ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাস্তাঘাটে অসুস্থ হলে...

অধ্যাপক ডা. হাফিজ উদ্দীন আহমদ
🕐 ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০১৯

রাস্তাঘাটে বা অন্যত্র কোনো ব্যক্তিকে আহত হয়ে বা অন্য কারণে পড়ে থাকতে দেখলে কালবিলম্ব না করে তাকে চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে পাঠাতে চেষ্টা করুন। আহত থাকলে প্রয়োজন ছাড়া তাকে নাড়াচাড়া নিষেধ করা উচিত। ভালো করে দেখুন সে কি সড়ক দুর্ঘটনার শিকার? শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ বা অজ্ঞান কি না। রক্তপাত বা বিষক্রিয়ার চিহ্ন আছে কি? অজ্ঞান হলে খাবার বা পানীয় দেওয়া নিষেধ। ক্ষত থাকলে ঢেকে রাখুন। জনতার ভিড় সরিয়ে কাউকে পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স বা আত্মীয়কে খবর দিতে পাঠান।

কাটা জায়গা থেকে রক্ত বের হতে থাকলে সরাসরি চাপ দিয়ে বন্ধ এবং হাড় ভাঙা মনে হলে কাঠের পাতলা তক্তা বা চটা বেঁধে অনড় করুন। অযথা গরম পানির বোতল ইত্যাদি দিয়ে তাকে উত্তপ্ত করা নিষেধ। রাস্তার দুপাশে ২০০ মিটার পর্যন্ত লোক পাঠিয়ে যানবাহনগুলোর গতি কমাতে বলুন। শ্বসন ক্রিয়া অনুপস্থিত বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে (বুকের উঠানামা নেই, নখে-ঠোঁটে নীলাভতা, বায়ুর গমনাগমন অনুভূত না হওয়া) আগে শ্বাস টেনে নিয়ে ব্যক্তিটির মাথা পেছনে বাঁকিয়ে মুখে মুখ লাগিয়ে বা নাকে মুখ লাগিয়ে প্রতি পাঁচ সেকেন্ডে একবার ফু দিয়ে নিজের ফুসফুসের বাতাস লোকটির ফুসফুসে এমনভাবে ঢুকিয়ে দিতে হবে যাতে ফাঁক-ফোকর দিয়ে কোনো বাতাস বের হয়ে না যায়। রোগীর মুখে আঘাত বা এসিড লেগে থাকলে অথবা সে কীটনাশক পান করে থাকলে মুখ নয়, নাক দিয়ে শ্বসনক্রিয়া চালাতে হবে। শ্বসনপথে প্রতিবন্ধকতা থাকলে মুখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে গলবিলে আটকে থাকা খাদ্য বস্তু ইত্যাদি বের করে আনতে হবে।

শ্বসন ক্রিয়ার সময় বুক-পেট উঠানামা করলে প্রতিবন্ধকতা দূর হয়েছে বোঝায়। রোগীর পাশে হাঁটু গেড়ে বসে তার নাড়ি অনুভব করতে হবে। অনুভব না করা গেলে সম্ভবত হৃৎপি- খুব দুর্বল বা চালু নেই, সে ক্ষেত্রে রোগীকে চিৎ ও বক্ষ দেশ উন্মুক্ত করে বুকের মধ্যভাগের নিম্নাংশে উভয় হাতের গোড়ালি একত্রে একটির উপর অপরটি রেখে কমপক্ষে পাঁচ বার বক্ষচাপ (হৃৎপিণ্ডে চাপ লেগে রক্ত চলাচল শুরু হবে) ও একবার শ্বসনক্রিয়া চালাতে হবে। এরূপ ১০টি পর্ব সম্পূর্ণ করে গলার পাশে কেরোটিড নাড়ি অনুভবের চেষ্টা করতে হবে। এটাকে সিপিআর বলে। নাড়ি না পেলে পুনরায় সিপিআর করুন। অজ্ঞান তবে আঘাত বা বিষক্রিয়ার চিহ্ন নেই, তাহলে ডায়াবেটিস (রক্তে চিনি হ্রাস) কিংবা রোগীর দেহে ঝাঁকুনি ও মুখ দিয়ে ফেনা বের হলে সম্ভবত সে মৃগী রোগী। কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে জুতা না শুঁকিয়ে তাকে হাসপাতালে পাঠান।


অধ্যাপক ডা. হাফিজ উদ্দীন আহমদ
এমবিবিএস, এমসিপিএস, এফসিপিএস

 
Electronic Paper