ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চাই

কামরুল হাসান শাকিম
🕐 ২:২০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৯

সম্প্রতি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষক ড. মো. বেলাল হোসেন নোয়াখালী উপকূল অঞ্চল থেকে নিউমোনিয়া নোবিপ্রবিয়া ও অ্যারেনুরাস স্মিটি নামে দুটি জলজ অমেরুদণ্ডী প্রাণীর সন্ধান দিয়েছেন। বর্তমান কর্মব্যস্ততা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন- কামরুল হাসান শাকিম

 

সম্প্রতি আপনি নতুন দুটি অমেরুদণ্ডী প্রাণীর সন্ধান দিয়েছেন, এ সম্পর্কে কিছু বলেন?

ড. বেলাল: আমি মূলত, কাজ করি অ্যাকুয়েটিক (জলীয়) ইকো সিস্টেম নিয়ে। গত বছরের এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত আমি নোয়াখালীর বিভিন্ন পুকুর, খাল এবং নদী থেকে মাইটসের নমুনা সংগ্রহ করি। এতে আমার সঙ্গী ছিলেন আমারই ছাত্র নোবিপ্রবি মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের মো. সাইফুল ইসলাম। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী থেকে সংগৃহীত নমুনা প্রথমে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবে শনাক্তকরণ করি। পরে ফলাফলের জন্য মধ্য ইউরোপের দেশ মন্টেনিগ্রোতে গবেষক ড. ভ্লাদিমির কাছে পাঠাই। ভ্লাদিমির নমুনা চূড়ান্তভাবে শনাক্ত করেন ও সিদ্ধান্তে উপনীত হন।

এই জলজ প্রাণী দেখতে কেমন?

ড. বেলাল : মাইটস দেখতে কিছুটা মাকড়সার মতো, এরা প্রাণী জগতের আর্থোপোড়া পর্বের একারিয়া বর্গের অন্তর্গত। আমি এবং আমার গবেষক দলের আবিষ্কৃত প্রাণী দুটি ওই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন তাই এরাও আর্থোপোড়া পর্বের একারিয়া বর্গের অন্তর্গত প্রাণী। এদের আকার ২-৩ মিলিমিটার, দেখতে হালকা লাল ও হলুদ বর্ণের হয়। দুটি শুঁড় ছাড়াও এদের চার জোড়া সন্তরণ পা থাকে। এরা সাধারণত পুকুর, নদী বা খালের পানির ওপরে স্তরে ভাসমান উদ্ভিদের সঙ্গে ঝুলে থাকে।

আর কে কে এ গবেষণায় যুক্ত ছিলেন?

ড. বেলাল : আমিসহ আমার সঙ্গে মন্টেনিগ্রোর একারলজিস্ট ড. ভ্লাদিমির, ভারতের টাপাস, নোবিপ্রবির কৃতী ছাত্র মো. সাইফুল ইসলাম এবং পোল্যান্ডের ড. আন্দ্রেজেঝ সহ-গবেষক হিসেবে ছিলেন ।

আপনার বর্তমান সন্ধানকৃত দুটি প্রাণীর মধ্যে একটির নামকরণ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামানুসারে করেছেন এটি কীভাবে সম্ভব হলো?

ড. বেলাল : আমার সহযোগীদের আমি বললাম যেহেতু দুটি প্রাণী, আমি একটির নামকরণ করতে চাই আর আপনারা একটি করেন। তারা রাজি হলো। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি নামের সংক্ষিপ্ত রূপটি সংযুক্ত করলাম কিন্তু উচ্চারণ ভালো লাগছিল না সে জন্য বাংলা নামের সংক্ষিপ্ত রূপটি সংযুক্ত করে দেখলাম ভালো লাগছে। আর এটি নোবিপ্রবির অনুসারে Neumania nobiprobia নামে আত্মপ্রকাশ করল।

শিক্ষার্থীদের মাঝে গবেষণার প্রতি আগ্রহ কেমন?

ড. বেলাল: এটা আসলে নির্ভর করে পরিবেশের ওপর। বাইরের দেশে যা হয় যখন একজন শিক্ষার্থী ১ম বর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় তখন থেকে তাদের গবেষণার প্রতি আগ্রহী করে তোলা হয়, উৎসাহ দেওয়া হয় এবং পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা এরকম সুযোগ-সুবিধা পায় না, আমি মনে করি, আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের ১ম বর্ষ থেকে গবেষণার প্রতি আগ্রহী করে তোলা উচিত।

গবেষণা করতে কোনো বরাদ্দ পেয়েছেন?

ড. বেলাল: না, এ পর্যন্ত যতটুকু গবেষণা করেছি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে
এবং নিজস্ব অর্থায়নে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পৃথিবীর অন্য দেশের
মতো বাংলাদেশেও জীববৈচিত্র্য নিয়ে ব্যাপক আকারে গবেষণা
সম্ভব বলে আমি মনে করি।

 
Electronic Paper