পাক-ভারত পরমাণু যুদ্ধ ২০২৫ সালে!
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবেদন
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ৮:৩০ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০১৯
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি গবেষণা বলছে, কাশ্মীর বিরোধের জের ধরে ভারত ও পাকিস্তানের পারমাণবিক যুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি মানুষের প্রাণহানি ঘটবে।
এর ফলে জলবায়ুর ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়বে তাতে অনাহারে মারা যাবে আরও কোটি কোটি মানুষ। এরকম এক বিপর্যয়ের ধারণা দিয়ে বলা হচ্ছে, ২০২৫ সালে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ লেগে যেতে পারে। আমেরিকার রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এসব আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। বিবিসি বাংলা অনলাইনের প্রতিবেদন থেকে গতকাল শনিবার এসব তথ্য জানা গেছে।
এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. অ্যালান রোবোক। তিনি বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তান তাদের পরমাণু অস্ত্রভা-ার বাড়িয়ে চলেছে। শুধু সংখ্যার বিচারেই নয়, এসব অস্ত্রের বিস্ফোরণের শক্তিও তারা ক্রমাগত বৃদ্ধি করছে। ফলে তাদের আশঙ্কা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেই এই যুদ্ধের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।’
গবেষণা প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়, ২০২৫ সালেই যুদ্ধে জড়াতে পারে দক্ষিণ এশিয়ার চিরবৈরি দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান। অধ্যাপক রোবোক বলছেন, ‘ভবিষ্যৎ থেকে তারা শুধু একটি বছরকে বেছে নিয়েছেন। তবে এই যুদ্ধ যেকোনো সময়ে লাগতে পারে, হতে পারে আগামীকালও। ভবিষ্যতের ব্যাপারে কোনো তথ্য থাকে না। কখন কী হবে সেটাও কেউ বলতে পারে না। সেই সম্ভাবনার কথা চিত্রিত করতে আমরা শুধু একটা সময়কে (২০২৫) বেছে নিয়েছি।’
এদিকে ভারতীয় সেনা বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল দীপঙ্কর ব্যানার্জি বলেন, ‘এই গবেষণা একেবারেই কাল্পনিক, যার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। লোকেরা ভাবছেন দুটো দেশের আণবিক বোমা আছে, তাদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো নয়, তার মানে পাঁচ ছয় বছর পর তাদের মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যাবে।’ তবে তিনি বলেন, ‘২০২৫ সালে না হলেও যেকোনো সময় এই দুটো দেশের মধ্যে যুদ্ধ হতে পারে।’
গবেষক অ্যালান রোবোক বলেন, ‘শুধু ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নয়, হতে পারে ভারত ও চীনের মধ্যেও। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে হওয়ারও অনেক কারণ আছে। তবে আমরা ভারত ও পাকিস্তানকে বেছে নিয়েছি, কারণ কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে এ দুটো দেশের মধ্যে অব্যাহত বিরোধ চলছেই। সামরিক যুদ্ধে জড়ানোর অতীত ইতিহাসও তাদের রয়েছে।’
তবে পাকিস্তানের পরমাণু বিজ্ঞানী হুডভাই বলেন, ‘অন্যান্য কারণ থাকলেও কাশ্মীরই হবে এই যুদ্ধের প্রধান কারণ। কাশ্মীরের পরিস্থিতি যতই শান্ত করা যাবে, পরমাণু যুদ্ধের ঝুঁকিও ততটা কমে আসবে। দুর্ভাগ্যজনক হলো সেরকম কিছুই হচ্ছে না। এছাড়াও পরিবেশগত কিছু পরিবর্তনও পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে দিতে পারে।’
গবেষক অ্যালান রোবোক বলছেন, এর আগেও বেশ কয়েকবার পারমাণবিক যুদ্ধ লেগে যাওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। আর, পারমাণবিক অস্ত্রের অস্তিত্বের অর্থ হচ্ছে এসব অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে। আমরা যদি এসব ব্যবহার না করি, এগুলো ব্যবহারের যদি যৌক্তিক কোনো কারণ না থাকে, তাহলে এসব ধ্বংস করে ফেলা উচিত।’