ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পলিতে ভরাট তিন নদী

কেশবপুরে তিন লাখ মানুষ জলাবদ্ধতার শঙ্কায়

সিদ্দিকুর রহমান, কেশবপুর (যশোর)
🕐 ৯:৪৪ অপরাহ্ণ, মে ১৮, ২০১৮

যশোরের কেশবপুরের তিনটি নদী পলিতে ভরাট এবারও ভয়াবহ জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় আছেন প্রায় ৩ লাখ মানুষ। নদী ও খাল খননে ৪৯ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে মন্ত্রণালয়। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়ে দিয়েছে ‘সময় নেই’ তাই এবার আর খননকাজ হবে না। ফলে কেশবপুরে এবারও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অখিল কুমার বিশ্বাস বলেন, কেশবপুর অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরাসনে নদ-নদী ও খাল খননের জন্য পরিকল্পনা কমিশন থেকে ৪৯ কোটি টাকা পাস হয়েছে। তবে এবছর আর খননকাজ করা সম্ভব হবে না। কারণ মাটির কাজ প্রতি বছরে মে মাসে ১৫ তারিখের মধ্যে করতে হয়। এবছর দরপত্র প্রক্রিয়া থেকে দাপ্তরিক কাজ সেরে কাজে হাত দিতে গেলে সময় পাওয়া যাবে না। তার আগেই বৃষ্টি নেমে যাবে। খননকাজ না হলে এ বছর ভয়াবহ জলাবদ্ধতার আশঙ্কা আছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছুই করার নেই। তবে বৃষ্টির সময় পানি নামার জন্য কিছু কাজ করা হবে।’
গত বছরের বর্ষায় শহরের অর্ধেক অংশে পানি ঢুকে পড়ে। প্লাবিত হয় উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। কেশবপুর পৌর এলাকার পাশাপাশি কেশবপুর সদর, মজিদপুর, মঙ্গলকোট, গৌরিঘোনা, বিদ্যানন্দকাটি, পাঁজিয়া, ত্রিমোহিনী, সুফলাকাটি, সাগরদাঁড়ি, সাতবাড়িয়া ও হাসানপুর ইউনিয়নের প্রায় ১ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। তখন বহু মানুষ গৃহহারা হয়ে রাস্তার ধারে ঝুপড়ি ঘর বেঁধে ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেয়। খাদ্য সংকটসহ নানা পরিস্থিতিতে গতবার জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়ে। কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয় সূত্র বলেছে, বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার আশঙ্কার বিষয়টি মাথায় রেখে তারা আগেভাগেই নদ-নদী ও খাল খননকাজ শুরুর বিষয় তৎপর ছিল। এ জন্য বরাদ্দ পেতে গত বছরের জুনের দিকে মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়। কিন্তু সময়মতো মন্ত্রণালয় থেকে সাড়া মেলেনি। প্রকল্প পাস হয়েছে শেষ সময়ে (চলতি বছরের মার্চের প্রথম সপ্তাহে) আসে।
কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সায়েদুর রহমান বলেন, নদ-নদী খননের বরাদ্দ পেতে গত বছরের জুনের দিকে মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়। কিন্তু সময়মতো মন্ত্রণালয় থেকে সাড়া মেলেনি। প্রকল্প পাস হয়েছে শেষ সময়ে (চলতি বছরের মার্চের প্রথম সপ্তাহে)। পাস হওয়া ৪৯ কোটি টাকা দিয়ে কেশবপুরে তিনটি নদী ও পাঁচটি খাল খননের কথা। এর মধ্যে রয়েছে হরিহর নদের ১৫ কিলোমিটার, বুড়িভদ্রার ১০ কিলোমিটার ও ভদ্রা নদীর ১০ কিলোমিটার এবং বুড়লী খাল, খোজাখালি খাল, ডহুরি খাল, বড়পিঠ খাল ও গরালিয়া খাল। এসব নদী ও খালে দেড় থেকে দুই ফুট পলি জমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে নদ-নদী ও খালের খনন কাজ শুরু হবে। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যেই তা শেষ করা হবে।

 
Electronic Paper