ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

স্নিগ্ধ শরতে শুভ্র রাবি

আশিক ইসলাম
🕐 ২:৩৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১

স্নিগ্ধ শরতে শুভ্র রাবি

প্রভাতে শিশিরস্নাত শেফালির স্নিগ্ধ সুভাস। রাতভর ঝরেপড়া কমলা-সাদা রঙের শেফালির বিছানা। শেফালির ঘ্রাণ মিলিয়ে যাওয়ার আগেই পূর্ব আকাশে রক্তলাল সূর্য, শুরু হয় মেঘ-রোদের খেলা। কখনো সূর্য ক্ষণিকের জন্য মধ্য গগনে উত্তাপ ছড়ালেও পশ্চিমে হেলে পড়তে না পড়তেই নেমে আসে প্রশান্তি। ঝলমলে রোদ, ফুরফুরে নির্মল হাওয়া আর আকাশে ভেসে বেড়ানো সাদা মেঘের বেলা। করোনা আতঙ্ক আর যাপিত জীবনের নানা ব্যস্ততার মাঝে এভাবেই অগোচরে চুপিসারে এসেছে শরৎ। শুভ্র কাশফুলের মুগ্ধ করা রূপের খেলায় মনকে করছে বিমোহিত। শরৎ মানেই নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা এবং কাশফুলের শুভ্রতা। সে মন্ত্রমুগ্ধ সৌন্দর্যে সেজেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসও।

মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে নেই শিক্ষার্থীদের তেমন আনাগোনা। শূন্য প্রায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ফুটতে শুরু করেছে সাদা কাশফুল। কৃষি অনুষদ ভবনের পশ্চিম পাশের গবেষণা মাঠ, রেললাইন, চারুকলার পাশের রাস্তা, বধ্যভূমি, নবাব আব্দুল লতিফ হলের সামনে খোলা মাঠসহ ক্যাম্পাসের নানা জায়গায় সৌন্দর্য ছড়িয়ে দিচ্ছে কাশফুল। আকাশে সাদা মেঘের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে তারা। বাতাসে তার সৌরভ, গন্ধময় আবেশ চারপাশে।

একটুখানি নীল আর সাদায় মোড়ানো আকাশ আর পাতাল। মুহূর্তেই চোখে ঘোর লাগে। বাতাসের সঙ্গে যেন গভীর মিতালি কাশবনের। বাতাস কাশবনে খেলা করে মনের সুখে। হেলেদুলে দুই বন্ধুর সময় কেটে যায় অবলীলায়। কাশবনের হাতছানিতে ধরা দেয় আবেগি মন। নির্মল প্রকৃতির এই নীল-সাদা ক্যানভাসে অনেকেই হয়ে ওঠেন উপন্যাসের প্রেমিকযুগল। কখনো কখনো কাশফুলের শোভায় কবিমন লিখে ফেলে কবিতা। ছুঁয়ে দেবে? কাশফুলের নরম পাপড়িতে রেখে দিয়েছি মন/ এই হেমন্তেও কাশফুল ফুটেছে তুমি কি জানো?/ শিশির ছুঁয়েছে কাশফুল, তুমি কি ছুঁবে আমার মন? ক্যাম্পাসে এমন সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন অনেকে।

ঘুরতে আসা শিক্ষার্থী নওশিন বলেন, প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের ধারাবাহিকতায় অপরূপ বৈভব ও নিজস্বতা নিয়ে বরাবরের মতো এবারো এসেছে শরৎ। বৈশ্বিক উষ্ণতা আর জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে প্রকৃতি যখন তার চিরায়ত রূপ হারাচ্ছে তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাকালেই দেখা যায় বাতাসে দোদুল্যমান স্বচ্ছ ও শুভ্র কাশবন। যান্ত্রিক শহরের কিছুটা বাইরেই গড়ে উঠেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই অপার লীলাভূমি। এই সৌন্দর্য হাতছানি দিয়ে ডাকছে শিক্ষার্থীদের। ক্যাম্পাসের প্রতিটি আনাচেকানাচে সতেজতার মাঝেও মলিন হয়ে আছে শিক্ষার্থীদের অপেক্ষায়।

শিক্ষার্থী শাম্মী আক্তার মিম বলেন, ছোটবেলায় দেখতাম বিলের অপর পাশে কাশফুল ফুটে রয়েছে। তখন কাছে যেতে চাইলেও যেতে পারতাম না। আমার বিভাগের ভবনের পাশেই রয়েছে কাশবন। ক্লাস শেষ করে সেখানে গিয়ে ছবি তোলা হতো প্রতিবারই।

 
Electronic Paper