ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দর্শকদের ভালোবাসার চেয়ে বড় অর্জন কিছু নেই

সাজ্জাদ হোসেন
🕐 ৩:২৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ২০, ২০১৯

জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী সাবিলা নূর নিজের সফলতার রহস্য ও মিডিয়ার সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে। কথোপকথনের চুম্বক অংশ খোলা কাগজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

বর্তমান সময়ের টিভি নাটকে জনপ্রিয় তারকা আপনি, তারকাখ্যাতি কেমন উপভোগ করছেন?
যখন বুঝতে পারি দর্শকরা আমাকে ভালোবাসছেন, আমার কাজকে অ্যাপ্রিসিয়েট করছেন, তখন অনেক রোমাঞ্চকর অনুভূতি হয়। দর্শকদের এই ভালোবাসা অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে। দর্শকদের ভালোবাসার চেয়ে একজন অভিনয়শিল্পীর আর কোনো বড় অর্জন থাকতে পারে না।

এই জনপ্রিয়তার কারণ হিসেবে কোন জিনিসটিকে এগিয়ে রাখবেন?
প্রথমত বলবো পরিশ্রম। সফল হতে হলে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। আপনি যাদের সফল হতে দেখছেন তাদের সবাই কিন্তু অনেক পরিশ্রম করেছে, করছে। পরিশ্রমের বাইরে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে সবসময় কাজ করেছি। আমার এই জনপ্রিয়তার ক্ষেত্রে ভালো ভূমিকা রেখেছে আমার বাবা-মার সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণা। সেই সঙ্গে পরিচালকদের, দর্শকদের চাহিদার কথা চিন্তা করে কাজ করে গেছি, তাদের আস্থা অর্জনের দিকে খেয়াল রেখেছি। এভাবেই সবার কাছে একটা গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছি বলে মনে করি।

বর্তমানে কী কী কাজ করছেন?
সামনে পহেলা বৈশাখ ও ঈদকে সামনে রেখে বেশকিছু একক নাটকে কাজ করছি। সেই সঙ্গে মডেলিং তো করছিই। তবে মিডিয়ার কাজের বাইরে পড়াশোনার দিকে মনোযোগ দিয়েছি।

হঠাৎ পড়াশোনায় একটু বেশিই মনোযোগী মনে হচ্ছে, অভিনয়ের বাইরে কোনো প্রফেশনের চিন্তা করছেন কি?
না সেরকম কিছু না। ছোটবেলা থেকেই আমার বাবার ইচ্ছে ছিল তার মেয়ে ভালো ফলাফল করবে। ছাত্রী হিসেবে ছোটবেলা থেকেই বাবাকে ভালো ফলাফল উপহার দিতে পেরেছি। কিন্তু কিছুদিন থেকে অভিনয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ায় পড়াশোনার দিকে মোটেই খেয়াল রাখতে পারিনি। তাছাড়া ২০১৭ সালে প্রায় সাত মাস দেশের বাইরে ছিলাম, এই সাত মাসে আমার পড়াশোনার ক্ষেত্রে একটা লম্বা বিরতি পড়েছে। আর মাত্র এক থেকে দেড় বছরের মধ্যেই আমার গ্রাজুয়েশন শেষ হবে। তাই এই সময়টিতে পড়াশোনায় আর কোনো বিরতি দিতে চাই না। ভালো সিজিপিএসহ গ্রাজুয়েশন শেষ করতে চাই। আর অন্য প্রফেশনের চিন্তা আপাতত করার সুযোগ নেই, তবে আমি যদি অভিনেত্রী না হতাম তাহলে সম্ভবত শিক্ষক হতাম। শিক্ষকতার প্রতি আমার একটা দুর্বলতা অনেক দিনের। ভবিষ্যতে শিক্ষকতা করার ইচ্ছে আছে।

