টিকাদান ছাড়া ভাইরাস নির্মূল করা দুরূহ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৫:৪০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২১
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘টিকাদান ছাড়া এই করোনাভাইরাস দেশ থেকে একেবারে নির্মূল করা দুরূহ কাজ। পূর্বের ইতিহাসও একই কথা বলে। টিকাদানের ফলেই পৃথিবী থেকে পোলিও, প্লেগসহ অন্যান্য মহামারি বিদায় নিয়েছে। অথচ টিকা নিয়ে দেশে এখন কিছু মানুষ বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বিভ্রান্তির ফলে শুরুতে মানুষের মনে শংকা থাকলেও এখন ধীরে ধীরে তা কেটে যাচ্ছে। কারণ টিকাদানের প্রথম ২ দিনের পর দেখা যাচ্ছে, এখনো টিকা গ্রহণকারী কারো শরীরে তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। সরকার আগে থেকেই বলেছে এই টিকা নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত। তবে ব্যাপক মানুষের মাঝে প্রয়োগের পর দুয়েকজনের দেহে সামান্য প্রতিক্রিয়া দেখা যেতেও পারে। কোনোভাবেই টিকা গ্রহণ করা থেকে মানুষকে বিরত থাকতে উৎসাহ দেয়া যাবে না। এতে দেশকে করোনামুক্ত করতে আরো বেশি সময় লাগবে।’
২ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু হোটেলে হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অ্যাসেন্ড বাংলাদেশ আয়োজিত বিশ্ব এনটিডি দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে আরো বলেন, ‘বিশ্বে বর্তমানে ১৭০ কোটি মানুষ এনটিডিতে আক্রান্ত। ২০টি রোগকে এনটিডি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ১৩টি রোগকে দেশ থেকে নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছে। অবশিষ্ট ৭টির মধ্যে জলাতঙ্ক, কালাজ্বর, কুষ্ঠরোগ দেশ থেকে বিদায়ের পথে রয়েছে। এগুলোর মধ্যে দেশে বর্তমানে সাপের কামড়ে বছরে প্রায় ৭ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয় এবং বছরে প্রায় ছয় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এটিকে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। আশা করা যায় ২০২৩ সালের মধ্যেই বাকি রোগগুলো থেকেও দেশ মুক্ত হতে সক্ষম হবে।’
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে একযোগে করোনা টিকাদান করা হবে। সরকারের টাকায় কেনা একটি ভ্যাকসিনও যেন অপচয় বা নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘এই করোনা মহামারিতেও এনটিডি রোধে সরকার যে ভূমিকা রেখে চলেছে এতে ২০২৩ সালের মধ্যেই অন্তত আরও ২টি এনটিডি রোগকে দেশ থেকে নির্মূল করা সম্ভব হবে।’
রোগ নিয়ন্ত্রণ ও সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, স্বাচিপ মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি বারদান জং রানা প্রমুখ।