ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সপ্তম দিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
🕐 ১২:৫২ অপরাহ্ণ, মে ১৬, ২০২১

সপ্তম দিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৯

গাজায় ইরায়েলের শতশত বিমান হামলা এবং গোলা নিক্ষেপে গত রোববার (০৯ মে) থেকে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪৯ জন। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরো ৯৫০ জন।

নিহতদের মধ্যে ৪১ জন শিশু। এদিকে, গাজায় হামাস ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এই সংঘাতের উত্তেজনা ছড়িয়েছে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অপর অংশ পশ্চিম তীরেও। সেখানে স্থানীয় ফিলিস্তিনি নাগরিক ও ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যকার সংঘর্ষে শনিবার অন্তত ১৩ জনের।

ফিলিস্তিনের সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। রোববার আল জাজিরা ও বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের দিন শনিবার গাজার আল শাতি শরনার্থী শিবির ইসরায়েলের সেনা বাহিনী বিমান হামলায় গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে হামাস।

শনিবার ভোররাতে গাজার আল শাতি শরনার্থী শিবিরে হামলা চালায় ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। হামলায় ওই শরনার্থী ভবনটি সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।

এদিকে গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। শনিবার (১৫ মে) টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘যতদিন প্রয়োজন ততদিন গাজায় হামলা চলবে এবং যতটা সম্ভব বেসামরিক ব্যক্তিদের হতাহত এড়ানো হবে।’

তিনি বলেন, ‘এই লড়াইয়ের জন্য আমরা দায়ী নই, দায়ী তারাই যারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমরা এই অভিযানের মধ্যবর্তী পর্যায়ে রয়েছি। অভিযান এখনো শেষ হয়নি এবং যতদিন প্রয়োজন ততদিন অভিযান চলবে।’

ইসরায়েল সেনা বাহিনীর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, হামাসের রকেট হামলায় গত এক সপ্তাহে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন মোট ১০ জন, এর মধ্যে শনিবার নিহত হয়েছেন দুই জন। ওই মুখপাত্র আরও জানান, শনিবার দিনজুড়ে তেল আবিব সহ ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় কয়েক শ রকেট ছুঁড়েছে হামাস।

অবশ্য ইসরায়েল সেনাবাহিনীও হাত গুটিয়ে বসে ছিল না। গাজার আল জাজিরা প্রতিনিধি সাফওয়াত আল কাহলোত বলেন, শনিবার পুরো গাজা উপত্যকাজুড়ে ১৫০ দফা গোলাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলো। এর মধ্যে শুধু গাজা শহরেই গোলাবর্ষণ হয়েছে ৬০ দফা।

সাফওয়াত আল কাহলোত আরো জানান, অব্যাহত এই বিমানহামলায় কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজার মূল শহরসহ অধিকাংশ এলাকা। ফিলিস্তিন সরকারের বেশ কয়েকটি উদ্ধারকারী দল সেখানে জীবিতদের উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করছে।

অবৈধ দখলদারিত্বের প্রতিবাদে গত ৯ মে রাতে আল-আকসা মসজিদে শবে কদরের (লায়লাতুল কদর) নামাজ আদায় শেষে মসজিদ চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন সেখানে উপস্থিত ফিলিস্তিনি মুসল্লিরা। স্বাভাবিকভাবেই তা দমাতে তৎপর হয়ে ওঠে ইসরায়েলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ সময় বিক্ষোভকারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যকার সংঘাতে আহত হন অন্তত ৯০ জন ফিলিস্তিনি। সংঘাতের পর থেকে আল-আকসা মসজিদ ও এর সংলগ্ন এলাকা ঘিরে রেখেছিল ইসরায়েলি পুলিশ।

এর জেরে ফিলিস্তিনের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল হামাস হুমকি দেয় ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন সরকারকে। হামাসের পক্ষ থেকে আল্টিমেটাম দিয়ে বলা হয়, ১০ মে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে মসজিদ চত্বর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার না করা হলে তার পরিণতির জন্য ইসরায়েল সরকার দায়ী থাকবে।

এদিকে, হামাস রকেট হামলা শুরু করার অল্প কিছু সময় পর থেকেই গাজায় ফিলিস্তিনি ঘণবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী, যা এখনও চলছে।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৪ সালে গাজায় ইসরায়েলিদের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সাত সপ্তাহের যুদ্ধের পর এবারই সবচেয়ে বড় ধরনের সংঘাত হচ্ছে।

 

 
Electronic Paper