বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার সব আসামি খালাস
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
🕐 ১:১৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০
ভারতের বহুল আলোচিত উত্তরপ্রদেশের বাবরি মসজিদে হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত আসামিদের সবাইকে খালাস দিয়েছেন দেশটির আদালত। বুধবার এই ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন পর রায় ঘোষণা করছে উত্তরপ্রদেশের লখনৌউয়ের বিশেষ আদালত।
ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা ১৯৯২ সালে ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোদ্ধায় অবস্থিত বাবরি মসজিদে হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেন।
ভারতের প্রধান রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) তৎকালীন নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানীর নেতৃত্বে ১৯৯২ সালে দফায় দফায় রথযাত্রা হয়। এই রথযাত্রা থেকে ষোড়শ শতাব্দীর অন্যতম এই মুসলিম স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। কট্টরপন্থী করসেবকরা মসজিড় গুঁড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার পর দেশটিতে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। এতে প্রাণ যায় প্রায় ৩ হাজার মানুষ।
১৯৯২ সালে যখন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধিয়ে ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়; তখন বিজেপির বর্তমানের জ্যেষ্ঠ কয়েকজন নেতা পৃথকভাবে সেই ধ্বংসযজ্ঞে ভূমিকা রেখেছিলেন।
২০১০ সালে উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখাড়া, রামলালার মধ্যে জমি সমান ভাগে করে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এর ফলে হিন্দুরা পায় জমির তিন ভাগের দু’ভাগ। মুসলিমরা এক ভাগ। কিন্তু এই রায়ের বিরুদ্ধে সব পক্ষই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন।
উত্তেজনা ছড়াতে পারে এমন কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বিজেপির নেতা ও মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
প্রায় আড়াই যুগ পর বুধবার এই মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। কিন্তু আদালতে উপস্থিত ছিলেন না বিজেপির অভিযুক্ত শীর্ষ এই নেতারা।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির কয়েকটি ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দাঙার চক্রান্ত, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধ তৈরি, অন্যায়ভাবে জমায়েত হওয়া ইত্যাদি। মামলার শুনানিতে ৬০০ নথি ও ৩৫১ জন সাক্ষীকে হাজির করে ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)। পরবর্তী সময়ে বহুল আলোচিত এই মামলায় মোট ৪৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এর মধ্যে ১৭ জন মারা গেছেন।
বুধবার শুনানিতে মসজিদ ভাঙার অভিযোগ স্বীকার করেছেন জয় ভগবান গোয়েল। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেন বিনয় কাটিয়ার।
ঐতিহাসিক এ রায়ের আগে আদালত চত্বরে চলছে তল্লাশি, কড়া পাহাড়া। এছাড়া উত্তর প্রদেশে সকল ধরনের জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।