতে এক গৃহবধূসহ তিনজন গুরুতর আহত হয়। পর পর দুদিন ঘূর্ণিঝড়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মংলাবাসী। গতকাল বুধবার দুপুর থেকে আকাশ আবার মেঘলা হলে অনেকেই নিরাপদ স্থানে সরে যেতে শুরু করেছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত মংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন জানান, গত সোমবার ও মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ে চিলা ইউনিয়নের প্রায় ৩০০ ঘর কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে মেঘ দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন এ এলাকার লোকজন। আমরা স্থানীয়ভাবে আতঙ্কগ্রস্ত লোকদের প্রয়োজনে ঘূণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্রের ওসি হাওলাদার আজাদ জানান, গত সোমবার ঝড়ের সময় বিকট শব্দে ৩৬টির মতো বজ্রপাত হয়েছে। সে সময় পর্যটন কেন্দ্রে আটকে পড়া পর্যটকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। মঙ্গলবারও ফের বজ্রপাত হয়েছে। ঈদের সময় পর্যটক বেশি থাকে এ কেন্দ্রে। তবে আবহাওয়া এমন বিরূপ থাকলে পর্যটক আসা অনেক কমে যাবে।
মংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম জানান, গত দুদিনের ঝড়ে জয়মনি এলাকার প্রায় তিনশ কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েকশ গাছপালা উপড়ে গেছে। অনেক পরিবার এখন খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিয়েছে। তাদের সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসন ও খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের সঙ্গে যোগোযোগ করা হয়েছে। আমরা স্থানীয় প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে। ঘূণিঝড়ের সময় তাদের নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

 
Electronic Paper