ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিএসএমএমইউতে লিভার প্রতিস্থাপন

সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন মা-ছেলে

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১২:৫৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০১৯

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) সফল লিভার প্রতিস্থাপিত রোগী ও লিভার দাতা মা সুস্থ হয়ে বিশ^বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। লিভার গ্রহীতা সিরাতুল ইসলাম শুভ (২০) ও তার লিভার দাতা মা রোকসানা বেগম (৪৭) এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, গত ৬ জুলাই মা রোকসানা বেগমকে ছাড়পত্র দেওয়া হলেও তিনি সন্তানের পাশে হাসপাতালেই থেকে যান। গতকাল বৃহস্পতিবার তারা দুজনেই বাড়ির উদ্দেশে হাসপাতাল ত্যাগ করেন।

বিএসএমএমইউর ভিসি অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া জানিয়েছেন, গত বুধবার তাদের হাসপাতাল ত্যাগের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

উল্লেখ্য, গত ২৪ জুন ভোর থেকে লিভার প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার শুরু করা হয়। প্রায় ১৬ ঘণ্টা প্রয়োজন হয় মায়ের লিভার কেটে ছেলের দেহে জোড়া দিতে। মা রোকসানা বেগমের লিভার থেকে ৬০ শতাংশ নিয়ে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা বলেছেন, মায়ের লিভারটি ছিল অত্যন্ত চমৎকার। তার বয়স ৪৭ হলেও লিভারে কোনো সমস্যা ছিল না।

উল্লেখ্য, মায়ের যে ৪০ শতাংশ লিভার রয়ে গেছে তা শিগগিরই বড় হয়ে আগের অবস্থায় ফিরে আসবে এবং ছেলের দেহে যে ৬০ শতাংশ লিভার সংযোজন করা হয়েছে তাও বড় হয়ে ১০০ শতাংশে পৌঁছে যাবে ধীরে ধীরে এবং দু’জনই এক সময় স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারবেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের এটিই প্রথম লিভার প্রতিস্থাপন এবং প্রথমবারেই সফল হয়েছেন তারা। এর আগে একটি বেসরকারি হাসপাতালে দুটি এবং বারডেম হাসপাতালে দুইটি লিভার প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। বারডেমের একজন এখন সুস্থ আছেন এবং আরেকজন মারা গেছেন সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে। অপরদিকে বেসরকারি হাসপাতালে দুটি প্রতিস্থাপনের কোনোটিই সফল হয়নি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো সফল লিভার প্রতিস্থাপনে রোগী ও চিকিৎসকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

হাসপাতালের হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়াটিক, লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুলফিকার রহমান খান জানান, রোগী ও দাতা দুজনেই সুস্থ আছেন। তারা পরে আবার এসে সর্বশেষ পরিস্থিতি চিকিৎসকদের জানাবেন। লিভার প্রতিস্থাপনে বাংলাদেশি চিকিৎসক দলকে সহযোগিতা করেছেন ভারতের লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন ডা. বালাচন্দ্র মেনন ও তার চিকিৎসক দল। বাংলাদেশে এর আগে ২০১০ সালে বারডেম হাসপাতালে প্রথম লিভার প্রতিস্থাপন করে। তবে তারা উদ্যোগটি চালু রাখতে পারেনি।

এ বিষয়ে অস্ত্রোপচারের নেতৃত্বে থাকা জুলফিকার খান বলেন, সহযোগিতা পেলে আমরা এই সেবা চালু রাখতে পারব। পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে ২০ লাখ টাকাতে দেশেই এই চিকিৎসা সম্ভব হবে। আর এই খরচ বিদেশের থেকে তিন-চার গুণ কম।

 
Electronic Paper