শীতে ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে রক্ষা
স্বাস্থ্য কুশল ডেস্ক
🕐 ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০১৮
ইনফ্লুয়েঞ্জা, এটি ফ্লু নামেও বেশ পরিচিত। শীতকালে এ রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। এটি ভাইরাসজনিত একটি রোগ। তবে সাধারণ সর্দি-কাশি থেকে আলাদা। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে এ রোগ হয়। শরীরে জীবাণু ঢোকার এক থেকে চার দিনের মধ্যেই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। অন্য ভাইরাসগুলোর তুলনায়, ইনফ্লুয়েঞ্জা তুলনামূলক কম সময়ের মধ্যে প্রচুরসংখ্যক লোককে আঘাত করতে পারে।
উন্নত দেশগুলোতে প্রায় দশ থেকে পনেরো ভাগ লোক এই ফ্লুতে প্রতিবছর আক্রান্ত হন। গুরুতর মহামারী রূপে, জনসংখ্যার একটি বড় অংশ ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণগুলোর মধ্যে- জ্বর, নাক দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি, খুসখুসে কাশি, শরীর ব্যথা, মাথাব্যথা, ক্ষুধামন্দা, বমি, দুর্বলতা ইত্যাদি। সাধারণ সর্দি-কাশির চেয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণগুলো গুরুতর। বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে রোগটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাদের মধ্যে এ রোগের সংক্রমণের হার বেশি। বেশি দুর্বলও করে ফেলে তাদের। এটি থেকে সাইনোসাইটিস, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া ইত্যাদিও হতে পারে।
সাধারণ সর্দি-কাশির ভাইরাসের মতো ইনফ্লুয়েঞ্জার ভাইরাসও হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। রোগীর ব্যবহার্য রুমাল, গামছা, তোয়ালে বা অন্য যে কোনো জড় বস্তুতে লেগে থাকা জীবাণু দিয়েও অন্য মানুষ আক্রান্ত হতে পারে।
রোগী সুস্থ হয়ে উঠতে পারে এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে। আক্রান্ত ব্যক্তি অন্যকে সংক্রমিত করতে পারে প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তি তার শরীরে ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ দেখা দেওয়ার একদিন আগে থেকেই অন্যকে সংক্রমণ করা শুরু করতে পারে। মহামারী আকারে ইনফ্লুয়েঞ্জা দেখা দেয় অনেক সময়ই।
চিকিৎসা : ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসা উপসর্গভিত্তিক। হাঁচি-কাশির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন এবং জ্বর ও শরীর ব্যথার জন্য প্যারাসিটামলজাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকে। সেকেন্ডারি ইনফেকশন হয়ে সাইনোসাইটিস, নিউমোনিয়া ইত্যাদি হলে কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন পড়ে, সঙ্গে প্রচুর পানি বা তরল খাবার গ্রহণ করা আবশ্যক। তবে যেটাই করুন না কেন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর করবেন। নইলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
প্রতিরোধ : ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধ করা জরুরি। সাধারণ সর্দি-কাশির মতোই স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমে রোগটি প্রতিরোধ করা যেতে পারে অনেকাংশে। প্রতিরোধ করা যেতে পারে টিকার মাধ্যমেও।
তবে টিকা দিতে হবে প্রতিবছরই। কারণ, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস তাদের গঠন প্রায়ই পরিবর্তন করে এবং বিবর্তিত হয়। তাই রোগটির আক্রমণ থেকে বাঁচতে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।