ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রক্তাক্ত শ্রীলঙ্কা স্তম্ভিত বিশ্ব

ইস্টারে বোমা হামলায় নিহত ২৯০ আহত ৫০০

ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১১:১৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২২, ২০১৯

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলায় পৃথিবীর বিষাদ কাটতে না কাটতেই শ্রীলঙ্কার ছোট্ট নদী কেলানিতে এখন বইছে রক্তস্রোত। সে রক্তের স্রোত গিয়ে মিশেছে পশ্চিম থেকে পুবের নদী মহাভেলিতে। ইতিহাসের বর্বরতম সিরিজ বোমা হামলায় প্রাচীন সিংহল এখন কেবলই মৃত্যুপুরী। ইস্টার সানডের প্রার্থনা সভা পরিণত হয়েছে বিশ্বমানবতার করুণ আর্তনাদে!

গত রোববার ভারত মহাসাগরের এ দ্বীপ দেশটির বাণিজ্যিক শহর কলম্বোর তিনটি গির্জা ও চারটি অভিজাত হোটেলসহ আটটি স্থানে বর্বরোচিত বোমা হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৯০ জন; আহত হয়েছেন পাঁচ শতাধিক মানুষ। নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, ব্রিটেন, চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্তত ৩৫ জন বিদেশি নাগরিক রয়েছেন। খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, হিন্দু, মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মেরও লোক রয়েছেন। উগ্রবাদের ভয়াবহতম জিঘাংসায় বিক্ষত শ্রীলঙ্কার দিকে তাকিয়ে আজ স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব।

বিশ্ব মানবের ত্রাতা হিসেবে প্রভু যীশুর পুনরুত্থান কামনায় কলম্বোর প্রধান গির্জাগুলোতে রোববার প্রার্থনায় মিলিত হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। কলম্বোর সর্বত্র ছিল উৎসবের আমেজ। পৃথিবীর নানা দেশ থেকে অনন্য সুন্দর মহাসগরীয় এ দীপটিকে দেখার জন্য বাণিজ্যিক নগরীতে ভিড় জমিয়েছিলেন পর্যটকরাও। তাই উগ্রবাদীরা হত্যাযজ্ঞের জন্য বেছে নেয় সমুদ্রপাড়ের সুনসান-শান্ত শহরটিকে।

সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে শ্রীলঙ্কার গির্জা ও অভিজাত হোটেলগুলো। একের পর এক বোমা বিস্ফোরণে রচিত হয় বিশ্বসভ্যতার আরেকটি মর্মান্তিক দিন। মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে দেশটির ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের তিনটি বড় গির্জা সেইন্ট অ্যান্থনির চার্চ, সেইন্ট সেবাস্টিয়ানের চার্চ আর জিয়ন চার্চ পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে। একইভাবে মৃত্যুবিভীষিকায় পরিণত হয় কলম্বোর পাঁচ তারকা হোটেল শাংরি লা, কিংসবুরি আর সিনামন গ্র্যান্ড। সেখানে অবস্থানরত অন্তত ৩৫ জন বিদেশি নাগরিক মৃত্যুবরণ করেছেন বোমা হামলায়

নিহতদের মধ্যে শুধু খ্রিস্টান নয় রয়েছে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধসহ আরো নানা ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ। একই দিন দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে দেহিওয়ালার জাতীয় চিড়িয়াখানার কাছে নিউ ট্রপিক্যাল ইন হোটেলে, দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে কলম্বোর দিমাটাগোদায় একটি বাড়িতে পুলিশি অভিযান চলার সময় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। দিমাটাগোদার বিস্ফোরণে তিন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। রাত ১০টা ৩০ মিনিটে কলম্বোর একটি মসজিদেও পেট্রলবোমা বিস্ফোরণ ঘটে এবং গতকাল সকালে অবিস্ফোরিত গাড়িবোমা বিস্ফোরিত হয়েছে কলম্বো শহরেই।

শ্রীলঙ্কায় টানা ২৬ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান হয় ২০০৯ সালে। গত বছর সাম্প্রদায়িক সংঘাত ছাড়া গত ১০ বছর শ্রীলঙ্কা ছিল শান্ত। গৃহযুদ্ধের সময়েও এক দিনে এত বড় বোমা হামলার ঘটনার নজির নেই সেখানে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ভয়াবহ এ হামলার দায় স্বীকার কেউ না করলেও দুবাইভিত্তিক আল অ্যারাবিয়া টেলিভিশন চ্যানেলকে উদ্ধৃত করে রুশ বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, জামাত আল-তাওহিদ আল-ওয়াতানিয়া নামের একটি জঙ্গিগোষ্ঠী শ্রীলঙ্কার রোববারে বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে। আল অ্যারাবিয়া টুইটারে সোমবার এ দায় স্বীকারের বিষয়টি জানায়। জঙ্গি গোষ্ঠী সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানায়নি চ্যানেলটি। তবে শ্রীলঙ্কার পক্ষ থেকে এ হামলার পেছনে স্থানীয় জঙ্গি সংগঠন ন্যাশনাল তাওহিদ জামাতকে দায়ী করেছে। এ পর্যন্ত ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভয়াবহ এ ঘটনার জেরে দেশটিতে গতকাল মধ্যরাত থেকে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এ ঘটনার ১০ দিন আগেই শ্রীলঙ্কার প্রধান গির্জাগুলোতে বোমা হামলা চালানো হতে পারে বলে শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার পুলিশপ্রধান পুজুথ জয়াসুন্দরা। বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে ওই সতর্কবার্তায় বলা হয়, ন্যাশনাল তাওহিদ জামায়াত (এনটিজে) নামের উগ্রপন্থি মুসলিম সংগঠন শ্রীলঙ্কার প্রধান গির্জাগুলোতে আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা করছে। কলম্বোতে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনেও হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানানো হয় সতর্কবার্তায়। গত বছর মার্চ মাসে দেশটিতে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় একটি বৌদ্ধমূর্তি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শ্রীলঙ্কার উগ্রপন্থি মুসলিমদের সংগঠন এনটিজের নাম খবরে এসেছিল।

পুলিশ প্রধানের ওই সতর্কবার্তা পুরোপুরি আমলে না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, ‘আমাদের এ বিষয়গুলো আরও খতিয়ে দেখতে হবে। দেশকে অস্থিতিশীল করার মতো সুযোগ দেওয়া কোনোভাবেই উচিত হয়নি। তিনি এ হামলার পেছনে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের হাত থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন।

দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার মুখপাত্র রজিথা সেনারত্ন বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি না যে, এই হামলাগুলো শুধু দেশের ভেতরে সীমাবদ্ধ একটি গোষ্ঠী চালিয়েছে। একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ছাড়া এসব হামলা সফল হতে পারত না।’

এ ঘটনার পর রোববার সন্ধ্যা থেকে পুরো শ্রীলঙ্কায় জারি করা হয়েছিল কারফিউ। গতকাল সোমবার সকালে তা তুলে নিয়ে সন্ধ্যার দিকে ফের কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত এ কারফিউ চলবে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার স্বার্থে সোমবার মধ্য রাত থেকে গোটা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে শ্রীলঙ্কায় স্মরণকালের এ ভয়বাহতম সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্মরণে আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সে দেশের সরকার।

এদিকে দেশটির পুলিশ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২৪ জনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। তবে কারা ওই সমন্বিত হামলা চালিয়ে থাকতে পারে, সে বিষয়ে সরকার এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলেনি। এদিকে ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে আরও সন্ত্রাসী হামলা ঘটতে পারে বলে সতর্ক করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। সতর্কতায় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, সন্ত্রাসীগোষ্ঠীরা শ্রীলঙ্কায় আরও হামলার ষড়যন্ত্র করছে। হামলার সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু হতে পারে পর্যটন স্থান, পরিবহনের কেন্দ্রস্থল, বিপণিবিতান, হোটেল, উপাসনালয়, বিমানবন্দর ও অন্যান্য জনবহুল স্থান।’

গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে জুমার নামাজ আদায়রত অবস্থায় দুটি মসজিদে হামলা চালিয়ে সন্ত্রাসীরা অর্ধশতাধিক মানুষকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনার শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই শ্রীলঙ্কায় এমন বর্বরোচিত ঘটনা ঘটল। এ ঘটনায় শুধু শ্রীলঙ্কা নয়, হতবিহ্বল গোটা বিশ্ব। শোকে মুহ্যমান সব ধর্ম-বর্ণ-জাতি-সম্প্রদায়ের মানুষ। দুই কোটি বিশ লাখ জনসংখ্যার দেশ শ্রীলঙ্কায় ৭০ শতাংশই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। বাকিদের মধ্যে ১৩ শতাংশ হিন্দু, ১০ শতাংশ মুসলমান, আর ৭ শতাংশ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী বসবাস করেন।

জরুরি অবস্থা
রোববার বিকাল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত কারফিউ তুলে নিয়ে সোমবার মধ্যরাত থেকে গোটা দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের মিডিয়া ইউনিট এক বিবৃতিতে বলেছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়তেই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল জরুরি অবস্থা জারির এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী আদালতের পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার, তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করার অনেক বেশি ক্ষমতা পাবে। তবে এক্ষেত্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করা হবে না বলে ওই বিবৃতিতে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

