ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

স্বপ্ন পূরণের পথে রয়েল

আজাহার ইসলাম
🕐 ১:১৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৮, ২০২১

স্বপ্ন পূরণের পথে রয়েল

‘ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতাম বিশ^বাসী আমাকে টেলিভিশনের পর্দায় দেখবে। লাল সবুজ জার্সি গায়ে দিয়ে দেশের হয়ে খেলব। হৃদয়ে দীর্ঘদিন ধরে লালিত সেই স্বপ্ন এখন পূরণের পথে। দেশের হয়ে মাঠে খেলার সুযোগ পেলে সর্বোচ্চ দিয়ে খেলার চেষ্টা করব। একইসঙ্গে জাতীয় দলে স্থায়ী খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন আছে।’- এভাবেই স্বপ্নের কথা বর্ণনা করছিলেন নেপালে অনুষ্ঠিতব্য ত্রি-দেশীয় ফুটবল টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের স্ট্রাইকার হিসেবে ডাক পাওয়া মেহেদী হাসান রয়েল।

ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি অন্যরকম ঝোঁক ছিল রয়েলের। বিশ্বকাপ ফুটবল এলেই তাকে আর কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারত না। টেলিভিশনের সামনে ওঁৎ পেতে বসে থাকত। ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখত আন্তর্জাতিক মানের ফুটবলার হওয়ার। সেই ক্ষুদে রয়েলের স্বপ্ন হাতছানি দিয়ে ডাকছে তাকে। গত ৯ মার্চ ত্রি-দেশীয় সিরিজের চূড়ান্ত দল ঘোষণা করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

২৪ সদস্যের টিমে নতুন মুখ পাঁচজন স্থান পেয়েছে। তার মধ্যে রয়েলের স্বপ্নও জালে ধরা দিয়েছে। নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডুতে আগামী ২৩ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হবে। স্বাগতিক নেপাল আর বাংলাদেশ ছাড়া অংশগ্রহণকারী অন্য দলটি হলো কিরগিজস্তান অনূর্ধ্ব-২৩ দল। টুর্নামেন্টের সামনে করোনা পরীক্ষার পরের দিন থেকেই অনুশীলন শুরু করবে বাংলাদেশ।

এরপর ১৮ কিংবা ২০ মার্চ উড়াল দেবে নেপালের উদ্দেশ্যে। মেহেদি হাসান রয়েল ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। জন্মেছিলেন মাগুরা জেলার মহম্মাদপুরের কানাইনগর গ্রামে। সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যা রয়েলের নিয়মিত খেলার রুটিন। ফুটবল নিয়ে গ্রামের মাঠে খেলতেন তিনি। মা-বাবা বরাবরই অনুপ্রেরণা দিত রয়েলকে। তার দুই চাচা শাহিন সাদেক মির্জা ও জিল্লুর রহমান লাজুক সব সময়ই অনুপ্রেরণা দিয়ে আসত।

এছাড়া রয়েলের সহপাঠী ও শিক্ষকরাও উৎসাহিত করত তার খেলাধুলায়। তাদের অনুপ্রেরণায় রয়েল খেলার প্রতি উদ্যমী হতো। প্রথম দিকে মহম্মাদপুরের আসাদুজ্জামান স্পোর্টস একাডেমির হয়ে খেলতেন রয়েল। পরে যশোরের শামছুল হুদা একাডেমিতে যোগ দেন। এছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল টিম ছাড়াও ক্লাব পর্যায়ে ২০১৮ সাল থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের হয়ে ফরোয়ার্ড পজিশনে খেলতেন। এর আগে বিজেএমসিসহ ২০১৬ সালে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছেন তিনি।

অনুভূতির কথা ব্যক্ত করে রয়েল বলেন, ‘জাতীয় ফুটবল টিমের ডাক পাওয়ার আনন্দটা আমি ভাষায় প্রকাশ করে বোঝাতে পারব না। সত্যি আজ আমি আনন্দিত। আমার আজকের এ অর্জনের পিছনে বাবা-মা, দুই চাচা ও প্রিয় শিক্ষক ও সহপাঠীদের অনুপ্রেরণা সব থেকে বেশি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘রয়েলের এই সফলতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া বিভাগের জন্য একটি অর্জন। সে জাতীয় দলের হয়ে আন্তর্জাতিক পরিম-লে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়কেও তুলে ধরবে। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।’

 
Electronic Paper