ঢাকা, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ম নে র শ রী র

ভালো ঘুম : সুস্থ দেহ মন

শারমিন আরা
🕐 ৩:২৬ অপরাহ্ণ, মে ২৭, ২০১৯

হালরং-এ মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে নিয়মিত লিখছেন শারমিন আরা

শরীরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপাদানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ঘুম। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্য দৈনিক ৭-৮.৫ ঘণ্টা ঘুম দরকার। প্রয়োজনীয় ঘুম না হলে নানা ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসব মানসিক সমস্যা সাধারণত নির্ভর করে ব্যক্তি কতটা কম ঘুমাচ্ছে এবং তা কতদিন ধরে চলছে তার ওপর। কেউ যদি দীর্ঘদিন ধরে কম ঘুমায় তাহলে তার স্বাস্থ্যে এবং জীবনযাত্রার ওপর প্রভাব পড়ে, কর্মক্ষেত্রে কাজের গুণগত মান কমে যায়, দিনের বেলা ঘুম ঘুম ভাব হয়, ব্যক্তির মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া করার ক্ষমতা কমে যায়।

গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘদিন যদি কেউ ঘুম থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে তার বিভিন্ন মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- বিষণ্নতা, ক্লান্তি, বিরক্তি, মন খারাপ, দুশ্চিন্তা, হতাশা, অসহায়বোধ ইত্যাদি। যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তারা স্লিপ হাইজিন মেনে চললে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।

স্লিপ হাইজিন : স্লিপ হাইজিন বলতে মূলত ঘুমের আগের প্রস্তুতি এবং জীবনযাত্রার কতকগুলো বিষয়কে বোঝায় যেগুলো ভালো ঘুম হওয়ার সহায়ক। তবে এগুলো যে কোনো মানুষের জন্যই প্রযোজ্য।

এছাড়া ভালো ঘুমের জন্য নিম্নোক্ত বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে পারেন-
- ক্যাফেইন, নিকোটিন এবং অ্যালকোহল গ্রহণের পরিমাণ সীমিত করতে হবে। ক্যাফেইন এবং নিকোটিন উত্তেজক জাতীয় পদার্থ। সেজন্য এগুলো শরীরকে শিথিল হতে বাধা দেয়। অ্যালকোহল ডিপ্রেজেন্ট ড্রাগ হলেও গবেষণায় দেখা গেছে এটি ভালো ঘুমের অন্তরায়।

- পেটে ক্ষুধা থাকলে কিংবা পেট খুব ভরা থাকলে ভালো ঘুম হয় না। সেজন্য ঘুমের আগে হাল্কা নাস্তা করা উচিত। তাছাড়া ঘুমের আগে হাল্কা কুসুম গরম দুধ অথবা পানি পান ঘুমের জন্য সহায়ক হতে পারে।

-শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে ভালো ঘুম হয়। এজন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। তবে ঘুমের আগ মুহূর্তে ভারী ব্যায়াম করা যাবে না। কারণ এতে শরীর আরো জাগ্রত হয়।

- অধিক শব্দ ঘুমের জন্য ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। এজন্য শান্ত, মনোরম পরিবেশ হতে হবে।

-ঘরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত গরম অথবা অতিরিক্ত ঠাণ্ডা হওয়া যাবে না।

- ঘরে আলো থাকলে শরীর রাত এবং দিনের মধ্যে পার্থক্য করতে ব্যর্থ হয়। সেজন্য ঘরে আলো রাখা ঠিক হবে না।
- ঘুমানো ছাড়া অন্য সময় বেডে থাকা অথবা কাজ করা যাবে না।

- ঘুমানোর আগে ডিপ ব্রিদিং করা যেতে পারে। এতে শরীর রিলাক্স হয় এবং দ্রুত ঘুম আসে।
- সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া।

উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলার পরেও ঘুমের সমস্যা থেকে গেলে একজন বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

শারমিন আরা
অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

 
Electronic Paper