রোহিঙ্গা নিধন বন্ধে ব্যর্থ জাতিসংঘ
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১১:১১ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৯, ২০১৯
২০১৭ সালে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনা হামলার ঠিক আগে সম্মিলিত ব্যবস্থাপনার অভাব এবং নিরাপত্তা কাউন্সিলের সমর্থন না পাওয়ায় পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যর্থ হয় জাতিসংঘ। মিয়ানমারের অভিযানে বহু হত্যা, গণধর্ষণ ও প্রচুর ঘরবাড়ি পোড়ানো হয়েছে। অথচ করণীয় নির্ধারণে সময়োপযোগী সিদ্ধান্তই নিতে পারেনি জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের এক অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বৈশ্বিক সংস্থাটির ১৯৩ সদস্য দেশে এ প্রতিবেদনটি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফান ডুজেরিক। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সম্প্রতি মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে ৩৪ পাতার একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা জমা দিয়েছেন জাতিসংঘের দূত গার্ট রোজেন্থাল। ২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারে জাতিসংঘের ভূমিকা নিয়ে পর্যালোচনা করতে রোজেন্থালকে নিয়োগ দেন সংস্থার মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
রোজেন্থাল তার প্রতিবেদনে বলেন, ‘রোহিঙ্গা পরিস্থিতির মোকাবেলার ক্ষেত্রে ভুল হয়েছে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা না করে খাপছাড়া কৌশল অবলম্বন করায় মিয়ানমারের পরিস্থিতি মোকাবেলা করার সুযোগ হারিয়েছে জাতিসংঘ। সামগ্রিকভাবে জাতিসংঘের দায়িত্ব ছিল সম্মিলিতভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা। সে কাজে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে সংস্থা’।
জাতিসংঘের তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ‘মিয়ানমার বিষয়ে জাতিসংঘের কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত, তা নিয়ে একমত হতে পারেননি সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের কর্তাব্যক্তিরা। মিয়ানমারে বৃহৎ পরিসরে আরও জোরদার গণমুখী উদ্যোগ নেওয়া উচিত নাকি কূটনৈতিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা উচিত এ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এ ছাড়া মিয়ানমারের মাঠ পর্যায় থেকেও সংস্থার কার্যালয়ে পরস্পরবিরোধী প্রতিবেদন পাঠানো হচ্ছিল।’
রোজেন্থাল তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, মিয়ানমারে জাতিসংঘের ‘নপুংসক’ সাংগঠনিক ব্যবস্থা একদিকে যেমন মিয়ানমার সরকারকে উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখতে হিমশিম খেয়েছে, অন্যদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দেশটির কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্ত করে গেছে।
২০১৭ সালের ওই সেনা অভিযানের কারণে মিয়ানমার থেকে সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এ ঘটনায় বিশ্ব সম্প্রদায় মিয়ানমার সরকারকে দায়ী করেছে। তবে যথারীতি এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে দেশটি।