ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সাতক্ষীরায় ফসলি জমিতে লবণাক্ততা

ইব্রাহিম খলিল, সাতক্ষীরা
🕐 ৯:৩৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৯

সাতক্ষীরার উপকুলীয় অঞ্চলে ফসলী জমিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে বোরো চাষে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন কৃষক। ধানের চারা রোপন করার পর তা শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। কোনো কোনো কৃষক দুই থেকে তিন দফায় বোরো ধানের চারা রোপন করেও বাঁচাতে পারছেন না।

তবে কৃষি বিভাগ বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন জণিত কারণে মৌসুমী বৃষ্টিপাত না হওয়াতে জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের ফসলী জমির লবণাক্ততা বেড়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে জেলার দেবহাটা, আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলাতে চলতি মৌসুমে বোরো উৎপাদন কমে যেতে পারে।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যানুযায়ী চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলাতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৪ হাজার ৭৩৩ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলাতে ২৩ হাজার ৬০০ হেক্টর, কলারোয়ায় ১২ হাজার ৭৭১ হেক্টর, তালায় ১৮ হাজার ৭১৭ হেক্টর, দেবহাটায় ৫ হাজার ৮৬০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৫ হাজার ২৯০ হেক্টর, আশাশুনিতে ৬ হাজার ৪৬৫ এবং শ্যামনগরে ২ হাজার ৩০ হেক্টর। সূত্রটি আরো জানায়, চলতি মৌসুমের এ পর্যন্ত লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৬৭ হাজার ৫১৫ হেক্টর পরিমাণ। গত মৌসুমে জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৭৩ হাজার ৪২০ হেক্টর জমি।

সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের কৃষক নুর আলী জানান, চলতি মৌসুমে অন্যের ৫ বিঘা জমি লিজ নিয়ে বোরো চাষ করেছেন। কিন্তু জমিতে অতিমাত্রায় লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় বোরো ধানের চারা রোপন করার ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে এসব চারা শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। এতে করে ৫ বিঘা জমির বোরো বীজতলা, চারা রোপন, সেচ এবং সার-কিটনাশক ব্যবহার করে এ পর্যন্ত ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। কিন্ত ক্ষেতের চারার যে অবস্থা তা সমুদয় খরচ লোকসানে পরিণত হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

দেবহাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন জানান, কিছু কিছু এলাকাতে তীব্র শীত এবং লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় বোরো ধানের চারা নষ্ট হয়ে গেছে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে এখনো অনেক সময় আছে সামনে চারা রোপন করার। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, আবহাওয়া জণিত কারণে চলতি মৌসুমে জেলার কিছু কিছু এলাকাতে বোরো চাষে ক্ষতি হচ্ছে।

তিনি বলেন, কখনো তীব্র শীত কখনো গরম আবার কখনো জমির লবণাক্ততা বাড়ছে। এতে করে শুধু বোরো আবাদে নয় অন্যান্য ফসলেরও ক্ষতির কারণ হচ্ছে। তবে যে এলাকাতে বোরো বীজতলা বা চারা মরে যাচ্ছে সে সব এলাকার কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

 
Electronic Paper