দেশে প্রকোপ বাড়ছে স্মৃতিভ্রংশ রোগের
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ৯:৫২ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০১৯
একটু আগেই যে কাজটি করেছেন কিংবা যা বলেছেন তা ভুলে গেছেন? এটি মস্তিষ্কের এক ধরনের রোগ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এমন রোগকে বলা হয় ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ। এর ফলে রোগী কিছু মনে রাখতে পারেন না। ডিমেনশিয়র একটি বড় কারণ হলো আলঝেইমার্স। কর্মক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলা নিউরোলজিক্যাল রোগটির ভয়াবহ প্রকোপ বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে দিন দিন বেড়েই চলছে।
দেশে অনেক দিন ধরেই ডিমেনশিয়া রোগের সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে কাজ করছে বাংলাদেশ আলঝেইমার সোসাইটি। এর একজন সদস্য সাবেক এমপি সেলিনা জাহান লিটা। তিনি বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলেন, রোগটি সরকারি বা বেসরকারি কোন দিক থেকেই তারা এখনো যথাযথ গুরুত্ব পায়নি।
সেলিনা জাহান লিটা বলেন, এক হিসাবে দেখা গেছে বাংলাদেশে ২০১৫ সালে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল পাঁচ লাখ; যা আগামী ২০৩০ সালে বেড়ে ৯ লাখ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আলঝেইমার সোসাইটির হিসাবে, ২০৫০ সাল নাগাদ এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২২ লাখ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অর্থাৎ দিন দিন রোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। সেই হিসেবে প্রতিকারের ব্যবস্থা খুবই কম।
তিনি আরও বলেন, মানুষকে সচেতন করা দরকার। তাহলে আক্রান্ত হলেও মানুষ বৃদ্ধ বয়সে করুণ পরিণতির মুখোমুখি হবে না। বাংলাদেশে ষাট বছরের বেশি বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আবার কিছু ক্ষেত্রে ৪০-৫০ বছর বয়সেও অনেককে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। নিম্নবিত্তের পাশাপাশি উচ্চবিত্তের মানুষও রোগটিতে আক্রান্ত হচ্ছেন।
আলঝেইমার সোসাইটির সদস্য সেলিনা জাহান লিটা আরও বলেন, বাংলাদেশে বিশেষ করে যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে আছেন তাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। উচ্চবিত্ত অনেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন কিন্তু মূলত রোগটির ক্ষেত্রে বেশি দরকার সচেতনতা।
চিকিৎসা আছে পর্যাপ্ত?
সেলিনা জাহান বলছেন, ডিমেনশিয়া নিয়ে সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। রোগটির তেমন চিকিৎসা নেই। কিন্তু শুধু চিকিৎসার বিষয় নয়, রোগটি নিয়ে সচেতনতা তৈরি হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এটি হলে রোগটিকে আমরা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। বৃদ্ধ বয়সের করুণ পরিণতি থেকে রক্ষা করতে পারব। এজন্য হাসপাতালগুলোতে ডিমেনশিয়া কর্নার তৈরি করার দরকার। পাশাপাশি ডাক্তার ও নার্সদের তাদের করণীয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিত। মনে রাখতে হবে, পারিবারিকভাবে সচেতনতা তৈরি হলে রোগীরা জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে করুণ পরিণতি থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পাবেন