বাংলা সিনেমা আবারও তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে
সাজ্জাদ হোসেন
🕐 ২:০৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০১৯
বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক জয় চৌধুরী নিজের কাজের ব্যস্ততা ও বাংলা সিনেমার সমস্যা সম্ভাবনা বিষয়ে কথা বলেছেন সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে। খোলা কাগজের পাঠকের উদ্দেশ্যে এর অংশবিশেষ তুলে ধরা হলো।
আপনার পড়াশুনা ও বেড়ে ওঠা কোথায়?
আমার জন্ম মাগুরায়, শৈশব ও কৈশোর মাগুরায় কেটেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছি মাগুরা থেকেই। তারপর ঢাকায় আসি এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে এম বিএ করি।
সিনেমায় এলেন কীভাবে?
মনোয়ার হোসেন ডিপজল সম্পর্কে আমার চাচ্চু হন, ওনার হাত ধরেই আমার চলচ্চিত্রে পদার্পণ। উনি আমাকে সিনেমা করার ব্যাপারে অনেক উৎসাহ জুগিয়েছেন। আমার প্রথম সিনেমা করা হয়েছে এফ আই মানিকের এক জবান। সিনেমাটিতে আমার সহশিল্পী ছিলেন নায়িকা রেসি। ডিপজল চাচ্চু সেখানে অভিনয় করেছেন।
এখন পর্যন্ত কয়টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে?
এ পর্যন্ত আমার অভিনীত সাতটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। সেগুলো হচ্ছে এফ আই মানিক পরিচালিত এক জবান, খোকন রেজভীর ভালোবাসলে দোষ কি তাতে, পরিচালক ওয়াজেদ আলী সুমনের আজব প্রেম, তারপর হিটম্যান নামের একটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, পরিচালক ছিলেন ওয়াজেদ আলি সুমন। গুণী চলচ্চিত্র নির্মাতা নজরুল ইসলাম বাবুর চিনি বিবি, আবুল কাসেম মণ্ডলের ক্ষণিকের ভালোবাসা এবং সর্বশেষ গত বছর মুক্তি পায় আলোচিত সিনেমা মালেক আফসারীর অন্তর জ্বালা।
বাংলা সিনেমায় আপনার আদর্শ কে?
আসলে আমি যাদের অনুসরণ করি তাদের মধ্যে রয়েছেন ফারুক স্যার, আলমগীর স্যার, সালমান শাহ ভাই। তাদের অভিনয়, পার্সোনালিটি আমাকে আকৃষ্ট করত। তাই বলা চলে, ওনারাই আমার আদর্শ।
বর্তমান সিনেমায় অভিনয়ের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন?
সিনেমায় আসতে হলে ফাইটিং জানতে হবে, ভালো ড্যান্স পারতে হবে আর অবশ্যই অভিনয়ে পারদর্শী হওয়াটা জরুরি।
বাংলা সিনেমার বিষয়ে আপনার আশাবাদ কেমন?
আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমান সরকার বাংলা চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য অনেক পরিকল্পনা নিয়েছেন এবং পদক্ষেপ নিয়েছেন ইতোমধ্যে এটা সফল হবে আসা করছি এবং খুব অচিরেই এই ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়াবে বলেই আশা করি।
বিদেশি সিনেমা হলে মুক্তির ব্যাপারে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির যে দাবি সেটা কতখানি যৌক্তিক মনে করেন?
বাইরের দেশের সিনেমা এনে ইন্ডাস্ট্রি বাঁচানোর কোনো সৎ উদ্দেশ্য দেখি না। আমার মার যদি চোখে প্রবলেম হয় তার মানে এই নয়, আরেকজনের মাকে মা ডাকতে হবে এমন যুক্তি আমি সঠিক মনে করি না। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচানোর দায়িত্ব আমাদেরই। বাইরে থেকে ভাড়া করে সিনেমা এনে দেশীয় সিনেমা বাঁচানো এটা একটা ভ্রান্ত ধারণা। আমাদের দেশেই ভালো সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে। শুধু সিনেমা হলের পরিবেশ ঠিক করতে হবে আর ডবলি সাউন্ডসহ ই-টিকিটিংয়ের সিস্টেম চালু করতে পারলে প্রযোজকরা তাদের লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত পাবে এবং দর্শক হলমুখী হবেন বলে মনে করি।
বর্তমান কী কী কাজ করছেন?
বর্তমানে বেশ কিছু সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে সেগুলো হলো কাজল কুমার বর্ধণের অবাস্তব ভালবাসা, এ কিউ খোকনের ভালোবাসি কতো বোঝাবো কেমনে, এ ছাড়া কাকতারুয়া নামের একটি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় আছে এটি পরিচালনা করেছেন ফারুক হোসেন। তারপর মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের আনন্দ অশ্রু। নতুন কিছু সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছি একটি ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনায় সিনেমার সিনেমা হ্যালো, পরিচালনা করছেন মালেক আফসারী। এ ছাড়া দোস্ত দুশমন এবং রিতুব্রত ভট্টাচার্যের জিরো পয়েন্ট নামের আরও দুটি যৌথ সিনেমার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।
দর্শকদের উদ্দেশে কিছু বলুন...
আমার মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার সংখ্যা সবে সাতটি। প্রতিটি সিনেমা মুক্তির পর অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। তাই সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। দর্শকদের বলব, বাংলা চলচ্চিত্র আমাদের জাতীয় সম্পদ, একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এই সম্পদকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার, আপনারা অবশ্যই অবসর সময়ে হলে গিয়ে সিনেমা দেখবেন। আপনাদের ভালোলাগা-মন্দলাগা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করবেন, তাহলে হয়তো পরবর্তী সময়ে আরও ভালো কাজ দিতে পারব। বাংলা সিনেমা আবারও তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে। আপনাদের দোয়া এবং ভালোবাসা আমার প্রধান অনুপ্রেরণা। আপনাদের ভালোবাসা নিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে চাই।