মাথাব্যথায় কী করবেন
ডা. হাফিজ উদ্দীন আহমদ
🕐 ১২:১০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ০৮, ২০১৯
মাথা থাকলে ব্যথা হবেই। ব্যথা মস্তিষ্কের বহিরাংশে অনুভূত হলেও আসলে তা আসে খুলির ভেতরে থাকা নানা অংশ বা অন্য স্থান থেকে। তবে আশ্চর্যের ব্যাপার, মগজে কোনো অনুভূতি নেই অর্থাৎ ব্যথা হয় না। বহু কারণে ব্যথা হতে পারে আধকপালি বা মাইগ্রেন, জ্বর, দাঁতের রোগ, গোলমাল, আবেগ আধিক্য, চোখ, নাক ও কানের রোগ ইত্যাদি।
খুলির ভেতরে ৩টা গর্ত থাকে : সম্মুখবর্তী গহ্বর, মধ্যবর্তী গহ্বর ও পশ্চাদ্বর্তী গহ্বর। সম্মুখ ও পশ্চাদ্বর্তী গহ্বরের বহিঃস্থ মস্তিষ্ক আবরণী (ডুরা মেটার), বড় বড় শিরা ও মগজের নিম্নভাগের ধমনীগুলোর দেয়াল ইত্যাদি সংবেদনশীল ও তাতে ব্যথা গ্রাহক থাকে। কোনো কারণে রক্ত নলগুলো সম্প্রসারিত হলে, মাংসপেশিতে খিঁচুনি হলে, প্রদাহ ঘটলে বা মস্তিষ্কস্থ কোনো অঙ্গে টান লাগলে ব্যথা হয়।
মাথাব্যথার সাধারণ কারণ হচ্ছে আঘাতজনিত মাথা বা গ্রীবা কশেরুকায় আঘাত; প্রদাহজনিত : নাসিকা পার্শ্বস্থ গহ্বর (সাইনাস), মেস্টয়েড, মস্তিষ্কে ক্ষরণ ইত্যাদি প্রদাহ; রক্ত নল সংক্রান্ত : উচ্চ রক্তচাপ, মস্তিষ্ক অভ্যরন্ত রক্তনলের স্ফীতি; মস্তিষ্ক অভ্যন্তরে আব বা টিউমার রক্তপাত; আবেগ জনিত : দুশ্চিন্তা, হিস্টিরিয়া; বিবিধ : দৃষ্টি হ্রাস, গ্লোকোমা, স্নায়ুশূল, গোলমেলে পরিবেশ। প্রায় ক্ষেত্রে মাংসপেশির সংকোচন ঘটে ফলে মাথার চারদিকে আঁটসাঁট ভাব বা কষ্টদায়ক ব্যথা অনুভূত হয়। ভ্রুর উপরিভাগে বা মাথার পেছনে চাপ দিলে ব্যথা পাওয়া যায়। মস্তিষ্ক অভ্যরন্ত রক্তক্ষরণ বা মস্তিষ্কাবরক প্রদাহে মাথা নাড়লে, কোথ বা কাশি দিলে দপদপে ব্যথা হয়।
ব্যথা প্রতিরোধ করার জন্য গোলমেলে পরিবেশ ও দীর্ঘ একঘেয়ে কাজ তথা অযথা উৎকণ্ঠা এড়িয়ে চলতে হবে। বেশি ঘুমানো ও কম ঘুমানো পরিহার করে যথাসময়ে খাবার গ্রহণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, দৃষ্টিহ্রাস চিকিৎসা করতে হবে। ঋতুকালে সাবধান থাকতে হবে। সর্দিতে বন্ধ নাক হালকা গরম পানিতে সামান্য লবণ গুলে তা নাকে টেনে কিছুক্ষণ রেখে ছেড়ে দিলে খুলে যাবে ও এজন্য ঘটা ব্যথা দূর করবে। প্রয়োজনে ৫০০ মিলি গ্রাম প্যারাসিটামল (দিনে চারবারের বেশি নয়) ব্যবহার করতে হবে ও চিকিৎসক দেখাতে হবে। আপনার মাথাব্যথা সারানোর ভার তিনি মাথা পেতে প্রহণ করবেন!
অধ্যাপক ডা. হাফিজ উদ্দীন আহমদ
অধ্যক্ষ, মনোয়ারা সিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কার্তিকপুর, শরীয়তপুর।