ধারাবাহিক নাটকে আপনাকে দেখা যাচ্ছে না, কারণ কী?
ধারাবাহিকে এই মুহূর্তে কাজ করছি না, কারণ এই মুহূর্তে একক নাটকে মনোযোগ দিতে চাচ্ছি। তাছাড়া নিয়মিত ক্লাসের পর আর ধারাবাহিকে কাজ করার সময় কই বলেন? ধারাবাহিক নাটকে দীর্ঘসময় ধরে কাজ করতে হয়, পরিচালকদের একটা লম্বা সময় ধরে সময় দিতে হয়। আগে কিছু ধারাবাহিক করেছি, তখন অনেক একক নাটক ছেড়ে দিতে হয়েছে। সত্যি বলতে একক নাটকে কাজ করতে আমার ভালো লাগে এবং আমি একক নাটকের মাধ্যমেই জনপ্রিয় হয়েছি তাই আপাতত একক নাটকের বাইরে কোনো কাজ করছি না।

সিনেমা কিংবা ওয়েব সিরিজ করছেন কি?
একটি ওয়েবসিরিজে কাজ করেছি। ‘ওয়েডিং বেলস’ শিরোনামের সিরিজটি বঙ্গতে সম্প্রচারিত হচ্ছে। তবে এই মুহূর্তে সিনেমার কাজ করার কোনো ইচ্ছে নেই। আবারো সেই একই কারণ পড়াশোনা আর একক নাটকের কাজের জন্য দীর্ঘ কোনো কাজের জন্য সময় বের করাটা এই মুহূর্তে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে ভালো ওয়েব ফিল্মে কাজ করার ইচ্ছে আছে।

ভালোবাসা দিবসে আপনার পর্ব নাটক ‘ছন্দ ছাড়া গান’ একসঙ্গে ১২টি চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে, যাযাবর পাখনা গানটি আপনার খুবই দর্শক নন্দিত হয়েছে, গান আর গাইলেন না কেন?
হ্যাঁ, গত ঈদে তো শহরে নতুন গান নামে একটা নাটকও প্রচারিত হয়েছে। কিন্তু সত্যিই বলতে আমি ভালো গান গাইতে পারি না। আমার প্রথম গান যাযাবর পাখনা ছিল মাংকি বিজনেস নামের একটি নাটকের জন্য গেয়েছিলাম। পরিচালক রাহাত ভাই মজা করে বললেন গান গাইতে, আমিও মজা করে বললাম একটা পরীক্ষা চালানো যেতে পারে। গানটি এতো জনপ্রিয় হবে ভাবিনি। পরে আর গান গাওয়া হয়নি, তবে নুহাশ হুমায়ূনের পরিচালনায় ৭০০ টাকা নামের একটি শর্ট ফিল্মে একটা র‌্যাপ গেয়েছি।

একজন সফল অভিনেত্রী হিসেবে নতুনদের ভালো করার ক্ষেত্রে পরামর্শ কী থাকবে?
আমি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলি, আমার বয়স যখন তিন থেকে সাড়ে তিন বছর তখন থেকে বুলবুল ললিতাকলা একাডেমি থেকে নাচ শিখেছি, আমি যখন পদ্ম কুড়ি চ্যাম্পিয়ন হই যখন প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিলাম । পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় আমি নাচের ওপর ডিপ্লোমা করি। অভিনয় নাচের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত না হলেও ইক্সপ্রেশনের ক্ষেত্রে নাচের প্রাকটিস থাকলে সহায়ক ভূমিকা পালন করে বলে মনে করি। আর আমি নিজে থিয়েটার করে আসিনি কিন্তু থিয়েটার করে আসতে পারলে ভালো হতো বলে মনে করি। আর এর সঙ্গে মিডিয়ায় ভালো করার ক্ষেত্রে পাঙ্কচুয়ালিটি থাকতে হবে, আর সময়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।

দর্শকের উদ্দেশে কিছু বলুন 
আপনারা যেভাবে আমাকে সাপোর্ট করে গেছেন, ভালোবাসা দিয়েছেন তাতে আমি মুগ্ধ, কৃতজ্ঞ। আশা করি আগামী দিনগুলোতেও আপনারা আমাকে সাপোর্ট দিয়ে যাবেন। সেই সঙ্গে সবাইকে বাংলা নাটক দেখার জন্য অনুরোধ রইল।

 
Electronic Paper