ক্যাম্পাসের আমেজে ইফতার
মুসাদ্দিকুল ইসলাম তারভীর
🕐 ১:৫১ অপরাহ্ণ, মে ০৯, ২০২১
বন্ধু, কি খবর? অনেক দিন হলো দেখা সাক্ষাৎ নেই। কয়েকদিন পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বারবার এই ম্যাসেজগুলোই পাঠাচ্ছি ক্যাম্পাসের বন্ধুদের। ১৩ মাস পেরিয়ে গেল, বন্ধুদের থেকে দূরে। যদিও ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম মনটাকে দূরে ঠেলতে পারেনি। তাই আক্ষেপ আর চাপা কষ্ট নিয়েই ক্যাম্পাস খোলার প্রতীক্ষায় বসে আছি।
করোনা মহামারিতে অলস সময়টাকে প্রাণোচ্ছল করার জন্য আবারো খেলাধুলার অভ্যাস শুরু করেছিলাম গত জানুয়ারি থেকে। প্রায় প্রতিদিন বিকেলে ক্যাম্পাস ও এলাকার বন্ধু, সহপাঠী, ছোট ও বড় ভাইদের সাথে ক্রিকেট খেলা নিত্য রুটিনে পরিণত হয়েছিল। এরপর লকডাউন শুরু হলে আবারো ঘরবন্দী হয়ে যায় জীবন। তারপর পবিত্র মাহে রমযান শুরু হলে আপাত বন্ধই হয়ে যায় খেলা।
বন্দীদশায় হাঁপিয়ে উঠে একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিলাম সবাই আবার একসাথে সাক্ষাৎ করার, পরিকল্পনা করলাম ইফতার মাহফিল করার। মেসেঞ্জার গ্রুপে আলোচনা করে ঠিক করা হলো সময়, স্থান। এরপর পরিকল্পনা সাজিয়ে নিয়ে সেই অনুযায়ী কাজ শুরু হলো।
ক্যাম্পাসের রমযান একদম অন্যরকম। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করা হয়ে থাকে। তবে বন্ধুরা মিলে চাঁদা তুলে হলের ছাদে বা খোলা মাঠে একসাথে যে ইফতারগুলো করা হয়, সেগুলোতে থাকে ভিন্ন মাত্রা। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় গত বছরের মতো এবছরও সেই আনন্দ উদযাপন থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। তাই ইফতার মাহফিলে ক্যাম্পাসের আমেজ ফেরানোর প্রচেষ্টায় ছিল শুরু থেকেই।
চাঁদা সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি কাজেই ছিল সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। ক্রিকেট মাঠের মতোই দশে মিলে করি কাজ নীতিতে এগিয়ে যেতে থাকে কার্যক্রম। মাত্র সত্তর টাকা চাঁদা ঠিক করা হলেও বড়দের বাড়তি সহযোগিতায় প্রত্যাশার চেয়েও বেশি আয়োজন করা সম্ভব হয়।
ইফতার মাহফিলের দিন আসরের নামাজের পর পরই অর্ডার করা খাবার এসে যায়। এরপর পড়ন্ত বিকেলে খোলা ছাদের ওপর শুরু বন্ধুদের মিলনমেলা। সবাই কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত হয়ে উপভোগ করতে থাকে। কেউ বানাচ্ছে শরবত, কেউ খাবার পরিবেশন করছে, কেউ আবার মুহূর্তটি ফ্রেমবন্দী করে রাখছে।
ইফতারের কিছুক্ষণ পূর্বে দুজন সিনিয়র ভাইয়ের উদ্যোগে সবাইকে একই রকম টুপি উপহার দেওয়া হয়। আর মাহফিলে বাড়তি মাত্রা যোগ করে ছোটদের প্রাণচঞ্চল অংশগ্রহণ। দোয়া শেষে একসাথে ইফতার করি সবাই।