চাঁদমামার দেশে পাড়ি ভারতের
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০১৯
রূদ্ধশ্বাস অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ১৩০ কোটি ভারতবাসীর স্বপ্ন নিয়ে চাঁদমামার দেশে পাড়ি দিল চন্দ্রযান-২। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রথম দফায় হোঁচট খাওয়ার সপ্তাহান্তেই চতুর্থ দেশ হিসেবে চন্দ্রজয়ের ইতিহাস সৃষ্টি করছে ভারত।
গতকাল সোমবার কাউন্টডাউন শেষে স্থানীয় সময় দুপুর ২.৪৩ মিনিটে ‘বাহুবলী’র ওপর ভর করে চাঁদের উদ্দেশে উড়তে শুরু করে চন্দ্রযান-২। উৎক্ষেপণের ঠিক ১৬ মিনিটের মাথায় পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছে চালু হয়েছে ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন। তবে ‘বাহুবলী’ সিনেমার চরিত্র নয়, জিএসএলভি মার্ক-৩ রকেটের নাম। ভারতীয় গবেষণা সংস্থা-ইসরোর ওই রকেটে চেপেই চাঁদের অন্ধকার দিকের রহস্য উদঘাটনের জন্য রওনা দেয় চন্দ্রযান-২। উত্তরপ্রদেশে স্থাপিত স্টেশন থেকে এর যাত্রা শুরু হয়। এর আগে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন চাঁদে যান পাঠায়।
ইসরো জানিয়েছে, উৎক্ষেপণের পর পৃথিবীর চারদিকে ঘুরপাক খেয়ে চাঁদের কক্ষপথে ঢুকে পড়বে চন্দ্রযান-২। পূর্ব নির্ধারিত সময়মতোই আগামী সেপ্টেম্বর মাসের ৬ তারিখ ‘লুনার সারফেস’ বা চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করবে যানটি। তবে জ্বালানি লিকের দরুণ প্রথমবার বা ১৫ জুলাইয়ের উৎক্ষেপণ বাতিল হয়ে যাওয়ায় সমস্ত প্রক্রিয়ায় কিছু রদবদল করছেন বিজ্ঞানীরা।
সেবার উৎক্ষেপণ থেকে অবতরণ পর্যন্ত ৫৪ দিন সময় ধার্য করা ছিল। যার মধ্যে ২২ দিন পৃথিবীর কক্ষপথে (আর্থ অরবিট) ঘুরপাক খেত চন্দ্রযান। পরবর্তী ২৮ দিন চাঁদের কক্ষপথে (লুনার অরবিট) ঘোরার কথা ছিল যানটির। শেষের চার দিন চাঁদের ‘লোয়ার অ্যাটমোস্ফিয়ারে’ গতি কমিয়ে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর জমিতে অবতরণ করত চন্দ্রযানটি। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ‘লুনার অরবিটের’ সময় কমিয়ে ২০ দিন করা হয়েছে। ফলে এবার সমগ্র অভিযানের সময়সীমা দাঁড়িয়েছে ৪৬ দিন।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, চাঁদের মাটিতে সৃষ্টির আদি সময়ের ফসিল অবিকৃত অবস্থায় থাকতে পারে। তবে সর্বত্র নয় অবশ্যই। চাঁদের যেসব জায়গায় সূর্যবিমুখ, শুধু সেখানেই থাকার সম্ভাবনা। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে যেহেতু বেশ কিছু এলাকায় সূর্যরশ্মি সরাসরি এসে পড়ে না। তাই সূর্যের বিকিরণগত পরিবর্তনও সেখানে কম হওয়ার সম্ভাবনা।
আর তাতেই ফসিল অবিকৃত থাকবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। আর চন্দ্রযান-২ এর অভিযাত্রী যান ‘প্রজ্ঞান’ আধুনিক প্রযুক্তি মারফত খুঁজে বার করবে সেই তথ্যই। অন্তত এমনই আশায় ৮৫১ কোটি টাকার এই প্রকল্প পরিকল্পনা করেছে ইসরো।
সেই সঙ্গে চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযান-১ যে জলকণার সন্ধান পেয়েছিল, তা নিয়ে আরও বিশদ গবেষণা করবে চন্দ্রযান-২। এর মধ্যে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বরফের অস্তিত্ব সন্ধানের চেষ্টা যেমন থাকবে, তেমনই থাকবে চাঁদের মাটিতে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ ও রাসায়নিক খুঁজে বের করার চেষ্টাও।