ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চোখের অ্যালার্জি

প্রফেসর ডা. হাসান শহীদ
🕐 ১২:১০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৫, ২০১৯

প্রতি চারজনের মধ্যে একজন কোনো না কোনো প্রকার চোখের অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন। এটা খুবই সাধারণ অসুখ, তবে ছোঁয়াচে নয়। অ্যালার্জিজনিত সমস্যা সাধারণত নির্মূল করা যায় না। তবে প্রতিরোধ করা যায়। বিশেষ বিশেষ ঋতুতে এর প্রকোপ বাড়ে। যেমন, শীতের শেষে বসন্তের শুরুতে। বাতাসে ভেসে বেড়ানো ফুলের রেণু, ধুলাবালি ইত্যাদি অ্যালার্জেন চোখ ও নাকের সংস্পর্শে এলেই চুলকানি হয়, চোখ লাল হয়ে যায়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে চোখ ফুলে যায়, নাক দিয়ে সর্দি ঝরে, হাঁচি-কাশি হয়, নাক বন্ধভাব হয়। অনেক সময় জ্বরও থাকে।

অ্যালার্জি কী?
শরীরের এক ধরনের প্রতিরোধ ব্যবস্থার কারণেই অ্যালার্জি হয়। কোনো জিনিসের প্রতি শরীরের অতি সংবেদনশীলতা থাকলে ওই বস্তু বা জিনিস শরীরের সংস্পর্শে এলেই অতিদ্রুত লাল হয়ে যায়, চুলকায়, ফুলে যায়, পানি পড়ে ইত্যাদি।

যেসব কারণে অ্যালার্জি হয় তাদের বলা অ্যালার্জেন। যেমন-
* খাবার : ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ, গরুর মাংস, ডিম, পালংশাক, পুঁইশাক ইত্যাদি।
* চোখে ব্যবহার্য প্রসাধনী সামগ্রী।
* উদ্ভিদ-ফুলের রেণু, ধুলাবালি, পোকামাকড় ইত্যাদির চোখে প্রবেশ।
* ওষুধে ব্যবহৃত প্রিজারভেটিভ ও ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া।

চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই ভালো। এ জন্য-
* অ্যালার্জি উদ্রেককারী বস্তু থেকে দূরে থাকতে হবে
* চোখে সানগ্লাস বা রোদচশমা ব্যবহার করতে হবে।

তবে আক্রান্ত হলে অনেক ধরনের ওষুধ আছে। স্বল্পমেয়াদি চিকিৎসা হিসেবে সাধারণত চোখের ড্রপ ও অ্যালার্জি প্রতিরোধী ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এতে ভালো না হলে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয়। এগুলোর মধ্যে আছে অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ, মাস্টসেল স্টাবিলাইজার, স্টেরয়েড ইত্যাদি। কখনো কখনো চোখের কর্নিয়া ঠিক রাখতে চোখের কৃত্রিম পানি ড্রপ হিসেবে নিয়মিত দিতে হয়। তবে আগে থেকেই যাদের চোখের অসুখ, যেমন গ্লুকোমা, আছে তাদের ক্ষেত্রে ডিকনজাস্ট্যান্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। অনেক সময় চোখে ব্যথার অনুভূতি কমানোর জন্য পেইনকিলার ড্রপও ব্যবহার করা হয়।

যাদের চোখের অ্যালার্জি বারবার হয়, তাদের ক্ষেত্রে কর্টিকোস্টেরয়েড জাতীয় চোখের ড্রপ ব্যবহার করতে হতে পারে। তবে এ ধরনের ওষুধের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে না করাই ভালো।

তাই যাদের কিছুদিন পরপরই অ্যালার্জি হয় তাদের উচিত চোখের ডাক্তারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা ও ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ ব্যবহার করা।

লেখক : শহীদ সোহরাওয়ার্দী
চিফ কনসালটেন্ট আঁখি-নাহার চক্ষু হাসপাতাল, ঢাকা।

 
Electronic Paper