ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে করণীয়

ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২০

ভেজাল খাদ্য, অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ, ঘন ঘন ইউরিন ইনফেকশন ছাড়াও আরও নানা কারণে আমাদের ঘরে ঘরে এখন কিডনি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কিডনি রোগের চিকিৎসায় ডায়েটের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

 

পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এখন পর্যন্ত ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো ওষুধ বের না হলেও যথাযথ পথ্য নিয়ন্ত্রণ করে কিডনিকে বিশ্রাম দিতে পারলে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

কিডনি রোগের ক্ষেত্রে প্রতিটি পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ যথাযথভাবে নির্ধারণ করে রোগীর ডায়েট তৈরি করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে একজন ডায়েটেশিয়ানের পরামর্শ মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কিডনি রোগীদের জন্য অন্য রোগীদের তুলনায় একটু বেশি ক্যালোরি নির্ধারণ করা হয়। প্রতি কেজি ওজনের জন্য পরিমাণ ৩০ থেকে ৩৫ ক্যালোরি হয়ে থাকে। কিডনি রোগীর জন্য ক্যালোরি বেশিরভাগই কার্বোহাইড্রেট থেকে বরাদ্দ করা হয়।

প্রোটিন নিয়ন্ত্রণ কিডনি রোগীর জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা, ইউরিন মাইক্রো অ্যালবুমিনের মাত্রা, ইউরিয়া ও ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা, রোগীর ওজন ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে প্রোটিনের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ গ্রাম প্রোটিন রোগীভেদে ডায়েটে দেওয়া হয়ে থাকে। প্রাণীজ প্রোটিন থেকে রোগীর প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করা হয়ে থাকে। ডিমের সাদা অংশ, মুরগির বুকের মাংস, মাছ, দুধ বা দই থেকে নিদিষ্ট পরিমাণ প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে। অনেক রোগীদেরই একটি ভুল ধারণা থাকে যে, ৩০ গ্রাম প্রোটিন মানে ৩০ গ্রাম মাছ বা মাংস। আসলে ৩০ গ্রাম প্রোটিন হচ্ছে ২৪ ঘণ্টায় রোগীর প্রোটিনের পরিমাণ। এক্ষেত্রে কতটুকু ওজনের মাছ বা মুরগির মাংসের টুকরা হবে তা হিসেব করে নির্ধারণ করা হয়। আমাদের মনে রাখতে হবে ৩০ গ্রাম প্রোটিন মানে ৩০ গ্রাম মাছ, মাংস বা ডিম নয়। যেমন একটি ডিমের সাদা অংশ থেকে আমরা মাত্র ৩.২ গ্রাম প্রোটিন পেয়ে থাকি।

রক্তে ইলেকট্রোরাইট, ইউরিক অ্যাসিড ও শরীরে ইডিমার ওপরে ভিত্তি করে ফল ও শাক-সবজির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। সাধারণত ৪০ থেকে ৬০ মিলি ইকুইভিন্টে পর্যন্ত পটাশিয়াম প্রতিদিন রোগীকে গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে কতটুকু ফল ও সবজি খাবে তা ডায়েটিশিয়ান নির্ধারণ করে দিয়ে থাকে। আপেল, নাসপাতি, পেয়ারা ও পেঁপে এই চারটি ফলই সাধারণত দেয়া হয়। তবে পটাসিয়ামের মাত্রা ভেদে তা পরিবর্তন করা যেতে পারে।

কিডনি রোগীর সোডিয়ামও নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা, ইডিমা এবং গ্রহণ করা ওষুধের ভিত্তিতে সাধারণত প্রতিদিন ২ থেকে ৫ গ্রাম লবণ গ্রহণ করতে পারেন। ১ চামচ সমান ৫ গ্রাম।

কিডনি রোগীদের অনেক শারীরিক দূর্বলতা ও অন্যান্য উপসর্গ দেখা যায়। বিশেষ করে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে রোগীকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সাপলিমেন্ট বা ইঞ্জেকশন নিতে হতে পারে। তবে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য না জেনে কখনোই কোনো খাবার গ্রহণ করা উচিত না।

প্রত্যেক কিডনি রোগীর জন্য যদিও স্বতন্ত্র ডায়েট - তারপরও কিছু খাবার আছে যা সব কিডনি রোগীকেই পরিহার করতে বলা হয়। যেমন: ডাল, কোল্ড ড্রিংকস, আঁচার, গরু, খাসির মাংস, ভাজাপোড়া খাবার, কফি, চানাচুর, পাপড়, বাইরের কেনা ও বাসি খাবার।

 
Electronic Paper