খুলনায় হাটের ইট বিক্রির ঘটনায় তদন্ত কমিটি
মো. জামাল হোসেন, খুলনা
🕐 ৮:৩৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২২
ইজারাদার কর্তৃক খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট ইউনিয়নের কোলার হাটের সলিংয়ের (মাটিতে বিছানো) প্রায় ৩০ হাজার সরকারি ইট তুলে বিক্রির ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত এ কমিটি ৪ সেপ্টেম্বর গঠন করা হয়। কমিটিকে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম এ প্রতিবেদককে বলেন, কমিটিকে সরেজমিনে তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া তিনি নিজেও সরেজমিনে কোলাহাট পরিদর্শন করে বিষয়টি দেখবেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুর রহমানকে কমিটির আহবায়ক এবং উপজেলা প্রকৌশলী (চ.দা.) আবু তারেক সাইফুল কামালকে সদস্য সচিব ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সামাদকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটি গঠন সংক্রান্ত পত্রে উল্লেখ করা হয়, দিঘলিয়া উপজেলার কোলার হাটের ব্যবসায়িগণ মৌখিক ও লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন যে, ইজারাদার কোলারহাটের পজিশন বরাদ্দে স্বেচ্ছাচারিতা ও অবৈধভাবে টাকা নিচ্ছে এবং হাটের রাস্তার সলিংয়ের ইট বিক্রি করছে। এছাড়াও হাটের ব্যবসায়িগণ অভিযোগ করেছেন যে, তাদের পূর্বের পজিশন না দিয়ে জোর পূর্বক অন্যত্র স্থানান্তরের চেষ্টা করছে।
আরও উল্লেখ করা হয়, কোলারহাট নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ইজারাদারের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে কোলাবাজার সরেজমিনে পরিদর্শন পূর্বক সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে তদন্ত পূর্বক বিধিমাফিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হলো।
প্রসঙ্গত, দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট ইউনিয়নের কোলার হাটের ইজারাদার মো. বুলু শেখ সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন ধরণের অনুমোদন ছাড়াই হাটটি উঁচু করার জন্য সলিংয়ের সরকারি প্রায় ৩০ হাজার ইট তুলে প্রতি হাজার ইট ৮ হাজার টাকা করে বিক্রি করছেন। এছাড়া তিনি হাটে ব্যবসা করার জন্য দোকান প্রতি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোর পূর্বক ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা এবং ঘর তোলা বাবদ প্রতিটি ‘খুঁটি’র জন্যও ৩শ’ টাকা করে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এছাড়া বাজারে দোকান দিতে হলে ইজারাদারকে নতুন করে চাঁদা দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করে করম আলী মোল্লা, হাবিব শেখ, হুবাইয়া, অছিকার মোল্লা, বাদশা শেখ এবং প্রতিবন্ধী ব্যবসায়ী আফজাল শেখসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী গত ২৯ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরবার আলাদা দু’টি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল আলমের নজরে আনা হলে তিনি তাৎক্ষনিক বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সেনহাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশীলদার (নায়েব) স্বপন কুমার বিশ্বাসকে দায়িত্ব দেন। সে মোতাবেক তহশীলদার সরেজমিনে সংশ্লিষ্ট এলাকায় গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। এরপরই তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো।