সাতক্ষীরায় গাইড বই বন্ধে প্রশ্নবিদ্ধ প্রশাসন
ইব্রাহিম খলিল, সাতক্ষীরা
🕐 ৯:২৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৬, ২০১৯
সাতক্ষীরায় এনসিটিবির অনুমোদনহীন নোট-গাইড বন্ধে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরকার নোট-গাইড বন্ধে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক আইন-২০১৮ প্রণয়ন করেছে। অথচ এ আইন প্রয়োগে প্রশাসনের উদ্যোগ পরিলক্ষিত না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। জেলাব্যাপী লাইব্রেরিগুলোতে নোট-গাইড ও ব্যাকরণ বইয়ে সয়লাব হলেও অভিযান চালাতে দেখা যায় না প্রশাসনকে। এমনকি পিকআপভর্তি নোট-গাইড জব্দ করে কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার নাজমুল সরণির পপি ও বইমেলা লাইব্রেরি থেকে পিকআপভর্তি বিপুল পরিমাণ নোট-গাইড জব্দ করেন সদর থানার পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) আবুল কালাম। বইগুলোর মূল্য আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকা। অনুপম, গ্যালাক্সি ও পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স প্রকাশিত বইগুলো তৃতীয় থেকে নবম শ্রেণির সহায়ক গ্রন্থ।
বইগুলো ছাড়িয়ে নিতে বইমেলা লাইব্রেরির স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্যা ও পপি লাইব্রেরির মিলন আহমেদ সদলবলে সদর থানায় যান। ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা যাচাই-বাচাই করে দেখবেন, বইগুলো বৈধ কি না। অবৈধ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অবৈধ নোট-গাইড জব্দে পুলিশের ভূমিকা প্রশসংনীয়। জব্দকৃত বই ও মালিকদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে ভালো হতো।
এদিকে ভুক্তভোগীরা জানান, জেলার প্রত্যেকটি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসাগুলোতে অবৈধ নোট-গাইড ও ব্যাকরণ বই পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে পড়ানো হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা শহরগুলোর লাইব্রেরিগুলোতে তাই এখন নিষিদ্ধ নোট-গাইডে সয়লাব। এতে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকরা। চড়া মূল্যে এসব নোট-গাইড ও ব্যাকরণ বই কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এমনকি অভিভাবকদের জিম্মি করে ইংরেজি ব্যাকরণের সঙ্গে বাংলা ব্যাকরণ বই কিনতেও বাধ্য করছেন বিক্রেতারা।
জেলা নাগরিক মঞ্চ আন্দোলনের সদস্য সচিব হাফিজুর রহমান মাসুম বলেন, জব্দকৃত বইগুলো ছেড়ে দেওয়ার অর্থই হচ্ছে, অবৈধ নোট ও গাইডের প্রতি প্রশাসনের প্রচ্ছন্ন সমর্থন। যেটি দুঃখজনক। তা ছাড়া অবৈধ এসব নোট-গাইড ও ব্যাকরণে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে কি না, তা যাচাই করা একান্ত প্রয়োজন।