ঋণ মওকুফ হলেই কি শ্রীলঙ্কা বাঁচবে
অনলাইন ডেস্ক
🕐 ১২:২০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৪, ২০২৩
ঋণসংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কাকে বাঁচাতে বিশ্বের ১৮০ জন অর্থনীতিবিদ ও একাডেমিশিয়ান ঋণদাতাদের প্রতি দেশটির ঋণ মওকুফের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে কেউ কেউ আবার মনে করছেন, ঋণ মওকুফ করা হলেই শ্রীলঙ্কার সংকটের সমাধান হবে না। বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫২ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ২০০ কোটি ডলার। এই ঋণের ৪০ শতাংশ বেসরকারি ঋণদাতাদের কাছ থেকে নেওয়া, যার মধ্যে বহুজাতিক সংস্থাও আছে।
বাকিটা দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ে নেওয়া, যার মধ্যে দেশটি সবচেয়ে বেশি নিয়েছে চীনের (৫২%) কাছ থেকে, তারপর আছে জাপান (১৯%) ও ভারত (১২%)। খবর আল-জাজিরার।
কিন্তু দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগত কমতে থাকায় গত বছরের এপ্রিল মাসে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে খেলাপি হয়ে পড়ে। এরপর তারা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ২৯০ কোটি ডলারের বেইল আউটের আবেদন করে।
এ নিয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু আইএমএফ বলেছে, ভারত ও চীনের মতো দ্বিপক্ষীয় ঋণদাতারা যদি শ্রীলঙ্কার ঋণ স্থগিত করে বা সে রকম ব্যবস্থা নেয়, তাহলে তারা ঋণ দেবে। অর্থাৎ তারা যত দিন না নিশ্চিত হচ্ছে যে শ্রীলঙ্কা ঋণ পরিশোধ করতে পারবে, তত দিন তারা ঋণের অর্থ ছাড় করবে না।
১৮০ জন অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন বিশারদের মধ্যে আছেন বিশ্বখ্যাত ফরাসি অর্থনীতিবিদ টমাস পিকেটি ও ভারতের অর্থনীতিবিদ জয়তী ঘোষ। তাঁরা আবেদনে বলেছেন, বেসরকারি ঋণদাতারা প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই না করে রাজনীতিকদের ঘুষ হিসেবে উচ্চ সুদের ঋণ দিয়েছে।
এদের অনেকেই ঋণের বড় একটা অংশ ফেরত পেয়েছে। অর্থাৎ তারা লাভবান হয়েছে। কিন্তু এখন যখন শ্রীলঙ্কা বিপদে পড়েছে, তখন তাদেরও দায় নিতে হবে। অর্থাৎ এই ঋণ বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন সেই ১৮০ জন।
কিন্তু সবাই আবার এর সঙ্গে একমত নন। শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ডব্লিউ এ ভিজেবর্ধনে মনে করেন, এভাবে ঋণ বাতিল করা হলে আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থাই ধসে পড়বে। এই ১৮০ জনের সবাই কিন্তু অর্থনীতিবিদ নন, তাঁদের মধ্যে অনেক সামাজিক বিজ্ঞানের মানুষও আছেন। তাঁদের এই আহ্বান মেনে নেওয়া হলে নতুন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার গোড়াপত্তন হবে।