টানা কাজে স্ট্রোকের ঝুঁকি
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২২, ২০১৯
এক দশক ধরে যারা দীর্ঘ সময় কাজ করছেন তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করলে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে বলেও ফ্রান্সের এক গবেষণায় বলা হয়েছে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়, যেসব ব্যক্তি প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে বছরে কমপক্ষে ৫০ দিন কাজ করেন তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
এই গবেষণায় মোট ১ লাখ ৪৩ হাজার মানুষের তথ্য সংগ্রহ করে তাদের ধূমপানের ইতিহাস, বয়স ও কর্মঘণ্টা বিশ্লেষণ করা হয়। তথ্য সংগ্রহকারীদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশের কিছু কম মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেছেন এবং এক দশক ধরে দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন ১০ শতাংশ মানুষ। সব মিলিয়ে এদের মধ্যে মোট ১২২৪ জন মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন।
তবে যুক্তরাজ্যের স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশন জানায়, যেসব মানুষ দীর্ঘ সময় কাজ করে তারা যদি নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও ভালো পুষ্টিকর খাবার খায় তাহলে তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
জার্নালে প্রকাশিত খবরে গবেষকরা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করা মানুষদের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ২৯ শতাংশ বেশি এবং যারা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে দীর্ঘ সময় করছেন তাদের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৪৫ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া যেসব মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার আগেই স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন এবং যারা খ-কালীন কাজ করেন তাদের এই গবেষণার আওতায় রাখা হয়নি।
গবেষণা দলের প্রধান ড. অ্যালেক্সিস বলেন, ৫০ বছরের কম বয়সী মানুষদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, যারা ১০ বছর যাবৎ দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছেন, তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশ জোরালো। এটা অপ্রত্যাশিত। তাই এই বিষয় সম্পর্কে আরও গবেষণা করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি। যদিও এই গবেষণায় স্ট্রোকের কারণ সম্পর্কে নজর না দিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যার ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।
অন্য আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা নিজস্ব ব্যবসা পরিচালনা করেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের সিইও অথবা ম্যানেজার, তারা দীর্ঘ সময় কাজ করলেও তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কম। কিন্তু যারা অনিয়মিত শিফটভিত্তিক কাজ করেন অথবা কাজের চাপ বেশি থাকে অথবা রাত্রিকালীন কাজ করেন, তাদের ক্ষেত্রে বেশি স্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে।
স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা দলের প্রধান ড. রিচার্ড ফ্রান্সিস বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম, ধূমপান ত্যাগ, ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার স্বাস্থ্যের ওপর একটি বড় প্রভাব রাখে। এ বিষয়গুলো ঠিকমতো মেনে চললে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসতে পারে বলে মনে করেন তিনি।