ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

করোনা মোকাবিলায় বাড়ছে চিকিৎসক

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
🕐 ১২:১৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ০৩, ২০২১

করোনা মোকাবিলায় বাড়ছে চিকিৎসক

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে ৪০৯ চিকিৎসক নিয়োগ দেবে সরকার। শুধু মৌখিক পরীক্ষার (ভাইভা) মাধ্যমে এসব চিকিৎসককে জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অ্যানেস্থেসিওলজি) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। এ জন্য বিসিএস নিয়োগ বিধিমালা-১৯৮১ সংশোধন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। চলতি মাসেই এই ৪৪তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে এ পদে অনেক জনবল শূন্য। এ কারণে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারি হাসপাতালগুলোকে। এর মধ্যে করোনাকালে সারা দেশে সিসিইউ ও আইসিইউতে রোগীর চাপ আগের চেয়ে অনেক বেশি। ফলে অ্যানেস্থেসিওলজির শূন্য পদ দ্রুত পূরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে বিধিমালা সংশোধন করে গত ২৮ জুন গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এ পদে নিয়োগ পেতে এ বিষয়ে পাঁচ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা লাগবে। এ ছাড়া এ বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট বা ডিপ্লোমা থাকতে হবে।

সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, শর্ত শিথিল করা হলে আলাদা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশেষ বিসিএস নিতে হতে পারে। নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের কপি এখনও পিএসসিতে আসেনি। এলে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কত নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে, সে বিষয়ও কমিশন সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিধি অনুবিভাগ) আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অ্যানেস্থেসিওলজি) পদে অনেক পদ শূন্য, কিন্তু পদোন্নতির লোক নেই। তাই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোকদের এ পদে বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হবে। এ জন্য বিসিএস নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করে শর্ত শিথিল করা হয়েছে। নিয়োগের প্রস্তাব গত বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, অন্যান্য বিষয়ের মতো অ্যানেস্থেসিওলজি নিয়ে বেশিরভাগ চিকিৎসক পড়তে চান না। ফলে অনেক পদ শূন্য রয়েছে। এসব পদ দ্রুত পূরণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত নিয়োগের জন্য এখন কাজ চলছে।

এদিকে করোনা সংক্রমণের কারণে গত ২২ জুন ৪২তম বিশেষ বিসিএসের চলমান মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করেছে পিএসসি। এর আগে ৩৯তম বিসিএসে (বিশেষ) ২০০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে পাঁচ হাজারের মতো চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

পিএসসি জানায়, করোনায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে ৩৯তম বিসিএসের নন-ক্যাডার থেকে দুই হাজার চিকিৎসক নেওয়া হয়। তারা ক্যাডার হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হন ৩৯তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে। স্বাস্থ্য ক্যাডারের সহকারী সার্জন হিসেবে তাদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। করোনায় ৫ হাজার ৫৪ জন নার্স নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন ২০১৮ সালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ পরীক্ষার অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে।

২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল চিকিৎসকদের জন্য ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ওই বছরের ৩ আগস্ট প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৩৭ হাজার ৫৮৩ জন অংশ নেন। পরীক্ষায় পাস করেন ১৩ হাজার ৭৫০ জন চিকিৎসক। চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষার পর ৮ হাজার ৩৬০ জন উত্তীর্ণ হন। সেখান থেকে ৪ হাজার ৭৯২ জন চিকিৎসককে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। গত বছর নভেম্বর মাসে তাদের মধ্য থেকে ৪ হাজার ৪৪৩ জনকে স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বাকিরা অপেক্ষমাণ তালিকায় ছিলেন। ওই তালিকা থেকে এ বছর ১২ ফেব্রুয়ারি ওই ৫৩৫ জন চিকিৎসককে মেডিকেল অফিসার হিসেবে পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ অধিদপ্তরে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল। এ ছাড়া আরও ২৯ জনকে অন্যান্য দপ্তরে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। নতুন করে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে পিএসসি নন-ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত ৫৬৪ জনের নিয়োগ বাতিল করে দেয়।

 
Electronic Paper