জ্বর হলে কী করবেন
ডা. মো. তানভীর ইসলাম
🕐 ১১:০০ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০১৯
এই ভ্যাপসা গরম, এই ঝড়বৃষ্টি। দিনের কখনো গরমে ভিজে বা কখনো বৃষ্টিতে ভিজে ঠাণ্ডা লাগছে বা আশঙ্কায় থাকতে হচ্ছে। এমন অস্বাভাবিক আবহাওয়ায় কিছু কিছু ভাইরাস শরীরের ওপর আক্রমণের সুযোগ পায়।
আবহাওয়ার এই দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে যারা খাপ খাওয়াতে পারেন না, তারাই আক্রান্ত হচ্ছেন জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথাসহ নানা অসুখে। হঠাৎ এমন জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা সাধারণের কাছে এটি ‘ফ্লু’ বা ভাইরাস জ্বর হিসেবে পরিচিত। এমন আবহাওয়ার কারণে বেশি মাত্রায় সক্রিয় হয়ে পড়ছে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া। একজন থেকে অন্যজনের মধ্যেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।
জ্বর হলে কী করবেন
জ্বরে সাধারণত শরীরের তাপমাত্রাকে ১০০-এর নিচে নামিয়ে আনা, গা মোছা ছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করা হয়। জ্বরের সময় বেশির ভাগ মানুষেরই রুচি কমে যায়। তাই এ সময় রোগীর খাবারের প্রতি অনীহা থাকলেও পুষ্টি উপাদানের চাহিদা পূরণে রোগীকে সঠিক খাবার-দাবার চালিয়ে যেতে হয়।
জ্বরের সময় যেই খাবারটির চাহিদা সবচেয়ে বৃদ্ধি পায়, সেটি হলো তরল জাতীয় খাবার। রোগীর বিপাকের হার বৃদ্ধি, শরীরের তাপমাত্রাকে স্বাভাবিকে আনা, হজমে ব্যাঘাত না ঘটানো ইত্যাদি বিষয়কে মাথায় রেখে তরল খাবার নির্ধারণ করা হয়। তরল হিসেবে ফলের রস, স্যুপ, লাল চা ইত্যাদি খেতে পারেন। বিশেষ করে ভিটামিন সি-যুক্ত ফল, যেমন : কমলা, মালটা, লেবু, জাম্বুরা, আনারস ইত্যাদি। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করবে। তাছাড়া তরল খাবারের পাশাপাশি রোগীকে নরম খাবারও দিতে হবে। নরম পাতলা মুগডালের খিচুড়ি, জাও ভাত, সুজি, সাগু, পুডিং, নরম কাঁটা ছাড়া মাছ ইত্যাদি খাবার রোগীকে দিতে পারলে ভালো।
শিশুদের দিকে বিশেষ নজর
ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত শিশু প্রায়ই পানিশূন্যতায় ভোগে। কেননা জ্বরের তাপে শরীর পানি হারায়। তাই শিশুকে প্রচুর পানি ও তরল খাবার দিন। শুধু পানি পান করতে না চাইলে ফলের রস, তরমুজ বা আঙ্গুর, ডাবের পানি, স্যুপ ইত্যাদিও দিন। সেই সঙ্গে শিশুর দরকার প্রচুর বিশ্রাম। বেশির ভাগ শিশুর খাওয়ার রুচি যায় নষ্ট হয়ে, কিছুই খেতে চায় না। এমন খাবার দিন, যা অল্প খেলেও বেশ শক্তি পাবে। যেমন দুধ-চিনি দিয়ে তৈরি কোনো নাশতা, মুরগির মাংসের স্যুপ, পাস্তা, ফলমূল ইত্যাদি।
সর্দি, কাশি ও গলাব্যথায় কী করবেন
সর্দি, কাশি বা সামান্য গলাব্যথা এমন কোনো বড় ব্যাপার নয়। তবে একবার ঠাণ্ডা লাগলে তা সারতে অন্তত এক সপ্তাহ লাগবে। এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। ঠাণ্ডা খাবার, ফ্রিজের পানি পরিহার করতে হবে। কুসুম গরম পানি পান করতে পারলে ভালো হয়। হালকা কুসুম কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে গলা গড়গড়া করলে গলাব্যথা সহজেই ভালো হয়ে যায়। দিনে কমপক্ষে দুবার ৫-১০ মিনিট সময়ে গড়গড়া করা উচিত। ধুলাবালু এড়িয়ে চলুন।
ডা. মো. তানভীর ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক
ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ, বিএসএমএমইউ