ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভোজ্য তেলের অবৈধ মজুদ

খুলনায় গোডাউনে মিলছে লাখ লাখ লিটার

৬ ব্যবসায়ীকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা

মোঃ জামাল হোসেন, খুলনা
🕐 ৫:৩০ অপরাহ্ণ, মে ১২, ২০২২

খুলনায় গোডাউনে মিলছে লাখ লাখ লিটার

খুলনায় বাজারে ভোজ্য তেলের সংকট এবং অধিক মূল্য থাকলেও গোডাউনগুলোতে মিলেছে লাখ লাখ লিটার তেলের অবৈধ মজুদ। পাইকারী ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে এসব তেল মজুদ করে রেখে বাজারে কৃত্তিম সংকট তৈরি করছেন। বৃহস্পতিবার (১২ মে) দুপুরে নগরীর স্যার ইকবাল রোডস্থ বড় বাজারের এলাকার সিটি ব্যাংক গলিতে অবস্থিত সোনালী এন্টার প্রাইজ, সাহা ট্রেডার্স ও রণজিৎ এন্ড সন্স নামক তিনটি প্রতিষ্ঠানের ৮টি গোডাউনে জেলা প্রশাসন ও র‌্যাবের যৌথ ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অবৈধ মজুদের সত্যতা মেলে।

এসব গোডাউনে পাওয়া যায় ১ হাজার ১২৯ ব্যারেল সয়াবিন ও সুপার পামওয়েল। যার পরিমান ২ লাখ ৩০ হাজার লিটার। এ অভিযাগে প্রতিষ্ঠান তিনটিকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের নেতৃত্বে থাকা খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেলের মুখপাত্র বেদাশীষ বসাক।

অপরদিকে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে অতিরিক্ত মূল্যে সয়াবিন তেল বিক্রির অভিযোগে তিনটি খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে আরও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের সূত্র জানান, ভোজ্য তেলের অবৈধ মজুদ রাখার গোপন খবরের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বড় বাজারের সোনালী এন্টার প্রাইজ, সাহা ট্রেডার্স ও রণজিৎ এন্ড সন্স নামক তিনটি প্রতিষ্ঠানের ৮টি গোডাউনে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সোনালী এন্টার প্রাইজের ৩টি গোডাউনে ১৪৪ ব্যারেল সয়াবিন ও ১৭১ ব্যারেল সুপার পামওয়েল, সাহা ট্রেডার্সে ১৬৭ ব্যারেল সয়াবিন ও ৩৩৯ ব্যারেল সুপার পামওয়েল এবং রণজিৎ এন্ড সন্স নামক প্রতিষ্ঠানে ৩০৪ ব্যারেল তেল পাওয়া যায়। এ অভিযোগে সোনালী এন্টার প্রাইজের মালিক প্রদীপ সাহাকে ৩০ হাজার টাকা, সাহা ট্রেডার্সের মালিক দিলীপ কুমার সাহাকে ৯০ হাজার টাকা এবং রণজিৎ এন্ড সন্স নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক অজিত বিশ্বাসকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেবেদাশীষ বসাক বলেন, কৃষি বিপনন আইন-২০১৮ অনুযায়ী কোন প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ ৩০ মেট্টিক টন এবং ৩০ দিনের বেশি মজুদ রাখা যাবে না। কিন্তু উল্লিখিত প্রতিষ্ঠান ৩টি এ আইন লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত তেল মজুদ রেখেছিল। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, জনস্বার্থে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। কেউ যাতে ভোজ্যতেল মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।

র‌্যাব-৬ খুলনার সদর কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, গোডাউনগুলোতে অতিরিক্ত তেল পাওয়া গেছে। তাদের এ বিষয়ে সর্তক ও জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

তবে প্রতিষ্ঠান মালিকরা দাবি করেন, চলমান ব্যবসার প্রয়োজনে তেল মজুদ করা হয়েছে। দাম বৃদ্ধির জন্য করা হয়নি। বর্তমানে লোকসান দিয়ে পামওয়েল বিক্রি করতে হচ্ছে।

অপরদিকে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়াধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের খুলনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শিকদার শাহীনুর আলমের নেতৃত্বে তদারকিমূলক অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে খুলনা মহানগরের সোনাডাঙ্গা থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় বোতলজাত সয়াবিন তেল নির্ধারিত মূল্যের অধিক মূল্যে বিক্রির দায়ে মা টেলিকমকে ১০ হাজার টাকা, মায়ের দোকানকে ৫ হাজার টাকা এবং নয়ন স্টোরকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সাথে উদ্ধারকৃত তেল নিধারিত দামে জনসাধারণের কাছে বিক্রয়ের আদেশ দেয়া হয়।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের খুলনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শিকদার শাহীনুর আলম বলেন, এ অভিযানে সকলকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অনুসারে ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্যাবলী হতে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়। এছাড়া ব্যবসায়িদের ক্রয়/বিক্রয় রশিদ সংরক্ষণ, মূল্য তালিকা প্রদর্শন করতে অনুরোধ জানানো হয় এবং সচেতন করতে লিফলেট বিতরণ করা হয়।

 
Electronic Paper