ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আমি সব সময় হ্যাপি

তৌফিকুল ইসলাম
🕐 ২:৩৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯

জিয়াউল ফারুক অপূর্ব বর্তমান ব্যস্ততা ও বাংলা নাটকের মান নিয়ে কথা বলেছেন তৌফিকুল ইসলামের সঙ্গে।

আপনার অনেক নাটক সম্প্রতি প্রচার হয়েছে। বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে বলুন...
বর্তমান সময়ের ব্যস্ততা আসলে নাটক নিয়েই, এ ছাড়া আর কোনো ব্যস্ততা নেই। সামনে তো পহেলা বৈশাখ। এ উপলক্ষে কিছু নাটক করা হবে। পহেলা বৈশাখের পরপরই ঈদের কাজ শুরু হয়ে যাবে। এই তো পহেলা বৈশাখ, ঈদ শেষ হওয়ার পর কোরবানির ঈদ। এভাবে করেই হবে আর কি বিষয়টা। এখন একটার পর একটা প্রোজেক্টের কাজ করা হবে।

এখন তো নাটকের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। নাটকের মান কি ঠিক থাকছে বলে মনে হয় আপনার কাছে?
হ্যাঁ, এটা অবশ্য একটা কথা। নাটকের মানটা নেমে যাওয়ার একটা আশঙ্কা আছে। প্রচুর কাজ হচ্ছে এখন, একটা জিনিস হচ্ছে আসলে নাটকের মানের প্রসঙ্গ যখন আসে। যে নাটকগুলো ভালো করবে, সে নাটকগুলোই দর্শক দেখবে। সব নাটককে মানসম্পন্ন করা আমার মতে অসম্ভব। সো, কিছু মানহীন নাটক হবে ও কিছু মানসম্পন্ন নাটকও হবে। সবকিছু মিলিয়ে হবে, এটা নিয়ে সত্যিকার অর্থে বলার কিছু নেই। কারণ, একটা ক্লাসে যদি ১০০ জন স্টুডেন্ট থাকে ফার্স্ট বয়সহ প্রথম ১০ জন তো থাকে কেউ না কেউ। বাকিরা যদি ভালো করার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের রোল এগিয়ে আসবে এটাই স্বাভাবিক।

অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নাটকের সংখ্যা বাড়ছে, টিভির দর্শক কমে যাচ্ছে শোনা যাচ্ছে। এটা কীভাবে দেখছেন?
এটা আসলে প্রযুক্তির বিষয়, একটা সময় নাটক টিভিতে চলে এলো। একেকটা প্রযুক্তি তার আগের প্রযুক্তির বিকাশ ঘটায়। এখন অনলাইনের যুগ, অনলাইনে প্রচুর ইউজার আছে। সেখানে প্রচুর নাটক যাচ্ছে এখন। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো আবার নতুন টেকনোলজি আসবে। তখন সে প্ল্যাটফর্মেই নাটক বেশি যাবে। বিষয়টা এরকমই, প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়েই চলতে হবে।

আপনার উত্থান থেকে দীর্ঘদিনের পথচলায় বর্তমান অবস্থান নিয়ে আপনি কি সন্তুষ্ট?
আমার পথচলা নিয়ে আমি সবসময়ই হ্যাপি। যারা রিগ্রেট করে আমি আসলে সে দলের না। সত্যি কথা আমি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি এবং এখনো পাচ্ছি, এটাই আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমার এ দীর্ঘ পথচলায় কোনো অতৃপ্তি কাজ করে না। আমি আমার জায়গা থেকে কাজ নিয়ে যথেষ্ট সন্তুষ্ট। এটা আল্লাহর রহমত, অনেক মানুষের ভালোবাসা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।

বাংলা নাটকের আরও উন্নতির জন্য কি করা উচিত বলে আপনি মনে করেন?
একটা সময় দেখা যেত, আমাদের নাটকের গল্পের লিমিটেশন আছে। এখানে গল্পের লিমিটেশনের ক্ষেত্রে শুধু যে ডিরেক্টরের তা না, দর্শকেরও লিমিটেশন আছে। নাটকের গল্পের শাখা-প্রশাখাগুলো খোলাটা আসলে খুব ডিফিকাল্ট হয়ে যায়। যে কোনো কনটেম্পোরারি ইস্যু নিয়ে নাটক করতে গেলে সেটা আসলে সমালোচনার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। যার কারণে আমরা আসলে ওই ধরনের, পাশের দেশ ইন্ডিয়াতে যদি দেখেন। যে কোনো কিছু একটা হলেই কিন্তু নাটক ও সিনেমা বানিয়ে ফেলে।

আমাদের দেশে নাটকের কাহিনী প্রসঙ্গে...
যেমন ডাক্তারদের ক্ষেত্রে সবাই যে ভালো ডাক্তার তা নয়, ভুল চিকিৎসায় অনেকেই মারা যায়। এখন যদি আমরা এটা নাটকে দেখাতে চাই, তাহলে অনেক সমালোচনার সৃষ্টি হবে। তাই এসব জায়গায় কেউ জড়াতে চায় না।
আইন সংস্থাগুলোতে ভালো মানুষ যেমন আছে, খারাপ মানুষও আছে। এসব খুব সেনসেটিভ বিষয়। এসব বিষয়কে ইস্যু হিসেবে কাউন্ট করা হয়, তাই গা বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা করে সবাই। ডিরেক্টর ভয় পান, পরে যদি আমরা কোনো ঝামেলায় পড়ে যাই। এসব কারণে সেনসেটিভ ইস্যুতে কেউ যাওয়ার চিন্তাও করে না।

পরিবর্তনের জায়গাটা...
এগুলো আস্তে আস্তে পরিবর্তন হবে বলে আমার মনে হয়। মানসম্মত নাটকের মধ্যে এখন আমাদের শুধু থাকে কমেডি নাটক, রোমান্টিক নাটক, সিজনাল নাটক, মনস্তাত্ত্বিক নাটক কিছু হয়। কয়েকটা জায়গার মধ্যে এখন আমাদের নাটক সীমাবদ্ধ। আরও অনেক কিছু দেখাতে গেলে আসলে আরেকটু সময় লাগবে। ডিরেক্টরদেরও এগুলো বুঝতে হবে। সামনে হবে, আস্তে আস্তে হবে। কারণ মাঝখানে তো নাটকের অবস্থা খুব খারাপ ছিল, এটা সবাই জানে। তারপর কিন্তু আবার ইতোমধ্যে সোনালি একটা দিন ফিরে এসেছে। আমাদের চেষ্টা করতে হবে ওই জায়গাটা ধরে রাখার। সেটা ডায়ালগে হোক, অ্যাকটিং পারফরম্যান্সে হোক এটা একটু খেয়াল রাখা উচিত বলে আমার মনে হয়। যা তা কাজ করে ফেললাম, এসব ব্যাপারে আরেকটু কনশাস থাকা উচিত।

 

 
Electronic Paper