লাঙ্গলবাঁধ বাজার উন্নয়ন থেমে আছে ৫৪ বছর
দেলোয়ার কবীর, ঝিনাইদহ
🕐 ৮:৪৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৯
ঝিনাইদহ ও মাগুরা এ দুই জেলায় অবস্থিত গড়াই নদী তীরের লাঙ্গলবাঁধ বাজারটি বৃহত্তর খুলনা বিভাগের সর্ববৃহৎ হাট। উল্লিখিত জেলা দুটি ছাড়াও নদীর অপর পারের রাজবাড়ি জেলার বিরাট একটা অংশের মানুষের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ লাঙ্গলবাঁধ বাজার হলেও শতবর্ষেরও বেশি পুরনো বাজারটির উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থেমে আছে। এর কারণ ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আয়ূব খান ব্যক্তি মালিকানার বাজারটি খাস খতিয়ানের অন্তর্ভূক্ত করেন। এতেই হাটটির সম্প্রসারণ ও সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে।
ওই বাজারের ভালো-মন্দ আর অপার সম্ভাবনা নিয়ে ব্যবসায়ি, চিকিৎসক, জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদের সঙ্গে কথা বলে খোলা কাগজের এই প্রতিবেদক জানতে পারেন, ১৩৫০ সালে প্রায় ১৪০ বছর আগে সাবেক ব্রিটিশ আমলে বৃহত্তর যশোর জেলার (বর্তমান ঝিনাইদহ) শৈলকুপা সদর থেকে ১৬-১৭ কিলোমিটার এবং মাগুরার শ্রীপুর থানা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তরে প্রমত্তা গড়াই নদীর দক্ষিণ পাড়ে গড়ে ওঠে লাঙ্গলবাঁধ বাজার। ব্যবসা-বাণিজ্য মূলত নৌকা বা জাহাজের মাধ্যমে চলায় কুষ্টিয়া সদর, কুমারখালি, খোকসা, রাজবাড়ির পাংশা, মাগুরা এমনকি যশোর থেকেও ব্যবসায়িরা আসত পণ্য কেনাবেচা করতে। পরবর্তীতে পসরার পরিমাণ ও জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যক্ত কলোনিতেও সম্প্রসারিত হয়। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ার পর এখন ট্রাকে করেও পণ্য পরিবহন করা হচ্ছে।
ব্যবসায়ী গোলাম কুদ্দুস জানান, বাজারের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণকাজ থেমে আছে ১৯৬৫ সাল থেকে। জমির মালিকরা স্বাধীনতা পরবর্তীকালে আয়ূব খানের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আদালতে মামলা করলেও আজ পর্যন্ত খাস খতিয়ানেই রয়ে গেছে। ফলে নিজের ঘরখানাও তারা মেরামত, পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করতে পারছেন না।
ব্যবসায়ী প্রদীপ কুন্ডু জানান, বর্তমানে বাজারে ছোটবড় কমপক্ষে ১২শ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২৫ ভাগ দোকানই পাইকারি ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। পাট, ধান, গম, পেঁয়াজ ইত্যাদি কৃষিপণ্য এবং রড, ঢেউটিন, সিমেন্ট ইত্যাদি পাইকারি ও খুচরা বেচাকেনার জন্য প্রসিদ্ধ এ হাট। কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল বারি জানান, চলতি বছরেও লাঙ্গলবাঁধ বাজারটি ৩৫ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে।
লাঙ্গলবাঁধ বাজারের সমন্বয় পরিষদ সভপতি ও স্থানীয় ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, আইনি লড়াই করে এ বাজারের সঙকট দূর করতে হবে।