দৌলতপুরে ভালো নেই কামাররা
আল-মাহাদী, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া)
🕐 ৭:৫৩ অপরাহ্ণ, মে ১৭, ২০১৯
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় আধুনিকতার ছোঁয়ায় বদলে গেছে মানুষের জীবনধারা। সেইসঙ্গে বদলে গেছে মানুয়ের রুচি। দিন বদলের প্রতিযোগিতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেসব শিল্প মানুষের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় উপকরণ তৈরি করতে পারছে না তাদের প্রথম সারিতে রয়েছে কামার শিল্প। যুগের চাহিদা মেটাতে না পারায় দিন দিন পিছিয়ে যাচ্ছে কামার শিল্প। আর এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জীবনে নেমে আসছে চরম দুর্দিন।
সম্প্রতি এ শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক টানাপড়েনে বিপাকে পড়েছেন শিল্পীরা। দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করেও দুই বেলা পেট ভরে খাওয়ার সৌভাগ্য হচ্ছে না তাদের। তাছাড়া অর্থাভাবে শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সর্বক্ষেত্রেই ভোগান্তির শিকার হচ্ছে কামার শিল্প তথা কারিগররা। অনেকেই ছেড়ে দিয়েছে বাপ-দাদার এ পেশা।
ফিলিপনগর কামার শিল্পের কারিগর সাজদার কর্মকার (৫০) জানান, দেশজুড়ে দা, বঁটি, খুন্তা, কুড়াল, কোদাল, ছুরি, নিড়ানি, লাঙলের কিছু চাহিদা থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় লাভের পরিবর্তে লোকসান হচ্ছে আমাদের। এ শিল্পের প্রধান উপকরণ হচ্ছে লোহা ও ইস্পাত। লোহা ও ইস্পাতের অস্বাভাবিক হারে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সেইসঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে কারিগরদের ব্যবহৃত হাতুড়ি, সাঁড়াশিসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতির মূল্য।
বর্তমানে এক বস্তা কাঠ কয়লা ক্রয় করতে ২৫০-৩০০ টাকা লাগে। যা ২-৩ বছর আগে অর্ধেকেরও কম মূল্যে পাওয়া যেত। অথচ আমাদের তৈরি জিনিসপত্রের দাম খুব একটা বাড়েনি।
সুদীপ্ত কর্মকার বলেন, আমি ২৪ বছর ধরে কামার শিল্পের কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে কয়লা ও লোহার দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভের স্থলে লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই সরকার যদি এ শিল্পের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ায় হয়তো আবার এ শিল্প মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে।
তাছাড়া এখন আধুনিক প্রযুক্তিতে স্টিল দিয়ে তৈরি দা, ছুরি, কুড়ালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণ বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। তাই অনেকে আমাদের জিনিস ক্রয় করতে চায় না। এ কারণেই অনাহারে, অর্ধাহারে আমাদের জীবন হয়ে উঠেছে চরম দুর্বিষহ। বাচ্চাদের লেখাপড়ার খরচ জোগানোও দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে।