ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আগাম জেনেও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন

ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১০:৫৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২২, ২০১৯

শ্রীলঙ্কায় গির্জা ও পাঁচ তারকা হোটেলে গত রোববারের ভয়াবহ হামলায় অন্তত ২৯০ জন নিহত এবং ৫০০’র বেশি লোক আহত হয়েছেন। আহতদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। ইস্টার সানডেকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের যে হামলা হতে পারে তা আগেই সতর্ক করেছিলেন দেশটির পুলিশ প্রধান। হামলার অন্তত দুই সপ্তাহ আগে লিখিতভাবে বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছিলেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। এমনকি দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি।

এ নিয়ে এরই মধ্যে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে শ্রীলঙ্কার রাজনীতি। কোয়ালিশন সরকার থাকায় প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ছিল বলেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে। আর এই দুর্বলতার সুযোগেই চরমপন্থীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করেছে দেশটিকে।

শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেমাসারি ফার্নান্দোর ভাষ্যেও বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেছেন, চলতি মাসের শুরুতে একটি সতর্কবার্তা পাওয়া গিয়েছিল। সেখানে একটি বা দুটি সম্ভাব্য হামলার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এত বড় মাপের ঘটনা তিনি ভাবতেও পারেননি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ এপ্রিল শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে সতর্কবার্তা পাঠান শ্রীলঙ্কার পুলিশ প্রধান পুজুথ জয়াসুন্দরা। বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে ওই সতর্কবার্তায় বলা হয়, ন্যাশনাল তাওহিদ জামায়াত (এনটিজে) নামের উগ্রপন্থী মুসলিম সংগঠন শ্রীলঙ্কার প্রধান গির্জাগুলোতে আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা করছে। কলম্বোতে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনেও হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানানো হয় সতর্কবার্তায়। এনটিজে শ্রীলঙ্কার একটি মৌলবাদী মুসলিম সংগঠন।

গত বছর বৌদ্ধমূর্তি ভাঙার সঙ্গে যুক্ত থাকার মাধ্যমে সংগঠনটি নজরে আসে। গত রবিবার সকালে শ্রীলঙ্কায় তিনটি গির্জা ও তিনটি হোটেলে সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ২৯০ জনে দাঁড়িয়েছে। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান উৎসব ইস্টার সানডে উপলক্ষে গির্জাগুলোতে বিশেষ প্রার্থনা চলছিল। এ সময়ই চালানো হয় ভয়াবহ হামলা।

পুলিশ প্রধান পুজুথ জয়সুন্দর শীর্ষ কর্তাদের আত্মঘাতী হামলার আশঙ্কার কথা জানানোর পরও এ ধরনের একটি ঘটনা কেন এড়ানো গেল না, তা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ। দেশটিতে খ্রিস্টধর্মে বিশ্বাসী ক্যাথলিকদের সংখ্যা ছয় শতাংশ। ইস্টারের প্রার্থনার কারণেই গির্জায় বেশ ভিড়ই ছিল, তাই এই নির্দিষ্ট সময়টাকেই জঙ্গিরা বেছে নিয়েছে বলে মত শ্রীলঙ্কা পুলিশের।

শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেমাসারি ফার্নান্দো বিবিসিকে বলেছেন, ইস্টার সানডের হামলা প্রতিহত করতে না পারার জন্য সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে দায়ী করা উচিত হবে না।

হেমাসারি ফার্নান্দো সেখানে বলেন, চলতি মাসের শুরুতে যে সতর্কবার্তা পাওয়া গিয়েছিল সেখানে একটি বা দুটি সম্ভাব্য হামলার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এত বড় মাপের ঘটনা তিনি ভাবতেও পারেননি। মিস্টার ফার্নান্দো আরও হামলার আশঙ্কা আছে কি-না কিংবা সব হামলাকারীকে আটক করা হয়েছে কি-না সে সম্পর্কে কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ জনগণকে রক্ষায় সর্বোচ্চটাই করেছে। কেবিনেট মুখপাত্র রাজিথা সেনারত্নে সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে দুই সপ্তাহ আগেই সতর্কবার্তা পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন।

৪ এপ্রিল অর্থাৎ ঘটনার ১৪ দিন আগে আমরা তথ্য পেয়েছিলাম। ৯ এপ্রিল গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান একটি চিঠি দিয়েছিলেন এবং এ চিঠিতে সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্যদের অনেকের নাম লেখা ছিল। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে এ বিষয়ে অবহিত ছিলেন না।

 

 

 
Electronic Paper