রাজধানী কলম্বোতে টানা দ্বিতীয় রাতের মতো কারফিউ জারি করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। সোমবার রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত এই কারফিউ বলবৎ থাকবে।

রাষ্ট্রীয় শোক
রাজধানী কলম্বো ও এর আশপাশের গীর্জা ও হোটেলে ন্যক্কারজনক বোমা হামলার ঘটনায় নিহতদের স্মরণে আজ মঙ্গলবার দেশব্যাপী রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। গতকাল সোমবার দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার নেতৃত্বে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পোপ, ট্রাম্প মোদিসহ বিশ্বনেতাদের নিন্দা
ইস্টার সানডেতে শ্রীলঙ্কার কলম্বোসহ বিভিন্ন শহরের গির্জায় ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন পোপ ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান পোপ ফ্রান্সিস, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিশ্বনেতারা। তারা নিহতদের স্বজনদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

রোববার ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে জড়ো হওয়া ১০ হাজারের বেশি মানুষের উদ্দেশে দেওয়া ইস্টার সানডের ভাষণে পোপ ফ্রান্সিস কলম্বোয় সংঘটিত বর্বরোচিত বোমা হামলার নিন্দা জানান। ফ্রান্সিস বলেন, ইস্টারের দিন শ্রীলঙ্কার গির্জা ও অন্যান্য স্থানে ভয়াবহ হামলা মানুষের জন্য শোক নিয়ে এসেছে। এই নৃশংস সহিংসতায় প্রার্থনায় জড়ো হওয়া এবং অন্যান্য নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।

এ ছাড়া শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ এই হামলায় শোক ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা। এর মধ্যে আছেন- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ আরও অনেকে।

ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় লেখেন, হামলায় নিহত ও আহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করছি। সাহায্যের জন্য আমরা তৈরি আছি। যদিও ট্রাম্পের এই বার্তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। কারণ তিনি নিহতের সংখ্যাটি ভুল লিখেছিলেন।

দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা লেখেন, পর্যটক এবং ইস্টার পালনকারীদের ওপর হামলা মানে পুরো মানবজাতির ওপর হামলা। আমরা শ্রীলঙ্কার মানুষের পাশে আছি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রার্থনা করছি।

মোদি টুইট করেছেন, শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমাদের এই অঞ্চলে (দক্ষিণ এশিয়া) এমন বর্বরতার কোনো জায়গা নেই। শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষের পাশে আছে ভারত। নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
আবারও ‘সন্ত্রাসী হামলা’র আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের

সন্ত্রাসীরা শ্রীলঙ্কায় আরও হামলার পরিকল্পনা করছে জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর থেকে নাগরিকদের দেশটি ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সময় রোববার জারি করা সংশোধিত ভ্রমণ সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘সামান্য আভাস বা কোনো আগাম সতর্কবার্তা ছাড়াই সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে।’ হামলার সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু হিসেবে পর্যটনকেন্দ্র, শপিংমল, হোটেল, বাস ও রেলস্টেশন, বিভিন্ন প্রার্থনাকেন্দ্র, বিমানবন্দর ও জনসমাগমপূর্ণ এলাকার কথা বলা হয়েছে।

হামলায় দায় স্বীকার জঙ্গিগোষ্ঠীর
শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে জামাত আল-তাওহিদ আল-ওয়াতানিয়া নামের একটি জঙ্গিগোষ্ঠী। দুবাইভিত্তিক আল অ্যারাবিয়া টেলিভিশন চ্যানেলকে উদ্ধৃত করে এ কথা জানিয়াছে রুশ বার্তা সংস্থা তাস। আল অ্যারাবিয়া টুইটারে গতকাল এ দায় স্বীকারের বিষয়টি জানায়। তবে এই জঙ্গিগোষ্ঠী সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানায়নি চ্যানেলটি। শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার মুখপাত্র রাজিথা সিনারত্নের উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপির খবরে জানানো হয়, স্থানীয় উগ্রপন্থী ইসলামী দল ন্যাশনাল তাওহিদ জামাত (এনটিজে) এ হামলায় জড়িত। আন্তর্জাতিক কোনো গোষ্ঠী তাদের সহায়তা করেছে কি না, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। আবার সিনারত্নের উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্স বলছে, হামলায় আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক জড়িত। স্থানীয় কোনো দল এভাবে হামলা চালাতে পারে না।

নতুন করে বোমা বিস্ফোরণ
শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় নতুন করে বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। রয়টার্সের খবরে বলা হয়, রোববার দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বোমা হামলার সময় একটি গির্জায়ও হামলা চালানো হয়। সেই গির্জার সামনে থাকা একটি গাড়িতে গতকাল বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ বোমাটি নিষ্ক্রিয় করার সময় সেটি বিস্ফোরিত হয়। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

 
Electronic Paper