ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাজস্বের চেয়ে তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা ব্যয় বেশি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
🕐 ১২:০৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০২১

রাজস্বের চেয়ে তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা ব্যয় বেশি

তামাক থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব সরকার পায়, তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়। তামাক সেবনের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, ক্রনিক লাং ডিজিজসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে বছরে দেশে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। আর সারা বিশ্বে মারা যায় ৮০ লক্ষাধিক।

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার অনলাইন আলোচনায় বক্তারা বলেন, যেহেতু তামাক মানুষকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে, তাই তামাকজনিত অকালমৃত্যু কমিয়ে আনার লক্ষ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণেও সরকার সক্রিয় রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এ আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে অংশ নেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া।

লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, তামাক উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সেবনÑপ্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য এবং অর্থনীতির ক্ষতি করে। বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়ায় সাত হাজারের বেশি ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৭০টি ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী। বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়া নারী, শিশুসহ অধূমপায়ীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তামাক সেবনের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, ক্রনিক লাং ডিজিজসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে বছরে পৃথিবীতে ৮০ লক্ষাধিক ও বাংলাদেশে ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মারা যায়। এছাড়া সরকার তামাক খাত থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব পায়, তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় করতে হয়।

বর্তমান সরকার জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন ও অকালমৃত্যু প্রতিরোধে বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। তামাক যেহেতু মানুষকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে- তাই তামাকজনিত অকাল মৃত্যু কমিয়ে আনার লক্ষ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণেও সরকার সক্রিয় রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এসডিজি অর্জনের বিষয়টিকে এগিয়ে নিতে ৭ম ও ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় তামাক নিয়ন্ত্রণকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সর্বোপরি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান স্পিকার সামিটে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে রোডম্যাপ প্রণয়নসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে যাচ্ছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশকে ২০৪০ সালের মধ্যে অবশ্যই তামাকমুক্ত করা সম্ভব হবে বলে আমি আশাবাদী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রি. জেনারেল (অব.) ডা. আবদুল মালিক এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর।

মো. আলী নূর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর এ ঘোষণা বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগও সক্রিয় থাকবে। এজন্য মেডিকেল শিক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া পরিবার কল্যাণে বিদ্যমান কর্মসূচির সঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়কে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. বর্ধন জং রানা, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্বস্বাস্থ্য) কাজী জেবুন্নেছা বেগম এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী হোসেন আলী খোন্দকার।

অনলাইনে আলোচনা সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভাগীয় কমিশনার অফিস, জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল, স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা, তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ সংযুক্ত ছিলেন।

 
Electronic Paper