অ্যামাজনের আগুনে বিশ্বনেতাদের শঙ্কা
নাক না গলানোর হুঁশিয়ারি ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতির
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১০:০৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৩, ২০১৯
পৃথিবীর ফুসফুসখ্যাত অ্যামাজনে লাগাতার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্বনেতারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, বিশাল এই অরণ্য পোড়ানোর ঘটনা ‘আন্তর্জাতিক সংকট’। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসও এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশ্বনেতারা বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফোরামে তুলে ধরার কথা বলেছেন।
এদিকে বিশ্বের অন্যতম ধনী রাষ্ট্র নরওয়ে অ্যামাজান রক্ষায় গঠিত ফান্ডে ব্রাজিলকে দেওয়া অর্থ সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। পরিবেশবাদীরা অ্যামাজান পোড়ানোর নেপথ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বোলসোনারোকে দায়ী করেছেন। তবে এ অভিযোগ ‘বেপরোয়াভাবে’ অস্বীকার করেছেন তিনি। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘কৃষকরা অবৈধভাবে আগুন দিতে পারে, তবে এটি নিয়ে বহির্বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর নাক গলানোর প্রয়োজন নেই।’
গত বৃহস্পতিবার এক টুইটার পোস্টে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই অরণ্যে বারবার আগুন লাগছে, সব পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। এটা গোটা বিশ্বের জন্য অশনি সংকেত। এটা অ্যামাজনের নিকটবর্তী দেশগুলোর জন্যই শুধু উদ্বেগজনক নয় বরং এটা একটা বৈশ্বিক সংকট। অ্যামাজানে অগ্নিকাণ্ড একটি আন্তর্জাতিক সংকট।’
ফরাসি প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘অ্যামাজন আমাদের গ্রহের ২০ শতাংশ অক্সিজেন সরবরাহ করে- তাতে আগুন জ্বলছে। এটি বৈশ্বিক সংকট। জরুরি ভিত্তিতে জি-৭ সম্মেলনের প্রথম দুই দিনে এর সদস্যদের এ বিষয়ে আলোচনা করতে হবে।’
তবে ব্রাজিল জানিয়েছে, তারা সম্মেলনে অংশ নেবে না। বৃহস্পতিবার বোলসোনারো ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘যারা এখানে অর্থ পাঠায়, তারা দাতব্য কাজের বাইরে পাঠায় না। আমাদের সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপের লক্ষ্যেই তারা তা পাঠায়। তাই আগুন নিয়ে ক্ষমতাধর বিশ^নেতাদের নাক গলানোর দরকার নেই।’
এর আগে তিনি বলেছিলেন, ‘এই আগুনকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ব্রাজিলের একার নেই। অ্যামাজন ইউরোপের চেয়েও বড়, আপনি সেখানকার অপরাধমূলক অগ্নিকাণ্ডের বিরুদ্ধে কীভাবে লড়াই করবেন? এ সক্ষমতা আমাদের নেই।’
ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা আইএনপিই জানিয়েছে, এ বছর এখন পর্যন্ত দেশটিতে ৭২,৮৪৩টি অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। এরমধ্যে অর্ধেকের বেশি আগুনের ঘটনা অ্যামাজন জঙ্গলের, যা আগের বছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি। দাবানলে প্রতি মিনিটে অ্যামাজনের প্রায় ১০,০০০ বর্গমিটার এলাকা পুড়ে যাচ্ছে।
গবেষকদের মতে এই বন প্রতিবছর ২০০ কোটি মেট্রিক টন কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে। সে কারণে একে ডাকা হয়ে থাকে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ নামে।
এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘বৈশ্বিক জলবায়ু সংকটের মধ্যে আমরা অক্সিজেন ও জীববৈচিত্র্যের অন্যতম প্রধান উৎসের এমন ক্ষতি মেনে নিতে পারি না। অ্যামাজনকে অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।’