ঢাকা, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩ | ১৯ আশ্বিন ১৪৩০

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রেমিট্যান্স ব্যবস্থাপনায় মনোযোগ দিতে হবে

ড. তাসনিম সিদ্দিকী
🕐 ১২:৫২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২১

রেমিট্যান্স ব্যবস্থাপনায় মনোযোগ দিতে হবে

পথটা হলো আমাদের বলতে হবে টাকা দিয়ে ভিসা কিনে লোক পাঠানোর দরকার নেই। বলতে হবে টাকা দিয়ে ভিসা কেনাবেচা বেআইনি, এটা বন্ধ করতে হবে। এটা বন্ধ করার জন্য যেমন দেশের ভেতরে এজেন্সিগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। তেমনি দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক পরিসরে যারা ভিসা বিক্রি করে- কোন কোন দেশের সরকার বা রাজতন্ত্র পর্যন্ত এর সঙ্গে জড়িত।

করোনাকালে রেমিট্যান্স বেড়েছিল। জুলাই আগস্ট দুই মাসে আবার নি¤œমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এটা রেমিট্যান্সের নেতিবাচক দিকের নির্দেশনা?
এই রেমিট্যান্স ছিল একটি অস্বাভাকি সময়ের কোভিড-১৯ এর সময়ে কালের রেমিট্যান্স। এ সময়ে যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে তা করোনাকালের জন্যই হয়েছে। হুন্ডি বাজারে চাহিদা ছিল না আবার ইনভয়েজিং ছিল না, অভার ভয়েজিংয়ের দরকার ছিল না, সোনা চোরাচালানের জন্য হুন্ডির দরকার ছিল না। যার ফলে ফর্মাল চ্যানেলে টাকা এসেছে। আর একটি বিষয় ছিল করোনাকালে অনেক লোক এক সঙ্গে চলে এসেছিল। এবং যতদূর সম্ভব রেমিট্যান্স নিয়ে এসেছিল। সেই সঙ্গে দেশে ইনসেনটিভের বিষয়টিও ছিল। ফলে করোনা কালে অস্বাভাবিক একটি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

তখন আমরা বলেছিলাম যখন গ্লোবাল মার্কেট খুলবে, আবার হুন্ডির মার্কেট খুলবে, মাইগ্রেশন একটু একুট করে শুরু হবে, তখন যখন ভিসা কেনা শুরু হবে। তখন আবার ডলারের দরকার হবে। আর তখনই হুন্ডি মার্কেট চাঙ্গা হবে। এটা রেমিট্যান্সের সেই টাকাটা যা হুন্ডি হয়।

আবার যখন লোক যাওয়া শুরু করবে তখন রেমিট্যান্স কমবে। সেটা কিন্তু আগস্ট মাসে থেকে শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে রেমিট্যান্স কমা শুরু রেছে। এ ধারাই অব্যাহত থাকবে।

এটা থামানোর কী কোনো পথ খোলা আছে?
অবশ্যই। অবশ্যই পথ আছে। আমরা টাকা পাচ্ছি সেটাকে গুরুত্বসহকারে দেখছি কিন্তু রেমিট্যান্স ব্যবস্থাপনাকে সেভাবে দেখা হচ্ছে না। হুন্ডিকে বন্ধ করা ও ট্যাক্সেশন নীতি বদল করতে হবে।

তারপর টাকা দিয়ে ভিসা কিনতে হয়-এ ব্যবস্থাটাকে বদল করতে হবে। এসব জায়গায় আমরা কাজ করি না। এগুলো আমরা করি না বলে আমরা রেমিট্যান্স ব্যবস্থাপনায় একটি টেকসই একটি ব্যবস্থা গড়তে পারি না। এ কারণে করোনাকালের অস্বাভাবিক অবস্থাতে বেশি করোনা এলেও এ সুবিধা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। কারোনার পর আবার কমে যাচ্ছে। আমাদের প্রায়োক্টিভ করতে হবে।

এটা করার পথটি কী?
পথটা হলো আমাদের বলতে হবে টাকা দিয়ে ভিসা কিনে লোক পাঠানোর দরকার নেই। বলতে হবে টাকা দিয়ে ভিসা কেনাবেচা বেআইনি, এটা বন্ধ করতে হবে। এটা বন্ধ করার জন্য যেমন দেশের ভেতরে এজেন্সিগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। তেমনি দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক পরিসরে যারা ভিসা বিক্রি করে- কোন কোন দেশের সরকার বা রাজতন্ত্র পর্যন্ত এর সঙ্গে জড়িত।

সৌদি আরবের মতো দেশে ভিসার ৭০ ভাগ পর্যন্ত আন্ডার গ্রাউন্ড কেনাবেচা হয়। এর বিরুদ্ধে গ্লোবাল মুভমেন্ট গড়ে তুলতে হবে। বলতে হবে তোমরা চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা বানাও-এটা বেআইনি, এটা বন্ধ করতে হবে। ভিসাপ্রতি ৫০০০ ডলার পর্যন্ত নেওয়া হয়। বৈশি^কভাবে এটা আলোচনায় আনতে হবে। এটা বিভিন্ন ফোরামে তুলতে হবে।

রিক্রুটিং এজেন্টগুলোকে সংযত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো এটা করে। কারণ তারা টপ লেবেলে কানেকশন থাকে। আমাদের মন্ত্রণালয় এদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। কারণ মন্ত্রণালয়ে যারা রুল করে তাদের চেয়ে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর অনেক বেশি শক্তি। সে কারণে তারা যে কাজগুলো করছে তাদের থামানো যাচ্ছে না। আর এ কারণে প্রবাসী আয় ব্যবস্থাপনা বলি বা কোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে প্রবাসীদের জন্য ভালো কোনো উদ্যোগ নেওয়া বলি তা করা যাচ্ছে না।

 
Electronic Paper