ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চিংড়ি পোনা সংকটে বাগেরহাটের চাষিরা

ইমরুল কায়েস, বাগেরহাট
🕐 ১:৩৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০১৯

নানা কারণে বন্ধ হয়ে গেছে বাগেরহাটের উৎপাদনমুখী সব গলদা চিংড়ির হ্যাচারি। গলদা পোনা উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় লোকসানে পড়ে হ্যাচারি বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকরা। কেউ কেউ আবার গলদার হ্যাচারিতে বিকল্প হিসেবে কার্প জাতীয় মাছের চাষ শুরু করেছেন। এতে বিপাকে পড়েন গলদা চিংড়ি চাষিরা।

প্রাকৃতিক উৎস ও পার্শবর্তী দেশ ভারত থেকে আসা পোনার ওপর ভরসা করতে হচ্ছে চাষিদের। তবে ভারতীয় পোনার উৎপাদন ও টিকে থাকা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন গবেষকরা। 

বাগেরহাট জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ৪৯ হাজার গলদা চিংড়ির ঘের রয়েছে। এতে প্রায় ৪০ হাজার চাষি গলদা চাষ করেন। এসব ঘেরে প্রতিবছর প্রায় ২১ কোটি পোনার চাহিদা থাকে।

জেলায় মৎস্য অধিদপ্তরের লাইসেন্সকৃত গলদা পোনা উপাদনকারী ৭টি হ্যচারি ছিল। যা দিয়ে মোট চাহিদার একটা বড় অংশ পূরণ হত। সর্বশেষ ২০১৮ সালে হ্যাচারিগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ।

‘বাগেরহাট হ্যাচারি’র মালিক বিমল কুমার মিত্র বলেন, ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রত্যেক মৌসুমে আমরা ৭০ থেকে ৮০ লাখ পোনা উৎপাদন করেছি। ২০১৩ সালে আমাদের উৎপাদনে ধস নামে। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অব্যাহত চেষ্টা করি পোনা উৎপাদনের। কিন্তু সফল না হতে পেরে ২০১৮ সালে আর ব্যর্থ চেষ্টা করিনি। ৫ বছরে আমরা প্রায় ১ কোটি টাকা দেনা হয়েছি।

ব্রাক গলদা চিংড়ি হ্যাচারির ব্যবস্থাপক হোসনে আজম বলেন, ২০০১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ভালোভাবেই চলছিল। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে উৎপাদন না হওয়ায় লোকসান হয় আমাদের। যার ফলে আমরা দুটি হ্যাচারিই বন্ধ করে দিই। এখন একটিতে মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষ হচ্ছে।

চিংড়ি চাষি ফকির মহিতুল ইসলাম সুমন বলেন, পোনা উৎপাদনকারী হ্যাচারিগুলো বন্ধ হওয়ার কারণে আমাদের গলদা চাষের ক্ষেত্রে নানারকম সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। সময়মতো ভালো পোনা সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রাকৃতিক উৎসের প্রতি নির্ভর হওয়ায় সময়মতো পোনা পাই না।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) জিয়া হায়দার চৌধুরী জানান, গত দুই বছর ধরে উৎপাদন ভালো না হওয়ায় জেলার হ্যাচারিগুলো একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। হঠাৎ অ্যামোনিয়া গ্যাস বৃদ্ধির কারণে হ্যাচারিতে উৎপাদন লার্ভা (পোনা) মরে যাচ্ছে। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের নিজস্ব হ্যাচারিতে ভালো পোনা উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. খান কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা কয়েক বছর ধরে গবেষণা করছি। এক বছর একটি সমস্যা ধরা পড়লে অন্য বছর নতুন সমস্য ধরা পড়ে।

 
Electronic Paper