ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দৈনিক খোলা কাগজের মুখোমুখি

ভুল সিদ্ধান্তে শ্রমিকরা ফুঁসে উঠতে পারে

সাজেদ রোমেল
🕐 ১:০১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ০২, ২০২১

ভুল সিদ্ধান্তে শ্রমিকরা ফুঁসে উঠতে পারে

করোনাকালে বন্ধ সব ধরনের গণপরিবহন। নেই আয়-রোজগার। চলছে না সংসার। করছেন মানবেতর জীবন-যাপন। এ অবস্থায় দৈনিক খোলা কাগজের সঙ্গে শ্রমিকদের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাজেদ রোমেল

খোলা কাগজ: স্বল্পসময়ের জন্য গণপরিহন চলছে, এটা বেকার পরিবহন শ্রমিকদের জন্য কিছুটা স্বস্তির বলে মনে করেন কি?

ওসমান আলী: এটা তামাশা ছাড়া কিছুই না। পরিবহন সেক্টর নিয়ে সরকারের একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত পুরো সেক্টরটাকে অস্থির করে তুলছে। সরকার বলল, দিনের ১২ পর্যন্ত বাস চলবে। কিন্তু কুড়িগ্রাম থেকে যে বাসটি ভোরে ছেড়ে আসবে সেটি এসময়ে এসে পৌঁছাতে রাত ১২টা বাজবে। তাহলে এ ধরনের সিদ্ধান্ত সরকার কাদের নিয়ে দিল। সরকার পরিবহন সেক্টরটার সঙ্গে এমন আচরণ করছে-যেন আমরা সৎ মায়ের সন্তান।

খোলা কাগজ: কিন্তু বাস বন্ধ থাকলেও তো ট্রাকে করে পোশাকশ্রমিকরা গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে। ট্রাকের মালিকরাও দ্বিগুণ তিনগুণ লাভ করছে, শ্রমিকরাও কর্মহীন নন।

ওসমান আলী: ট্রাকে করে যাত্রী পরিবহন করোনা ছড়ানোতে বড় ভূমিকা রাখছে। কারণ ট্রাকে একজন যাত্রীর করোনা থাকলে বাকি ১০০ যাত্রী আক্রান্ত হচ্ছে। শত শত ট্রাক চলছে করোনা ছড়াতে ছড়াতে। এটা অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার। পুলিশের তৎপর হওয়া দরকার।

খোলা কাগজ: একদিকে করোনার মহামারী সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে, অন্যদিকে শ্রমজীবী মানুষের আয়-রোজগারের সমস্যার কথা শোনা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আপনারা সমাধান কোনদিকে দেখেন?

ওসমান আলী: আমাদের দাবি, হয় সরকারকে পরিবহন শ্রমিকদের সাহায্য সহযোগিতা করতে হবে, ১০ টাকা কেজিতে ওএমএসের চাল দিতে হবে, নগদ অর্থ দিতে হবে, নয়তো স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালানোর অনুমতি দিতে হবে।

খোলা কাগজ: পরিবহন সেক্টরে সরকারি কোনো সাহায্য দেওয়া হয়নি?

ওসমান আলী: আমরা সরকারকে ৩৫ লাখ শ্রমিকের তালিকা দিয়েছিলাম। সরকার এক লাখ ৪৫ হাজার শ্রমিককে আড়াই হাজার করে টাকা দিয়েছে। এটাও আরেকটা তামাশা। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও কিছু সাহায্য দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আমাদের কথা হচ্ছে, হয় হতদরিদ্র শ্রমিকদের সরকার সাহায্য সহযোগিতা করুক, নয়তো স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালানোর অনুমতি দিক।

খোলা কাগজ: পরিবহন শ্রমিক নেতা শাজাহান খান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। আপনারা কি শ্রমিকদের দাবি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে কথা বলেছেন?

ওসমান আলী: আমরা দেন-দরবার করছি, তবে অনেকে সুশীল সমাজের ভূমিকায় নেমে শ্রমিকদের অধিকারের কথাটা ভুলে যায়। সবাই ইলিয়াস কাঞ্চন হয়ে যায়।

খোলা কাগজ: এ অবস্থায় লকডাউন বাড়লে, গণপরিবহন বন্ধ থাকলে আপনার ফেডারেশনের পক্ষ থেকে কী করবেন?

ওসমান আলী: সাধারণ পরিবহন শ্রমিকরা খুবই কষ্টে আছে, অথচ এরাই এই সরকারের বিএনপি জোটের আন্দোললনের সময় সড়ক সচল রেখে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিল। ৯৬ জন শ্রমিক প্রাণ দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য থেকে দেশ ও সরকারকে রক্ষা করেছিল। এখন এই শ্রমিক অসহায় হয়ে বউ-বাচ্চাকে ক্ষুধার্ত দেখে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। যে কোনো সময় পরিবহন শ্রমিকরা ফুঁসে উঠতে পারে। এর দায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন নেবে না।

 
Electronic Paper