ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভবনের বাইরে পাঠদান

নড়াইল প্রতিনিধি
🕐 ৯:৩৭ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০১৮

নড়াইলের লোহাগড়ায় ৬ বছর আগে জয়পুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী মরিচপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করার পর থেকে স্কুলের বারান্দায়, গাছতলায় ও খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান। আকাশে মেঘ দেখলেই স্কুল ছুটি দিতে বাধ্য হচ্ছে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

হঠাৎ করে বৃষ্টি নেমে গেলে বিদ্যালয়ের একটি মাত্র কক্ষে কোনো রকমের আশ্রয় নিচ্ছে বিদ্যালয়ের কোমলমতী শিক্ষার্থীরা। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া হুমকির মুখে পড়ছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলে বারবার বিষয়টি জানানো হলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লোহাগড়া উপজেলার মরিচপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের ছোট বড় তিনটি ভবনের মধ্যে ২টি ভবন ৬ বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। বাকি দুই কক্ষবিশিষ্ট ভবনে একটি অফিস রুম আর একটি কক্ষে প্রায় ৫শ শিক্ষার্থীর পাঠদান করানো হয়। ৬ বছর ধরে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিদ্যালয়ের বারান্দায়, গাছের নিচে ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তৈরি করা একটি টিনশেডের ছাপড়ায় চলছে পাঠদান। এলাকাবাসীর উদ্যোগে তৈরি করা টিনের ছাপড়াটির চারদিকে কোনো বেড়া না থাকায় বৃষ্টি হলে এখানেও ক্লাস করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী অরণ্য, হাফসা, সেতু জানান, আমরা রোদ-বৃষ্টির মধ্যে ক্লাস করতে পারি না। আশপাশের শব্দের কারণে পড়াশোনায় মন বসে না। বিদ্যালয়ে ভবন না থাকায় খোলা জায়গায় পড়ালেখা করতে হচ্ছে। হঠাৎ বৃষ্টি হলে তাদের বইখাতা ভিজে যায়। ক্লাস করতে এসে বৃষ্টিতে ভিজে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছে বলেও জানান তারা।
প্রধান শিক্ষক সুবিনা আক্তার সাথী জানান, আমাদের বিদ্যালয়ের দুটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করার পর কোনো ভবন তৈরি না করে গত বছর দুটি ভবনই নিলাম করা হয়েছে। বর্তমানে ছেলেমেয়েদের জন্য একটি মাত্র রুম আছে। গত বছর এ বিদ্যালয় থেকে ১৬ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছে যার মধ্যে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে ১৪ জন। ভবন না থাকায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি না হয় সেজন্য বারান্দায়, খোলা স্থানে এবং টিনের ছাপড়ায় ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। দ্রুত বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। লোহাগড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. লুৎফর রহমান জানান, উপজেলার মধ্যে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান অনেক ভালো। এখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও অনেক বেশি। দ্রুত বিদ্যলয়ের ভবন নির্মাণের প্রয়োজন মনে করে তিনি বলেন, সমাধানের চেষ্টা চলছে।

 
Electronic Paper