ঘাড় ব্যথার উপসর্গ এবং ওষুধপত্র
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
🕐 ১২:২৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০৫, ২০১৯
মেরুদণ্ডের গ্রীবা অঞ্চলে এক ধরনের ব্যথা হয় সাধারণ বাংলায় এটাকে বলে ঘাড়ের বাত বা ব্যথা বলে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেরুদণ্ড ও ঘাড়ের হাড় ও কার্টিলেজে কিছু পরিবর্তন ঘটতে থাকে, যার কারণে এটা হয়ে থাকে।
উপসর্গ :
ঘাড়ের ব্যথা হওয়া।
ঘাড়ের ব্যথা অনেক সময় বাহু ও হাতের দিকে ছড়িয়ে পড়া।
ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া এবং ঘোরাতে না পারা। ঘোরাতে গেলে বা পেছনে বাঁকা করলে ব্যথা বেড়ে যাওয়া।
ঘাড়ে ব্যথাসহ হাতের আঙ্গুল ঝিনঝিন করা।
ঘাড়ে ব্যথাসহ হাত বা হাতের আঙ্গুলে অবশ অনুভূতি হওয়া।
ঘাড়ের ব্যথা মাঝে মাঝে কাঁধে বা মাথার পেছনের দিকে ছড়িয়ে যাওয়া।
চিকিৎসা : স্পন্ডাইলোসিস হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ঘাড়ের এক্স-রে পরীক্ষা করা হয়।
ওষুধপত্র :
ব্যথানাশক ওষুধ খান
সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিসের ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করতে আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন কিংবা অ্যাসিটামিনোফেন সচরাচর ভালো কাজ করে।
গরম অথবা ঠাণ্ডা সেঁক দিন
যদি আপনার ঘাড়ের মাংসপেশিতে ব্যথা থাকে তাহলে আপনি আপনার ঘাড়ে গরম অথবা ঠাণ্ডা সেঁক দিন।
মুক্ত ঘাড়ের ব্যায়াম : সোজা হয়ে বসুন বা দাঁড়ান। মেরুদণ্ড ও ঘাড় সোজা রেখে দুহাত কোমরের ওপর রাখুন। এবার আপনার মুখ ও ঘাড় একবার ডান দিকে ও পরে বাম দিকে ঘোরান। এবার চিবুক ডান ও বাম কাঁধের দিকে সাধ্যমতো নিয়ে যান যাতে কাঁধ ও চিবুক মোটামুটি একই সরলরেখায় অবস্থান করে। এভাবে ১০-১৫ বার ব্যায়াম করুন।
বাধা সহযোগে ঘাড়ের ব্যায়াম
আগের মতো বসে বা দাঁড়িয়ে আপনার মেরুদণ্ড, ঘাড় ও মুখ সোজা রাখুন। এবার আপনার ডান হাতের তালু ডান গালের ওপর রেখে আস্তে আস্তে চাপ দিন অথবা আপনার ডান হাতের তালু দিয়ে বাম দিকে চাপ দিন এবং একই সময়ে মুখ ও গাল ডান দিকের আনার চেষ্টা করুন। একইভাবে বাম গালে বাম হাতের তালু রেখে চাপ দিয়ে ব্যায়াম করুন। চাপ যাতে বেশি না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। কারণ তাতে ঘাড়ের মাংসপেশিতে টান লেগে ব্যথা ঘটাতে পারে। এটি ১০-১৫ বার করুন।
মাথার পেছনে চাপ
হাত দুটো অঙ্গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মাথার পেছনে নিন। মেরুদণ্ড, ঘাড় ও মুখ সোজা রাখুন। এবার ধীরে ধীরে মাথার পেছন দিকটা দিয়ে হাতের তালুতে চাপ দিন। একই সময়ে খেয়াল রাখুন হাতের তালু দুটো যেন সরে না যায়। এভাবে কয়েকবার আপনার সহ্যমতো করুন।
মাথার সামনে চাপ
এবার আপনার হাতের তালু শক্তভাবে সোজাসুজি কপালে রেখে আস্তে আস্তে কপাল সামনে এনে তালুতে চাপ দিন। খেয়াল রাখবেন হাত দুটি যেন সরে না যায়। এভাবে কয়েকবার ব্যায়ামটি করুন।
সাধারণত দিনে ১০-১২ বার এ ধরনের ব্যায়াম করলে সুফল পাওয়া যায়। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াগুলো বাড়ানো বা কমানো যেতে পারে।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমা বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
চেম্বার : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি., ইংলিশ রোড, ঢাকা।