ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ক থা সা মা ন্য

যোগ্যরাই টিকে থাকে

সাজ্জাদ হোসেন
🕐 ২:১২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০৩, ২০১৯

বাংলা নাটকের তারকা অভিনেতা তমাল মাহবুব নিজের অভিনয় ও বাংলা নাটকের বৃত্তান্ত নিয়ে বলেছেন সাজ্জাদ হোসেনকে। চুম্বক অংশ খোলা কাগজের পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো...

অভিনয়ের আগের জীবনের কিছু কথা যদি আমাদের বলতেন...
আমার পৈতৃক নিবাস নরসিংদীতে কিন্তু আমি জন্মের পর থেকেই পুরান ঢাকার আজিমপুরে বেড়ে উঠেছি। আর পড়াশোনার জন্য কিছু সময় রাজশাহীতে কাটিয়েছি। আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে এমএসসি করি ২০০৪ সালে। তারপর প্রাথমিক জীবনে কিছুদিন একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষকতা করেছি, তারপর কিছুদিন বাবার ব্যবসা সামলিয়েছি। ২০০৬-এর শেষের দিকে আমি মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত হই।

অভিনয়ের শুরুটা কীভাবে?
পড়াশোনা শেষ করে আবার যখন ঢাকায় ফিরে এলাম তখন শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে ফারুকি ভাই, রেদওয়ান রনি ভাই, রুমেল ভাইদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হতো। ২০০৬ সালে আমি এই তিনজন গুণী অভিনেতার নাটকে কাজ করার মাধ্যমে ক্যারিয়ারের সূচনা। প্রথম কাজ ছিল ফারুকী ভাইয়ের রাজনৈতিক অসংগতি নিয়ে করা ধারাবাহিক ৪২০-এর মাধ্যমে। নাটকটিতে মোশাররফ করিমও অভিনয় করেছেন। নাটকটি সেসময় বেশ জনপ্রিয়তা পায়। সেসময় রেদওয়ান রনি ভাই ও রুমেল ভাইয়ের দুটি নাটকে কাজ করি।

দীর্ঘ এক যুগ বাংলা নাটকের সঙ্গে আছেন, বাংলা নাটকের মান নিয়ে যদি কিছু বলতেন...
প্রথমেই আমি বলতে চাই, বাংলা নাটকের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের স্যালুট জানানো উচিত। আমাদের দেশের একটি নাটকে যে সামান্য বাজেট থাকে এই স্বল্প বাজেটের মধ্যেও পরিচালক, কলা-কুশলী, শিল্পীরা যেভাবে খেয়ে না খেয়ে শুধু নাটককে ভালোবেসে অভিনয় করছেন, তাতে তারা শ্রদ্ধা পাওয়ার যোগ্য এবং আমি মনে করি আমাদের দেশের নাটক বিশ্বমানের। আমাদের বাজেটের ঘাটতি, অভাব অনটনের কোনো প্রভাব কিন্তু পড়েনি আমাদের নাটকের মানের ক্ষেত্রে। এখনো উপমহাদেশের নাটকের মধ্যে বাংলাদেশের নাটক সেরা বলেই আমি মনে করি।

বর্তমানে কী কাজ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন?
বর্তমানে বেশ কয়েকটা ধারাবাহিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছি। এশিয়ান টিভিতে আমার একটা ধারাবাহিক যাচ্ছে আস্ত পাগল শিরোনামে, এছাড়া বৈশাখী টেলিভিশনে চাপাবাজ, বাংলাভিশনে পাগলা হাওয়া নামের দুটি ধারাবাহিক প্রচারিত হচ্ছে।

ভারতের টিভি সিরিয়ালের কাছে বাংলা সিরিয়াল মার খাচ্ছে, কারণ কী?
ভারতীয় সিরিয়ালের কাছে বাংলা সিরিয়াল মার খাচ্ছে এটা সঠিক নয়। আপনি যদি লক্ষ করেন তাহলে দেখবেন তারা একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে টার্গেট করে সিরিয়াল বানায়। হয়তো কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা সফল হচ্ছেও। কিন্তু এটাকে আমি নিচু শ্রেণির কাজ বলেই মনে করি। তাছাড়া ধারাবাহিকগুলো কম আলোচনায় আসার পেছনে আমাদের দেশে টিভি চ্যানেলের সংখ্যার আধিক্য আরেকটি কারণ। আমাদের মতো ছোট একটি দেশে ৪০টির মতো চ্যানেল। তাই একজন রিমোর্ট চেপে কোন চ্যানেল দেখবেন কিংবা কোন ধারাবাহিকটা দেখবেন সেটা ঠিক করে উঠতে পারেন না। কিন্তু ভারতে সেটি নেই।

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
বর্তমানে অভিনয়ের পাশাপাশি ইউটিউবের জন্য কিছু শর্টফিল্প তৈরি করছি। তাই সামনে নিজেকে একজন নির্মাতা হিসেবে দেখতে চাই। তবে সেটা হুট করে নয়। আপাতত অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত আছি সেটা চলমান রাখতে চাই। তবে ইউটিউবের জন্য শর্টফিল্ম বানানো অব্যাহত রাখব।

নতুন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে অনলাইন স্ট্রিমিং, ওয়েব সিরিজ কীভাবে দেখছেন?
মিডিয়ার ধর্মই পরিবর্তনশীলতা। প্রত্যেক ৫/৬ বছর পর পর মডিয়ায় একটি করে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। আমি মনে করি সামনে যে পরিবর্তনটা আসবে সেটা ইউটিব কেন্দ্রিক আসবে কিংবা অনলাইন স্ট্রিমিং কেন্দ্রিক হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

ওয়েব সিরিজ বা বাংলা চ্যানেলগুলোর ক্ষেত্রে কোনো ক্ষতির কারণ হবে কী?
আমি তেমনটি মনে করি না। অনলাইন পত্রিকার যুগে যেমন ভালো প্রিন্ট মিডিয়া টিকে আছে, তেমনি অনলাইন স্ট্রিমিংয়ের যুগেও ভালো কাজ, মানসম্মত চ্যানেল টিকে থাকবে। আসল কথা হলো, শেষ পর্যন্ত যোগ্যরাই টিকে থাকে।

 
Electronic Paper