ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দুবাইয়ে পাক-ভারতের ‘গোপন’ বৈঠক

ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৬, ২০২১

দুবাইয়ে পাক-ভারতের ‘গোপন’ বৈঠক

কাশ্মীর নিয়ে বিরোধ মেটানোর লক্ষ্যে গত জানুয়ারিতে দুবাইয়ে গোপন বৈঠক করেছেন ভারত ও পাকিস্তানের শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। গত বুধবার এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স। বার্তা সংস্থাটির দাবি, বৈঠকের বিষয়ে অবগত দিল্লির একাধিক ব্যক্তি তাদের এসব কথা জানিয়েছেন।

খবরে বলা হয়েছে, দুই দেশই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বেশ কয়েক মাস ধরেই তারা এ বিষয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এ বিষয়টি দুই দেশেই তাদের সাধারণ নাগরিকদের লোকচক্ষুর আড়ালেই ঘটাতে চেয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন গরম আবহের মধ্যে দুই দেশের প্রতিনিধিরা সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর জন্য বৈঠকে বসার ব্যাপারটি সমগ্র এশিয়ার জন্য এক দারুণ বার্তা। ধীরে ধীরে যাতে এই দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের উন্নতি হয় সেই নিয়েই দুবাইয়ে এই বৈঠক হয় বলে রয়টার্স জানায়।

২০১৯ সালে কাশ্মীরে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর গাড়িবহরে পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার পর দুই বৈরী প্রতিবেশীর সম্পর্ক আরও খারাপ হতে শুরু করে। গত বছর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করলে তা পাকিস্তানকে আরও ক্ষিপ্ত করে তোলে। এর জেরে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুই দেশের সরকার বিকল্প কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে একটি মাঝারি রোডম্যাপ গ্রহণ করেছে।

সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ (রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং-আরএডব্লিউ) এবং পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই (ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স)-এর কর্মকর্তারা সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের মধ্যস্থতায় দুবাইয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে তাদের কেউই এ নিয়ে সাড়া দেয়নি। কিন্তু আয়েশা সিদ্দিকা নামে এক শীর্ষস্থানীয় পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কয়েক মাস ধরেই তৃতীয় দেশে সাক্ষাৎ করছেন বলে বিশ্বাস করেন তিনি। আয়েশা বলেন, আমার মনে হয় থাইল্যান্ড, দুবাই, লন্ডনে (ভারত-পাকিস্তানের) সর্বোচ্চ পর্যায়ে বৈঠক হচ্ছে।

ভারত ও পাকিস্তানের কাশ্মীর সমস্যা বহু পুরনো। ২০১৯-এ যে পুলওয়ামা হামলা হয়েছিল, তারপর থেকেই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ফের একবার তলানিতে গিয়ে ঠেকে। এরপর পাল্টা এয়ারস্ট্রাইক ও একাধিক কার্যকলাপে এ মুহূর্তেও পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কোনো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। এমনকি ভারত যখন কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা সরিয়ে নেয়, তখন পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পারমাণবিক হামলার হুমকিও দেওয়া হয়। যদিও সেই হামলা হলে ভারতও যে তৈরি তা বলেছিলেন ভারতীয় সেনাপ্রধানরাও।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম কলকাতা-২৪ জানিয়েছে, রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী দুই দেশ জানুয়ারিতে সীমান্ত নিয়ে বৈঠকের পরও কাশ্মীর সীমান্তে এখনও কড়া পরিস্থিতির মুখোমুখি পড়তে হচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে একদিন শেলিং হামলায় বিরতি থাকলেও পাক মদদপুষ্ট বলে দাবি জঙ্গি সংগঠনগুলো কিন্তু কাশ্মীরে নিজেদের সক্রিয় রেখেছে। যার জেরে একের পর এক এনকাউন্টারের ঘটনা সামনে আসছে। প্রায়ই গোলাগুলি হয় কাশ্মীরে। কাশ্মীরের এই সমস্যা আদৌ মেটে কিনা, বা মিটলেও সেদিন কবে সেদিকেই তাকিয়ে কাশ্মীরবাসী।

 
Electronic Paper