ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কুষ্টিয়ায় সোলার প্যানেল বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা

শরীফ উদ্দিন বিশ্বাস, কুষ্টিয়া
🕐 ৯:৫৫ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০১৮

কুষ্টিয়ার ছয়টি উপজেলার মধ্যে পাঁচটিতেই সময়মতো সোলার প্যানেল বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কাজের সময়সীমা পার হতে চললেও এখন পর্যন্ত তালিকা প্রণয়নের কাজই শেষ করতে পারেরনি সংশ্লিষ্ট আসনের সংসদ সদস্যরা।

কবে নাগাদ তালিকা দেওয়া হবে তাও জানাতে পারেননি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা (পিআইও)। এ অবস্থায় চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন শিক্ষা, ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে সোলার প্যানেল বসানো হয় তা নিয়ে এক প্রকার ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ অফিস সূত্র জানিয়েছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জেলায় সোলার প্যানেল বসানোর কাজ এখনো শুরু করা যায়নি। বছরের শুরুতেই বরাদ্দপ্রাপ্তির পর টেস্ট রিলিফ ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের অধীন সোলার প্যানেল বসানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হলেও এ বছর সোলার প্যানেল বসানো তো দূরের কথা তালিকা প্রণয়নেও সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে জেলায় সংসদ সদস্যদের মাঝে টিআর ও কাবিটার কাজের জন্য প্রথম দফায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকার মতো বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ কাজের অর্ধেক ব্যয় করার কথা সোলার প্যানেল বসানোর কাজে। মার্চের মধ্যে তালিকা দেওয়ার কথা থাকলেও মে মাসে তালিকা প্রণয়নের কাজই চলছে। এছাড়া দ্বিতীয় দফার কাজের জন্য মে মাসের আগেই তালিকা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এ কে এ নেওয়াজ বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে প্রথম দফায় টিআর কাজের জন্য ৫০ লাখ ও কাবিটার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ৪৭ লাখ টাকা। এ কাজের ৫০ ভাগ অর্থ ব্যয় হবে সোলার প্যানেল বসানোর কাজে।’
নিয়মানুযায়ী উপজেলা পরিষদের সাধারণ বরাদ্দ থেকে ২০ ভাগ ও সংসদ সদস্যদের বিশেষ বরাদ্দ থেকে ৫০ ভাগ অর্থ ব্যয় হবে এ কাজে। তবে বিগত কয়েকটি অর্থবছরে দেখা গেছে সোলার প্যানেল বসানো নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। প্রকল্প কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে গিয়ে কোনো কাজ পাওয়া যায়নি। এমনকি মসজিদ-মাদ্রাসা কমিটিকে না জানিয়ে বিল তুলে নেওয়ার মতো ঘটনাও পাওয়া গেছে। আবার কোনো প্রতিষ্ঠানে সোলার বসানো হলেও বছর না ঘুরতেই তা অকেজো হয়ে পড়েছে।
পিআইও অফিস সূত্র জানিয়েছে, প্রথম দফায় উন্নয়নের কাজের চেক ছাড়া হলেও সোলার প্যানেল স্থাপনের জন্য সংসদ সদস্যের কাছ থেকে তারা এখনো কোনো তালিকা পাননি। তালিকা হাতে পেলে অনুমোদনের জন্য পাঠাবেন। অনুমোদন হয়ে আসলে তখন কাজ শেষ হবে। তবে দেরিতে কাজ শেষ হওয়ায় সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কুমারখালী পিআইও অফিসের কর্মকর্তা আলিমুল রেজা বলেন, ‘এখনো তারা সোলার প্যানেল বসানোর কাজ শুরু করতে পারেননি। তালিকা এখনো তাদের কাছে পাঠানো হয়নি। আগামী মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হবে। তখন একটা সিদ্ধান্ত আসবে।’
তবে ছয় উপজেলার মধ্যে একমাত্র দৌলতপুর উপজেলা সঠিক সময়ে কাজ শুরু করতে পেরেছে। গত মার্চ মাসেই তালিকা অনুমোদন করে কাজ শুরু করেছে তারা। সাধারণ বরাদ্দের প্রায় শতভাগ কাজ শেষের পথে। সংসদ সদস্যের তালিকার কাজও চলছে। প্রথম দফার কাজ চলমান থাকার পাশাপাশি দ্বিতীয় দফার কাজের তালিকাও প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে
এ ব্যাপারে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহিনুজ্জামান জানান, ‘স্থানীয় সংসদ সদস্যকে কয়েকবার তাগাদা দিয়েছি, উনি তালিকা দ্রুত সময়ের মধ্যে দিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন। তালিকা পেলেও এ বছর সময়মতো না পাওয়ায় কাজ বাস্তবায়নে কিছুটা হলেও বেগ পেতে হবে। যে সংস্থাকে দিয়ে কাজ করানো হবে তারাও সমস্যায় পড়বে।’
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হান বলেন, ‘এখনো সব উপজেলার তালিকা আমাদের কাছে আসেনি। আসলে মিটিংয়ে অনুমোদন দেওয়া হবে। বিষয়টি ইউএনও ও পিআইওদের দেখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

 
Electronic Paper