ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভূস্বর্গ থেকে মৃত্যু উপত্যকা

সংকটে কাশ্মীরি নারীরা

ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ৯:০১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯

পৃথিবীর ভূস্বর্গ কাশ্মীর ‘মৃত্যু উপত্যকা’ হয়ে উঠেছে। গত কয়েক দশকজুড়ে ভারত-পাকিস্তানের সংঘাতে দীর্ণ কাশ্মীরে নারী ও কিশোরীরা সেনা, আধা সেনাবাহিনী এবং জঙ্গিদের দ্বারা ধর্ষণসহ নানা অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। একেবারে সরকারি সিলমোহর লাগিয়েই সেখানকার নারীদের মৌলিক অধিকারগুলো কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ফলে ভূস্বর্গে নারীর বিকাশ ও অগ্রগতি হুমকির মধ্যে রয়েছে।

কিন্তু ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর এই উপত্যকায় এক অনিঃশেষ দ্বন্দ্ব শুরু হয়। কারণ জম্মু-কাশ্মীরের শেষ হিন্দু রাজা হরি সিং স্বাধীনতা বজায় রাখতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত কেন তিনি ভারতের সঙ্গে যোগ দেন। কিন্তু একটি মুসলমান প্রধান প্রদেশ, একটি হিন্দু প্রধান রাষ্ট্রের সঙ্গে আদৌ অন্তর্ভুক্তি চায় কি না এবং তাতে তাদের ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক-আর্থ-সামাজিক জীবনে সমস্যা হতে পারে কি না, রাজ্যবাসীর কাছে তা জানতে চাননি হরি সিং।

তবে সংবিধানের অস্থায়ী ৩৭০ ধারা বলে রাজ্যটি ‘স্পেশাল স্টেটাস’র বিশেষ সুবিধাও পেয়ে এসেছে। কিন্তু রাজ্যের সেই নিজস্ব সংবিধানই কাশ্মীরি মহিলাদের নানা মৌলিক অধিকার হরণ করে নেয়।

সংবিধানের ৩৫-এ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কাশ্মীরি মেয়েরা অন্য রাজ্যের পুরুষকে বিয়ে করলে সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। এমনকি সরকারি স্কুল-কলেজে পড়া, কোনো কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্কলারশিপ, সরকারি অনুদান কিংবা সরকারি চাকরি পাওয়ার অধিকারও সে হারায়। সেখানে সম্পত্তি কেনাবেচা, এমনকি পারিবারিক বিষয় সম্পত্তির অধিকার থেকেও মেয়েটি বঞ্চিত হয়। তার অধিকার থাকে না নির্বাচনে অংশ নেওয়ারও।

অথচ কোনো কাশ্মীরি পুরুষ অন্য রাজ্যের বা দেশের কোনো মহিলাকে বিয়ে করলেও তার স্টেটাসের কোনো পরিবর্তন হয় না। উপরন্তু তার স্ত্রী কাশ্মীরের ‘পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট’র মর্যাদা পেয়ে যায়।

তাই নতুন নিয়মে এবার থেকে রাজ্যে সমস্ত নারী-পুরুষের সমানাধিকার প্রযোজ্য হবে। কিন্তু যেসব কাশ্মীরি মহিলা তাদের জীবনে এই ঘোর বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন, ওই অনুচ্ছেদ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বারবার, তারা অন্তত এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

তবে কাশ্মীরি মেয়েদের জীবনের সুরক্ষা নিয়ে একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। কারণ ৩৭০ বাতিল হতে না হতেই বিজেপির নেতা, মন্ত্রীরা যেভাবে ‘কাশ্মীরি মেয়ে’দের বউ করে আনার ঘোষণা দিচ্ছেন তা শুধু অশালীন ও অরুচিকরই নয়, লজ্জাজনকও বটে।

ফলে দরিদ্র কাশ্মীরি মেয়েদের নিরাপত্তা কতটা অটুট থাকবে, তা নিয়ে একটা আশঙ্কা জাগছেই। কারণ বিশ্বে কন্যাশিশু ও নারী পাচারে ভারতের স্থান বেশ উপরের দিকেই।

 
Electronic Paper